কলকাতা, ২৮ মে- ঘর বাঁধার স্বপ্নে প্রেমিকের হাত ধরে বাপের ঘর ছেড়েছিল কিশোরী। স্বপ্ন ছিল নিজের ঘর বাঁধার। কিন্তু ভাবেননি তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটির উত্তর দিনাজপুরের ওই কিশোরী প্রেমে পড়েছিল মালদহের কালিয়াচকের এক যুবকের। সম্পর্ক গভীর হলে তারা বিয়ে করবে ঠিক করে। যুবকের আশ্বাসে কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়েও যায়। প্রেমিকের হাত ধরে পাড়ি দেয় অজানার উদ্দেশ্যে। কিন্তু প্রেমিক তাকে নিয়ে আসে বিহারের সীতামঢ়ীর এক পতিতা পল্লীতে। সেখানেই তাকে বিক্রি করে দেয় প্রেমিক। এরপর এক মাস, দুমাস করে দুবছর কেটে যায়। এক সময় আশা ছিল, একদিন হয়তো এই নরক থেকে তার মুক্তি মিলবে। কিন্তু নিজেকে বিকিয়ে দিতে দিতে সেই স্বপ্নও ফিকে হতে থাকে। এমনই এক সময়ে যেন ত্রাতা হয়ে আসে রেলের চাকুরে এক যুবক। খদ্দের হয়ে এলেও কিশোরীর সঙ্গে তার আলাপ পরিচয় হয়। সেই সময়েই ঐ যুবক জানতে পারেন, মেয়েটি প্রতারণার শিকার। পতিতা পল্লী থেকে মুক্তির আশায় এর আগে অনেককেই কাকুতি মিনতি করেছে মেয়েটি। কেউ তাতে কান দেয়নি। কিন্তু রেলকর্মী ওই যুবক কিশোরীর মিনতিকে উপেক্ষা করতে পারলেন না। এই বিষয়ে ওই যুবক আনন্দবাজার পত্রিকাকে জানায়, যখনই ওর কাছে যেতাম, কান্নাকাটি করত। খুব খারাপ লাগত আমার। খালি মনে হত, ওকে যদি সাহায্য করা যায়। যদি কোনও ভাবে ওকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। ভাবনা থেকেই মেয়েটির কাছ থেকে বাড়ির ঠিকানা জেনে সেই যুবক চলে যান উত্তর দিনাজপুরে। ঠিকানা খুঁজে বের করেন মেয়েটির বাড়ি। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কিশোরীর বর্তমান অবস্থার কথা জানান। সেই সময় স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেও কথা বলেন ওই যুবক। এরপর গত বৃহস্পতিবার সেই সংগঠনের কয়েকজনকে নিয়ে সীতামঢ়ীর সেই পতিতা পল্লীতে যান। তারপর পান খাওয়ার নাম করে তরুণীকে নিয়ে পালান তিনি। একগাল হেসে সংবাদমাধ্যমকে ওই যুবক জানান, আমার বাড়ি সীতামঢ়ীতেই। এখানকার অলিগলি ওদের থেকে অনেক বেশি চিনি আমি। শনিবার বাড়ি ফেরার পর মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মা বলেন, মেয়ে অনেক যন্ত্রণা সহ্য করেছে। কয়েকটা দিন যাক! ওকে নিজের পায়ে দাঁড় করাবই। স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব দেও বলেছেন, সবার মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো উচিত। আর এমন কাজে আত্মতৃপ্ত যুবক বলছেন, শেষ পর্যন্ত যে ওকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে দারুণ লাগছে। তবে তিনি এটাও বলেন, পতিতা পল্লীতে এ রকম আরও অনেক মেয়ে রয়েছে। নারী পাচার রুখতে এবং পাচার হওয়া এমন মেয়েদের ফেরাতে পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিত। স্থানীয় থানার ওসি দিলীপকুমার রায় জানিয়েছেন, ঘটনার ঠিক পরেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার আশ্বাস, দোষীরা ধরা পড়বেই। সূত্র: বিডি২৪লাইভ আর/১৭:১৪/২৮ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2sd46d2
May 29, 2018 at 01:00AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top