শহিদ আফ্রিদি। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক তিনি। তিনি মাঠে নামবেন আর আলোচনার থাকবেন না এটা তার সঙ্গে বেশ বেমানান বিষয়। ক্রিকেটের ইতিহাসে যতো কৌতুক আছে, তার মধ্যে শহিদ আফ্রিদির অবসর নেয়া সম্ভবত শীর্ষ দিকেই থাকবে। বেশ কয়েকবার জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়ে বেশ কয়েকবার ফিরেছেন তিনি। সর্বশেষ অবসর নেয়ার পরও বলে রেখেছিলেন যে, পরিবার থেকে নাকি আবার ফেরার তাড়া দেয়া হচ্ছে! সেই তাড়ায় অবশ্য জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি তার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঠিকই ফিরেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মাঠে নামেন বিশ্ব একাদশের হয়ে। এই ম্যাচ চলার সময়ই আফ্রিদি ঘোষণা দেন যে, অবসর ভেঙে আর ফিরবেন না তিনি! এই ম্যাচটা অবশ্য খেলারই কথা ছিলো না শহিদ আফ্রিদির। প্রথম দফায় দলে থাকলে পায়ের ইনজুরির কারণে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। কিন্তু বিশ্ব একাদশের অধিনায়ক ইয়ন মরগান ইনজুরিতে পড়ায় আফ্রিদিকে আবার ডাকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এবার আর সাড়া না দিয়ে পারেননি তিনি। আফ্রিদি এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৯৯টি। সে হিসেবে আরো একটা ম্যাচ যদি তিনি খেলেন তাহলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি পূর্ণ করবেন। এতগুলো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এখনো কোন খেলোয়াড় খেলেনি। এ রেকর্ড গড়তে গিয়ে আফ্রিদি যদি অবসর ভেঙে আবার ক্রিকেটে ফেরেন তাহলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বিশ্ব একাদশের বিশেষ এই ম্যাচকে আগেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল। সুতরাং এই ম্যাচ দিয়ে ২০১৬ সালের পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা নিশ্চিত হয় আফ্রিদির। কিন্তু ম্যাচটা খেলার সময় আফ্রিদি জানিয়ে দেন এরপর আর ফেরা হবে না তার। এই কথাও অবশ্য আফ্রিদির মুখে প্রথমবার নয়! ১৯৯৬ সাল থেকে ক্রিকেট খেলতে শুরু করা আফ্রিদির মন এবারও ক্রিকেট ছাড়ার জন্য পুরো প্রস্তুত কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। বিশ্ব একাদশের হয়ে বোলিং করার সময় আফ্রিদির সঙ্গে মাঠে নেমে কথা বলেন নাসের হোসেইন। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ককে আফ্রিদি বলেন, আর হয়তো ফেরা হবে না। আমার ইনজুরির অবস্থা ভালো নয়। গত পিএসএলের পর আর খেলতে নামিনি। দীর্ঘদিন পর আজই প্রথম বল হাতে নিলাম। এটাই আমার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আফ্রিদি তার ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ৩৯৮টি, টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ২৭, টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন ৯৯টি। ৩৯৮ ওয়ানডে ম্যাচে রান করেছেন ৮ হাজার ৬৪, সর্বোচ্চ ইনিংস ১২৪, সেঞ্চুরি রয়েছে ৬টি অর্ধশত রয়েছে ৩৯টি। হাত ঘুরিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৩৯৫টি। সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার ১২/৭, ৫ উইকেট রয়েছে ৯বার। ২৭ টেস্টের ৪৮ ইনিংসে করেছেন ১ হাজার ৭১৬ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস ১৫৬ রান, সেঞ্চুরি রয়েছে ৫টি অর্ধশত রয়েছে ৮টি। হাত ঘুরিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৪৮টি। সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার ৫২/৫, ৫ উইকেট রয়েছে ১বার। ৯৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে করেছেন ১ হাজার ৪১৬ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস ৫৪ রান, অর্ধশত রয়েছে ৪টি। হাত ঘুরিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৯৮টি। সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার ১১/৪। আরও পড়ুন: অনন্য এক অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে আফ্রিদি ১৯৯৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় আফ্রিদির। আর ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি শেষ ম্যাচ খেলেন। এরপর ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাদা জার্সিতে অভিষেক হয় তার। আর ২০১০ সালে সেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ভার্সন টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ঘটে। আর গতকাল রাতে অর্থাৎ ২০১৮ সালে আইসিসি বিশ্ব একাদশের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেন। উল্লেখ, আফ্রিদিকে বিশেষ করে মনে রাখবে ৩৭ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরির ইনিংসটির জন্য। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে ওভার শেষ করার জন্য। তথ্যসূত্র: আরটিভি অনলাইন আরএস/০৯:০০/ ০১ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HbOgUD
June 01, 2018 at 07:24PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top