ঢাকা, ১৯ জুন- হোক তা ভিন্ন ফরম্যাট; টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তারপরও ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে ২০ ওভারের তিন ম্যাচে চরম নাস্তানাবুদ টাইগাররা। প্রিয় দলের অনুজ্জ্বল আর শ্রী-হীন পারফরমেন্সে চরম হতাশ বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকরা। তারপর টিভিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের দাপট দেখে রীতিমতো চিন্তিত সবাই। কিন্তু যার সবচেয়ে বেশি চিন্তিত হবার কথা, সেই অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মোটেই উদ্বিগ্ন নন। ঈদ করতে চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্র। ঈদের ছুটি শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজগামী দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই যোগ দেবেন টাইগার অধিনায়ক। অধিনায়ককে ছাড়াই ঈদের ছুটি শেষে নতুন কোচের অধীনে টাইগারদের অনুশীলন শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে। শুধু সাকিব একা নন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গেছেন জাতীয় দলের ৯৯ ভাগ সদস্য। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম তামিম ইকবাল। দেশের একন নম্বর ওপেনার একদম সিরিয়াস। তিনি ধরেই নিয়েছেন, ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজ সহজ হবে না মোটেও। রীতিমতো অগ্নি পরীক্ষা দিতে হবে। সে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সবার আগে দরকার নিজেদের ঠিকমতো তৈরি করা। আর যথাযথ প্রস্তুতির জন্য চাই কঠোর ও নিবিড় অনুশীলন। আর সে বোধ ও উপলব্ধি থেকে নিজেকে ঠিকমতো প্রস্তুত করতে পরিবার ও প্রিয়জনের সাথে ঈদ করা থেকেও বিরত ছিলেন তামিম। সাধারণতঃ মা এবং পরিবারের সাথে নিজ শহর চট্টগ্রামেই ঈদ করেন দেশের এক নম্বর ওপেনার; কিন্তু এবার তা না করে অনুশীলনে কাটিয়েছেন তামিম। ঈদে চট্টগ্রাম না গিয়ে ঈদের দিনও একা একা কঠোর ও নিবিড় অনুশীলনে করে গেছেন তামিম ইকবাল। পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার অনুষ্ঠিত দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজও বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন তিনি। তা দেখে তামিমের মনে হয়েছে, ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলিং তোড় সামলাতে হবে। দৃঢ় প্রত্যয়ী তামিম ধরেই নিয়েছেন, আফগানদের সাথে সিরিজটি অনেক কঠিন হবে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের নজরকাড়া ও দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখার পর তার মনে হয়েছে, আফগানদের সাথে হোয়াইটওয়াশের পর ক্যারিবীয়দের সাথে সিরিজটি হবে খুবই কঠিন। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে কঠোর অনুশীলনের বিকল্প নেই। বাড়তি ঘাম ঝরাতে হবে। তামিম মনে করেন, ক্যারিবীয়দের কন্ডিশনে নিজেদের মানিয়ে নেয়াও সহজ হবে না। কারণ, উইকেটে হয়তো ঘাস থাকবে। ঘাসযুক্ত সবুজ উইকেটে বল বাড়তি সুইং করবে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সব সময়ই সুইংয়ের বিপক্ষে দুর্বল। লঙ্কানদের সাথে ক্যারিবীয়দের তেজোদ্দীপ্ত টেস্ট পারফরমেন্স ও দারুণ জয় দেখে তামিমের ধারণা, খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েই যেতে হবে। তাই তো মুখে এমন কথা, আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটি টেলিভিশনে দেখেছি। দেখে আমার মনে হয়েছে, আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি, তা মোটেই যথেষ্ঠ নয়। তাই আমি বাড়তি ঘাম ঝরাচ্ছি। অতিরিক্ত প্র্যাকটিস করার চেষ্টা করছি। আসলে দল যখন ভালো খেলতে থাকে, তখন ক্রিকেটাররাও অনেক বেশি কনফিডেন্ট থাকে। তাদের আত্মবিশ্বাস ও আস্থা থাকে অন্যরকম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পারফরমেন্স দেখে মনে হয়েছে, আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি তা যথেষ্ট নয়। প্রসঙ্গতঃ লঙ্কানদের বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জিতে নিয়েছে ১-০ ব্যবধানে। শেষ ম্যাচটা হয়েছে ড্র। তবে ক্যারিবীয় পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল শেষ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটসহ দুই ইনিংসে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। কেমার রোচ নিয়েছেন ৬ উইকেট। বাকিটা জ্যাসন হোল্ডার। অর্থাৎ, ক্যারিবীয় পেস ব্যাটারির সামনেই নাস্তানাবুধ হয়েছে লঙ্কান ব্যাটিং। তা দেখে তামিমের মনে হয়েছে, ক্যারিবীয় পেসারদের বোলিং তোড় সামলাতে বাড়তি অনুশীলন একান্তই দরকার। তাই তার মুখে এমন কথা, আমার মনে হয়েছে, খুব ভালোভাবে নিজেকে প্রস্তুত করা দরকার। সে তাগিদ থেকেই বাড়তি ঘাম ঝরানো। অতিরিক্ত অনুশীলন করা। তামিমের অনুভব, বলে-কয়ে ভালো খেলা খুব কঠিন। ভালো খেলার নিশ্চয়তা খুব কম। এ সম্পর্কে তামিমের ব্যাখ্যা, আপনি বলে-কয়ে ভাল খেলতে পারবেন না। ভালো খেলার নিশ্চয়তা দিয়ে ভালো পারফরম করা খুব কঠিন। রান করার নিশ্চয়তাও নেই। তবে বাড়তি অনুশীলন তথা বেশি বেশি প্র্যাকটিস করে নিজেকে শতভাগ প্রস্তুত করতে পারলে করণীয় কাজ সম্পাদন একটু সহজ হয়ে যায়। তামিম আরও যোগ করেন, কষ্ট ও পরিশ্রম করে ব্যর্থ হলেও একটা সান্তনা খুঁজে পাওয়া যায়। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। হয়ত কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি। মোট কথা প্রস্তুতিটা ভালো হওয়া খুব জরুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবুজ ঘাসের উইকেটে বল বেশি সুইং করবে। তা ধরে নিয়ে তামিম ইতিবাচক মানসিকতায় মাঠে নামতে চান। তার পরিকল্পনা হলো, ঘাসের উইকেটে শুধু টিকে থাকার মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করলে লাভ নেই। কোনোরকমে উইকেটে টিকে থাকবো- এমন চিন্তায় ব্যাট হাতে মাঠে নামলে বরং করণীয় কাজ আরও কঠিন হয়ে যাবে। খেলতে হবে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে। উইকেটে বল বেশি ম্যুভ করবে- তা ধরে নিয়ে নিজেকে অন্যভাবে প্রস্তুত করার পক্ষে তামিম। তিনি বলেন, ব্যাটসম্যানদের পজিটিভ অ্যাটিচ্যুড নিয়ে খেলতে হবে এবং বলের গতি-প্রকৃতি দেখে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিকে যতটা সম্ভব না খেলে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমার মনে হয় ইতিবাচক মানসিকতা আর অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলগুলোকে যতটা সম্ভব না খেলে ছেড়ে দিলে লম্বা ইনিংস খেলা সম্ভব। তামিম মনে করেন শুধু রক্ষণাত্মক না হয়ে, কৌশল মিশিয়ে আক্রমণাত্মকও হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, শুধু রক্ষণাত্মক কৌশল আর রয়ে-সয়ে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করলে রান পাওয়া আরও কঠিন। তাই তামিমের উপলব্ধি, কোনোভাবেই রান করার সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। আসলে সতর্কতার পাশাপাশি আগ্রাসনটাও দরকার। সতর্ক-সাবধানি হওয়ার পাশাপাশি আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারলে রান করা সহজ। তাতে ব্যাটসম্যানরা মনের দিক থেকে নির্ভার ও সতেজ থাকতে পারে। সূত্র: জাগোনিউজ২৪ আর/১০:১৪/১৯ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2K2xblE
June 20, 2018 at 04:52AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন