সিডনি, ১৭ জুন- অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ২৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক যুবককে আটক করেছে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের যুগ্ম কাউন্টার টেররিজম দল। চরমপন্থী মতাদর্শ সমর্থনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন-এ অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার এই যুবকের নাম নওরোজ রাইদ আমিন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। ধারণা করা হচ্ছে, আমিনের জন্ম হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় অথবা খুব অল্প বয়সেই পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। শনিবার ঈদের দিন সিডনির ইঙ্গেলবার্ন এলাকায় নিজের বাড়ি থেকেই পুলিশ তাকে আটক করে। পরে কাউন্টার টেররিজম টিম তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে এবং তাকে আটক করে ক্যাম্বেলটাউন থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ কিংবা অন্য কোনো সূত্রে আমিনের পূর্ব জাতীয়তা প্রকাশ করা হয়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আমিন ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করেন। তখন সিডনি বিমানবন্দরে অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা তাকে বাধা দেন। আমিনের সঙ্গে থাকা মালপত্র পরীক্ষা করার পরপরই তাঁর বাংলাদেশ ভ্রমণের অনুমতি রদ করে দেওয়া হয়। তার কাছ থেকে চরমপন্থী মতাদর্শকে সমর্থন করে এমন পোশাক ও অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। সন্দেহের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে তদন্ত শুরু করে কাউন্টার টেররিজম দল। তদন্তে আমিনের ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের বেশি কিছু মুঠোফোনের চাঞ্চল্যকর কথোপকথন পুলিশের সামনে আসে। আমিনের সেসব আলাপনের মধ্যে বাংলাদেশে বা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার এবং অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে কথাবার্তা বলার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে আদালতে পেশ করা তথ্য-প্রমাণাদি থেকে জানা গেছে। আপাতত বিদেশি দেশগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদের প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা করা এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি ব্যতীত অস্ট্রেলিয়ার কাস্টমস আইনে টায়ার-১-এ লিপিবদ্ধ সাধারণত নিষিদ্ধজাতীয় পণ্য রপ্তানি করার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমিন দোষী সাব্যস্ত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। রোববার আমিনকে প্যারাম্যাটা আদালতে জামিনের জন্য হাজির হওয়ার কথা ছিল। তবে আমিন আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে আমিনের আইনজীবী আদম হাওডা সব প্রমাণ ও নথিপত্রের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হবেন আদালতে। এর আগ পর্যন্ত আমিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হবে বলে জানা গেছে। আদালত আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত মামলাটি মুলতবি করেছেন। আমিনের গ্রেফতারের ঘটনায় সিডনিসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা ইঙ্গেলবার্ন এ নানা গুঞ্জন উঠেছে। ইঙ্গেলবার্ন ও এর আশপাশের এলাকায় অনেক বাংলাদেশিদের বাস। এখানকার প্রায় বেশির ভাগ বাংলাদেশি নিজেরা বাড়ি কিনে বসবাস করেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনের গ্রেফতারের খবর ফলাও করে প্রচার করছে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম। শনিবার ইঙ্গেলবার্ন এলাকায় পুলিশের হেলিকপ্টার বেশ কয়েকবার টহল দেয় বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। অনেকেই ধারণা করছেন, আমিনের গ্রেফতারের কারণে আগে থেকেই পুলিশ নজরবন্দী করে রাখে এলাকাটিকে। এদিকে আমিনের বাবা দাবি করেছেন, তার ছেলে সন্ত্রাসী নয়। এক সংবাদমাধ্যমে জানালার নেটের পেছনে আবছা ছবির সঙ্গে তার এ মন্তব্য প্রকাশিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশের সহকারি কমিশনার ইয়ান ম্যাককার্টনি বলেন, এ কার্যক্রমের ফলে কোনো কমিউনিটিতেই বর্তমান বা আসন্ন কোনো ঝুঁকি নেই। আমিনের তদন্তের বিষয়টি দীর্ঘ ও জটিল ছিল বলেও জানান তিনি। সূত্র: যুগান্তর আর/০৯:১৪/১৭ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2MwnRFb
June 18, 2018 at 02:54AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন