দেশ থেকে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের অনেক সন্তান, কারো জন্ম কিংবা পৈত্রিক সূত্রে এই বাংলার রক্ত তাঁর শরীরে বয়ে চলছে। বিশ্বের নানান দেশে এমন বিখ্যাত মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিশেষ করে ভারতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তার রাজনৈতিক অনেক কারণও রয়েছে। সেই বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে শোবিজ অঙ্গনের তারকার সংখ্যাই বেশি। এমন কয়েকজন তারকার খোঁজ দেওয়া হলো: ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ (সঙ্গীতজ্ঞ): প্রথম যে-বাঙালি সত্যিকার অর্থে ভারতবর্ষ জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি হলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ। তিনি বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম শিবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সত্যজিত রায় (চিত্র পরিচালক): বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। কিশোর কুমার (গায়ক): ১৯২৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিখ্যাত গাঙ্গুলী পরিবারে তাঁর জন্ম। বিখ্যাত চিত্রাভিনেতা অশোক কুমার ছিলেন কিশোর কুমারের বড়ভাই। মিঠুন চক্রবর্তী (অভিনেতা): মিস্টার ডিস্কো ড্যান্সার খ্যাত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুন চক্রবর্তী বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। অরিয়েন্টাল সেমিনারীতে শিক্ষাজীবন শুরু করেন । তিনি বরিশাল জিলা স্কুলেও পড়েছিলেন। ঋত্বিক ঘটক (চিত্র পরিচালক): ঢাকা শহরের ঋষিকেশ দাস লেনে তাঁর জন্ম। ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পরে তাঁর পরিবার কলকাতায় চলে যায়। সুচিত্রা সেন: কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনা জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (কবি এবং ঔপন্যাসিক): সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম মাদারিপুর জেলায়,কালকিনি থানার মাইজপারা গ্রামে। অসিত সেন (চিত্র পরিচালক): তিনি বহু বিখ্যাত বাংলা ও হিন্দী সিনেমা নির্মাণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। মিতালী মুখার্জি: জন্ম ময়মনসিংহ শহরের নতুন বাজারে। সেখানেই কেটেছে শৈশব। ভারতে পড়তে গিয়ে বিয়ে হয় পাঞ্জাবি ছেলের সঙ্গে। বিয়ের পর ঠিকানা হয় শ্বশুরবাড়ি। গীতা দত্ত: ১৯৩০ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুরের এক জমিদার পরিবারে গীতা দত্তের জন্ম হয়। জন্মকালে তাঁর নাম ছিল গীতা ঘোষ রায়। বিখ্যাত অভিনেতা ও চিত্রপরিচালক গুরু দত্তের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি গীতা দত্ত হিসেবে পরিচিত হন। তরুণ মজুমদার (চিত্র পরিচালক): বাংলাদেশের বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই বিখ্যাত চিত্র পরিচালক। মৃণাল সেন (চিত্র পরিচালক): ১৯২৩ সালের ১৪ মে মৃণাল সেন বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পড়াশোনার জন্য কলকাতায় গেলে সেখানেই নাম ডাক করেন। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়: বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে তার জন্ম। এই শহরে তাঁর জন্ম ও বেড়ে উঠার কিছুটা সময় পার হলেও পৈতৃক ভিটা ছিল ঢাকার বিক্রমপুরে। এস ডি বর্মন (গায়ক ও সুরকার): উপ-মহাদেশের কিংবদন্তি গায়ক ও সুরকার শচীন দেববর্মণ ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লার চর্থায় এক বিশাল রাজপ্রাসাদসম অট্টালিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। চর্থার বাসভবনেই শচীন বাবু তাঁর জীবনের প্রথম ১৯টি বছর অতিবাহিত করেন। চিত্রনায়িকা সুস্মিতা সেন: বরিশালে তাঁর পৈতৃক নিবাস। জয়া বচ্চন (অভিনেত্রী): পৈতৃক আদি নিবাস নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলায়। ১৯৪৭-৪৮ সালের দেশ বিভাগের পুর্বে তাঁর বাবা তরুণ কুমার ভাদুরী কলকাতায় চলে যান। দেবব্রত বিশ্বাস (১৯১১-১৯৮০) গায়ক: ১৯১১ সালে ২০ আগস্ট কিশোরগঞ্জে তাঁর জন্ম। সাগর সেন (গায়ক): ১৯৩২ সালের ১৫ মে বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি বড় হয়েছেন কলকাতায়। উত্পল দত্ত (অভিনেতা): ১৯২৯ সালের ২৯ মার্চ বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন এ অভিনেতা। হীরক রাজার দেশের রাজা,জয়বাবা ফেলুনাথএর মগনলাল মেঘরাজ,আগন্তুকএর মনোমোহন মিত্র,পদ্মা নদীর মাঝির হোসেন মিয়া,অমানুষএর মহিম ঘোষাল,দো আনজানের চিত্র পরিচালক,জনঅরণ্যে`র বিশুদা এমনি কত চরিত্রেই না অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। পি.সি. সরকার (জাদুশিল্পী): টাঙ্গাইল জেলার অশোকপুর গ্রামে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৩৩ সালে টাঙ্গাইলের সা`দত কলেজ থেকে গণিতে অনার্স সহ বি. এ. পাশ করেন। ভানু ব্যানার্জি (কমেডিয়ান): ভানু জন্মেছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে ১৯২০ সালের ২৬শে অগাস্ট। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিস হাই স্কুল এবং জগন্নাথ কলেজে শিক্ষা শেষ করে ১৯৪১ সালে কলকাতায় পাড়ি জমান। তিনি এমনই কমেডিয়ান ছিলেন যখন মারা যান তখন তাঁর মৃতদেহ দেখেও নাকি লোকে হেসে ফেলছিলেন! হিরালাল সেন: ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রকার হিরালাল সেনের জন্ম মানিকগঞ্জের বগজুরী গ্রামে ১৮৬৬ সালে ,এক সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে । সাবিত্রী চ্যাটার্জী: উত্তম কুমারের সাথে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন। বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করা গুণী এই অভিনেত্রী। শ্রেয়া ঘোষাল: বিক্রমপুরের হাসাড়া গ্রামে তাঁর দাদার বাড়ি। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের আগেই তার দাদা কলকাতা চলে যান। সেখানেই তাঁর বাবা জন্মগ্রহণ করেন। শ্রাবন্তী: দাদু ও বাবার বাড়ি বরিশালে। সে হিসেবে তিনি বরিশালেরই মেয়ে। নিজেও সে কথা স্বীকার করেছেন। নচিকেতা: বরিশালের ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর চেঁচরী গ্রামে রয়েছে তার বাপের ভিটা। কিছুদিন আগে সেখানে গিয়ে অঝোড়ে কেঁদেছেনও। এছাড়া বলিউডের জনপ্রিয় মিউজিশিয়ান প্রীতম চক্রবর্তী, বাপ্পি লাহিড়ী, হারাধন বন্দোপাধ্যায়েরও আদি নিবাস নাকি বাংলাদেশে। বাংলাদেশের গর্ব করার মতো আরেক ব্যক্তি হচ্ছেন নাফিজ বিন যাফর। হলিউডের ব্যস্ত এই অ্যানিমেটর অস্কার জয় করেছেন। আর/১০:১৪/৩০ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2mPXjTw
July 31, 2018 at 04:20AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top