লন্ডন, ১৭ জুলাই- দুর্ব্যবহার ও হয়রানির অভিযোগ উঠার পর লন্ডনের ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিআর) থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খ্যাতনামা ক্যান্সার গবেষক নাজনীন রহমান। তার বিরুদ্ধে গত ১২ বছর ধরে উত্ত্যক্ত, দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে বেড়ে উঠা নাজনীন রহমানের মা-বাবা বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে গিয়ে স্থায়ী হন। ১৯৯১ সালে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে মেডিসিনের ওপর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে মলিকিউলার জেনেটিক্সের ওপর পিএইচডি করেন। ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসায় তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিসম্পন্ন। স্তন, ডিম্বাশয় ও শৈশবের ক্যান্সারের জন্য দায়ী জিন শনাক্তে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। খ্যাতনাম এ গবেষক দীর্ঘদিন ধরে আইসিআরের প্রজনন শাস্ত্র ও রোদবিদ্যা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান ৪৫ জন কর্মী। এরমধ্যে ২২জনই সরাসরি তার নির্যাতনের শিকার হওয়ার দাবি করেছেন। বাকিরা রয়েল মার্সডেন হাসপাতালে তার বাজে আচরণের প্রত্যক্ষদর্শী। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তাকে সাময়িক ছুটি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। নাজনীন রহমানের অভিযোগ, তার আচরণ মনস্তাত্ত্বিকভাবে পীড়াদায়ক যা ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করে দেয়। লন্ডনের ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, নাজনীন রহমানের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের যে কোনও অভিযোগ পেলে আইসিআর তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। এর প্রেক্ষিতে আইসিআর থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন নাজনীন রহমান। আগামী অক্টোবর থেকে আর প্রতিষ্ঠানটিতে থাকছেন না তিনি। ৫০ বছরের এই নারী বলেন, তদন্তে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে এখান থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি একান্ত আমার সিদ্ধান্ত। গবেষণার পাশাপাশি অধ্যাপক নাজনীন রহমান একজন গীতিকার ও সঙ্গীতশিল্পী। গত কয়েক বছরে তার একাধিক গানের অ্যালবাম বের হয়েছে। আইসিআর-এর জন্য নিজের কাজ নিয়ে গর্বিত বলে জানান খ্যাতনামা এই গবেষক। ২০১০ সালে নাজনীন রহমান একাডেমি অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ফেলো নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের এপ্রিলে বিবিসি ওম্যানস-এ তিনি ব্রিটেনের তৃতীয় প্রভাবশালী নারীর মর্যাদা লাভ করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ মুসলিম পুরস্কার পান। বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়গুলোতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর নাজনীন রহমানের জন্মদিনে তাকে সম্মানজনক কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (সিবিই) হিসেবে মনোনীত করা হয়। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন আর/১০:১৪/১৭ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NUoYip
July 18, 2018 at 05:51AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top