কিংস্টন, ১৪ জুলাই- বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা বিবেচনায় সময়টা ভীষণ বিদঘুটে। (বাংলাদেশ সময়) রাত ৯টায় শুরু টেস্ট ম্যাচ! সাকিব-তামিমদের পাঁড় ভক্তটিও পর্যন্ত গোটা দিনের খেলা দেখার সিদ্ধান্ত নিতেগিয়ে দুইবার ভাবেন। কিন্তু কাল কিংস্টনের দ্বিতীয় দিনটা একটু অন্যরকম ছিল। ক্যারিবীয় উপকূল থেকে বাংলাদেশকে শুভ সকাল জানিয়েছিলেন আবু জায়েদ-মিরাজরা। সকালের সেশনেই পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে বাকি ৬ উইকেট। কিন্তু সাফল্যস্নাত সকাল যে সব সময় গোটা দিনের পূর্বাভাস দেয় নাসেটি আবার বোঝা গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট-ভক্তদের মনে একটা শঙ্কা ছিলই। শঙ্কা বলতে অ্যান্টিগা টেস্টের বিভীষিকা। ব্যাটসম্যানরা দুই ইনিংসেই আসা-যাওয়ার কী খেলটাই না দেখিয়েছেন! এই ভয়টুকু উগরে বের না হওয়ার কারণ কিংস্টনের দ্বিতীয় দিনে বোলারদের ফিরে আসা। প্রথম সেশনেই ৫৯ রানের মধ্যে বাকি ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বোলাররা। ভক্তদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তাহলে এবার বোধ হয় ব্যাটসম্যানদের ফেরার পালা। হ্যাঁ, তাঁরা ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু সেটা ড্রেসিং রুমে। জোড়ায় জোড়ায় কে কার আগে ফিরতে পারে! বোলাররা আশা জাগিয়েছিলেন বলেই হয়তো রাত জেগে দ্বিতীয় দিনের খেলা দেখতে বসেছিলেন এ দেশের ক্রিকেটভক্তরা। ২০ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারানোর পর সাকিব-তামিমের ৫৯ রানের জুটি ভক্তদের রাত জাগার ধকলকে পুষিয়ে দেওয়ার পথেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ দলে যে একটা গোপন রোগ বাসা বেঁধেছে তা কী দলের চিকিৎসকেরা (পড়ুন কোচ) জানেন? বোধ হয় খেলোয়াড়দেরও অজানা। আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত থাকলে কী আর স্কোরবোর্ডে তাকানোর সময় থাকে! রোগের সংক্রমণটা হয়েছে দেশের মাটি থেকে। শ্রীলঙ্কা এসেছিল সফরে। ফেব্রুয়ারিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নিজেদের দুই ইনিংসে ১১০ ও ১২৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর তো অ্যান্টিগা হরর শো। প্রথম ইনিংসে ৪৩, দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪। আর কাল কিংস্টনে ১৪৯। কিছু বুঝলেন? টেস্টে এ নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে ১৫০ রানের নিচে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। বুঝলেন তো ফেরার তাড়নাটা কত বেশি! সাকিব-মুমিনুলরা সামর্থ্যের এই তাড়নাটুকু বারবার নিংড়ে দেওয়ায় পরিসংখ্যানবিদদের কিন্তু ঘাম ছুটে গেছে। টানা ৫ ইনিংসে দেড় শ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার নজির যে সাম্প্রতিককালে নেই। সাম্প্রতিক কেন গত দুই-তিন যুগেও টেস্ট ক্রিকেট এমন নজরানা দেখেছে কি না সন্দেহ! তো, পরিসংখ্যানবিদেরা এই সন্দেহটুকুই দূর করেছেন। কীভাবে? তাঁরা ক্রিকেটের নথি-পত্র ঘেঁটে দেখেছেন টেস্ট ক্রিকেটে গত অর্ধ শতাব্দীতে বাংলাদেশের মতো এমন নজির গড়তে পারেনি আর কোনো দলই। একদম সঠিক হিসেব অনুযায়ী সময়টা ৬০ বছরএই সময়ের মধ্যে প্রথম দল হিসেবে টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে ১৫০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার কীর্তি (!) গড়েছে বাংলাদেশ। এই ধরনের কীর্তি গড়ার প্রতি আরেকটু নিবেদন থাকলেই কিন্তু একটি রেকর্ড ছোঁয়া যেত। সেই রেকর্ডে জড়িয়ে আছে একসঙ্গে চারটি দেশদক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। টেস্টে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি (৬) ডাক মারার রেকর্ড এই চার দেশের। কাল সেই রেকর্ড ছুঁতে ছুঁতে ছোঁয়া হয়নি। ডাক যে মাত্র পাঁচটি! অবশ্য হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দ্বিতীয় ইনিংস এখনো বাকি। আর সেখানেও কিছু না হলে পথ তো পরেই আছে...। সূত্র: প্রথম আলো এমএ/ ০২:৩৩/ ১৪ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2zFAKdE
July 14, 2018 at 08:38PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন