ঢাকা, ০১ জুলাই- একের পরে এক তারকাদের সংসার ভাঙার খবর আসছে। এবার সংসার ভাঙতে যাচ্ছে অভিনেত্রী শ্রাবন্তীর। তার সংসার ভাঙনের গুঞ্জন ডালপালা মেলেছিল অনেক আগেই। গেল বছরের শেষদিকে যখন শ্রাবন্তী হঠাৎ দেশে ফিরে আসেন সন্তানদের নিয়ে তখন থেকেই শোনা যাচ্ছিল স্বামীর সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে তার। অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্যি হলো। শ্রাবন্তী নিজেই সংবাদমাধ্যমে জানালেন, তাকে তালাকের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। একটি সংবাদমাধ্যমে সেই খবর তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন। রোববার সকালে তিনি জানান, গত ৭ মে তাকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। বগুড়া সদরের কালীতলার শিববাড়ি সড়কে শ্রাবন্তীর বাবার বাসার ঠিকানায় এই নোটিশ পাঠানো হয়। শ্রাবন্তী দীর্ঘদিন যাবৎ যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। হঠাৎ করেই তিনি গেল বছরের ডিসেম্বরে দেশে ফেরেন। তখনই জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে শ্রাবন্তীর। তার ওপর রাগ করেই তার স্বামী যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানদের রেখেই দেশে চলে আসেন এবং চাকরিতে যোগ দেন। তখন শ্রাবন্তী স্বামীকে ফেরাতে দেশে আসেন, ওঠেন নানাবাড়ি বগুড়াতে। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। বাধ্য হয়ে আবারও ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বসেই পান তালাকের নোটিশ। এরপর শ্রাবন্তী দেশে ফিরেছেন গত ২৫ জুন। দেশে ফেরার পর স্বামী খোরশেদ আলমের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন শ্রাবন্তী, কিন্তু তার দেখা পাননি। শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে, তাকে ও তার দুই মেয়েকে সেই বাসাতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এ নিয়ে গতকাল শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, কেন এমন করছ? দাও না আমাদের মাফ করে। এক ঘর দরকার নাই, কিন্তু এক ছাদের নিচে থাকি আমরা। বাচ্চাদের প্রতি একটু দয়া করো। তুমি তো প্রতিজ্ঞা করেছিলে, কখনো ছেড়ে যাবে না। এখন কেন ছেড়ে গেছ? আমাদের বাচ্চাদের ভাঙা পরিবারে বড় হতে দিয়ো না। আমি তোমার কাছে হাত জোড় করে বলছি, আমাদের বাচ্চাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়ো না। জানালেন, সব সংসারেই ঝামেলা হয়। আমাদেরও হয়েছে। সেটা মিটমাটের চেষ্টাও করেছি আমি। কিন্তু আমাকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, গেল ২৫ জুন দেশে আসার পর আমি রামপুরা বনশ্রীতে আলমের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাই। কিন্তু আমাকে আর বাচ্চাদের বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢাকায় আমার নিজের কোনো বাসা নেই। শেষে পরিচিতদের সহযোগিতায় এক মামাতো ভাইয়ের বাসায় যাই। এরপর এখন পর্যন্ত আলম আমার সঙ্গে, এমনকি বাচ্চাদের সঙ্গেও দেখা করেনি। বাচ্চাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। গত এপ্রিল মাসে আলম যুক্তরাষ্ট্রে যায়। ওই সময় আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেনি। আমর দুই বাচ্চা সেখানে সরকারের কাছ থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পায়। আলম আমাকে না জানিয়ে ব্যাংক থেকে সেই ছয় হাজার ডলার তুলে নিয়ে আসে। সেখানে বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে চলব, কী খাওয়াব, তা ভাবেনি। ও শুধু আমাকেই নয়, বাচ্চাদেরকেও ঠকাচ্ছে। বর্তমানে শ্রাবন্তী বগুড়াতেই রয়েছেন। সেখানে তার সঙ্গে আছে সাত বছরের মেয়ে রাবিয়াহ আলম ওসাড়ে তিন বছরের মেয়ে আরিশা আলম। শ্রাবন্তী জানান, আগামী ৪ জুলাই মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় ফিরবেন। তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি, খোরশেদ আলম অন্য মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন দীর্ঘদিন। গত ২৬ মে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আর যৌতুকের মামলাও করেছেন। এদিকে শ্রাবন্তীর অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছন তার স্বামী খোরশেদ আলম। তিনি পাল্টা অভিযোগ এনেছেন শ্রাবন্তীর বিরুদ্ধে। তিনি দাবি করেছেন, আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম শ্রাবন্তীকে। যারা আমার কাছের মানুষ, তারা জানেন অনেক ছাড় দিয়েছি আমি ওকে পাওয়ার জন্য। ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের দুটি বাচ্চা হয়েছে। কিন্তু শ্রাবন্তীর যেসব ব্যাপারে ছাড় দিয়েছিলাম সেসব থেকে শ্রাবন্তী এখনো সরে আসতে পারেনি। এতদিন আমি ব্যাপারগুলো সামনে আনতে চাইনি, কারণ তা আমাদের কারও জন্যই ভালো হবে না। আমার সন্তানদের জন্য ভালো হতো না। কিন্তু এখন আর আমার জন্য কোনো পথ খোলা নেই। বিচ্ছেদের পথেই হাঁটতে হবে। তিনি শ্রাবন্তীর অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া গিয়ে একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় আমার। সেই মেয়ের সঙ্গে আমার পরকীয়ার মনগড়া গল্প সাজাচ্ছে শ্রাবন্তী। নিজের দোষ ও দায় সে আমাকে দিতে চায়। প্রসঙ্গত, মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে একটা সময় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী। মোহনীয় হাসি দিয়ে তিনি জয় করেছেন দর্শক হৃদয়। আলাদা করে আলোচনায় এসেছিলেন জোছনার ফুল ধারাবাহিক নাটক দিয়ে। এছাড়াও রং নাম্বার এবং ব্যাচেলর সিনেমার মাধ্যমে বেশ সাড়া জাগিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। তবে দীর্ঘদিন ধরে সব রকম আলোচনার বাইরে তিনি। ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। বিয়ের পর থেকেই শোবিজের রঙিন দুনিয়া থেকে নিজেকে আড়াল করে নেন এ গুণী অভিনেত্রী। সংসারে মন দেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে নূরুল আলম আতিকের ডালিম কুমার নাটকে অভিনয়ের পর আর নতুন কোনো নাটকে তাকে দেখা যায়নি।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2KlxbOC
July 01, 2018 at 10:50PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top