আর্সেনাল কোচ উনাই এমারি বলেছেন, মেসুত ওজিল তার টিমমেটদের প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল। জার্মানি দলের হয়ে আর ফুটবল না খেলার ঘোষণা দেয়ার পর আর্সেনাল বস এ মন্তব্য করেন। রাশিয়া বিশ্বকাপের পর ওজিলকে নিয়ে দেশটির ফুটবল অ্যাসোসিয়শনের প্রেসিডেন্টের কটূ মন্তব্যের কারণে এ নিয়ে ফুটবল বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। জার্মানির বিভিন্ন গণমাধ্যম এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে ওজিলের সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্নের অবতারণা করে। আর্সেনাল কোচ বলেন, মেসুত (ওজিল) আমাদের খেলোয়াড়দের সবাইকে নিজের পরিবারের মতো মনে করে। আমরা ঠিক খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাই ও সবটুকুই উজার করে দেয়। সিঙ্গাপুরে দলের সঙ্গে সফররত আর্সেনাল কোচ এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি তাকে পেয়ে খুশি। আমি মনে করি প্রত্যেক খেলোয়াড় মেসুতের মতো হওয়া উচিত। সে প্রতিটি খেলোয়াড়কে শ্রদ্ধা করে। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে মেসুত ওজিলের আচমকা অবসরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে জার্মানিতে। জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফবি) বিরুদ্ধে বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে রোববার জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ২৯ বছর বয়সী ওজিল। ঘোষণাটা রীতিমতো বিস্ময় হয়ে এসেছে জার্মানি জাতীয় দলের কোচ জোয়াচিম লোর জন্য। এমন কিছুর জন্য তিনি নাকি একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। এবার বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে জার্মানির বিদায়ের পর সমর্থকদের একটি অংশের কাছ থেকে ক্রমাগত বর্ণবাদী গালি শুনতে হচ্ছিল ওজিলকে। এ সময় ফেডারেশন তার পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো তুর্কি বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডারকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়ার প্রচারণায় ইন্ধন জুগিয়েছে। এতে বীতশ্রদ্ধ হয়েই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী ওজিল। কিন্তু ডিএফবির ভূমিকা যত বিতর্কিতই হোক, লো সব সময় ওজিলের পাশে ছিলেন। জার্মানির জার্সিতে ৯২ ম্যাচে ২৩ গোল করা আর্সেনাল তারকা ছিলেন লোর অন্যতম প্রিয় শিষ্য। জার্মানি কোচের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাতেও ছিলেন তিনি। ওজিলের এমন বিদায় তাই মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে লোর। তিনি নিজে কোনো বিবৃতি না দিলেও লোর এজেন্ট হারুন আর্সলান জানিয়েছেন, ওজিলের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আগে থেকে আমরা কিছুই জানতাম না। লো ভীষণ বিস্মিত হয়েছেন। এমন কিছুর জন্য তিনি প্রস্তত ছিলেন না। এদিকে ওজিলের তোলা বর্ণবাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও ডিএফবি মেনে নিয়েছে যে, বর্ণবাদী আচরণ ও অবমাননা থেকে তাকে বাঁচাতে আরও কিছু করা যেত। বিশ্বকাপের আগে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের সঙ্গে ওজিলের ছবি তোলা নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। তুরস্ক ও জার্মানির কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে বিপদে পড়েন ওজিল। এ ঘটনায় তার ওপর রীতিমতো মানসিক অত্যাচার করেছে জার্মান মিডিয়া ও উগ্র সমর্থকরা। ডিএফবি সভাপতি রেইনগার্ড গ্রিন্ডেল নিজে তাতে উসকানি দিয়েছেন। অবসরের ঘোষণা দেয়ার সময় গ্রিন্ডেলকে কাঠগড়ায় তুলে ওজিল বলেছিলেন, তাদের চোখে জিতলে আমি জার্মান, হারলে অভিবাসী। ওজিলের মতো ৩০ লাখ তুর্কি বংশোদ্ভূত মানুষ আছে জার্মানিতে। ওজিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তারা বলছেন, প্রতিনিয়ত তারা বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষের শিকার হন। ওজিলের অবসরকে তারা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। গোটা জার্মানিতেই এ নিয়ে তোলপাড়। সাবেক খেলোয়াড়দের অনেকে সমালোচনা করলেও সতীর্থ ও সাধারণ সমর্থকদের সহানুভূতি পাচ্ছেন ওজিল। দেশের জাতিগত ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তোপের মুখে পড়েছেন ডিএফবি সভাপতি গ্রিন্ডেল। মঙ্গলবার এক জরিপে দেখা গেছে, জার্মানির প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ মনে করেন এ ঘটনায় পদত্যাগ করা উচিত গ্রিন্ডেলের। সূত্র: যুগান্তর আর/১২:১৪/২৭ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NNqYIF
July 27, 2018 at 06:50AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন