লন্ডন, ২৭ জুলাই- বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বহুল পরিচিত রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী মুহাম্মদ সিরাজ আলিকে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে।৬২ বছর বয়সী এই কৃতি ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবী দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের এসেক্স অঞ্চলের থার্কে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় রাখা তার অবদান এবং এবং সমাজসেবামূলক তৎপরতার স্বীকৃতি হিসেবে গত সপ্তাহে তাকে সম্মানসূচক ডিগ্রিটি প্রদান করা হয়। ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স তার সম্পর্কে লিখেছে, এসেক্সে ভারতীয় খাবারকে পরিচিত করে তুলতে সিরাজ পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। আতিথিয়তা এবং ব্যবসা সংক্রান্ত তৎপরতার মাধ্যমে তিনি ৩০ লাখ পাউন্ড সেবামূলক কাজের জন্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এতে তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য হয়ে উঠেছেন অনুসরণীয় এক ব্যক্তিত্ব। আট বছর ধরে সিরাজ এসেক্স জামে মসজিদ এবং সাউথএন্ড-অন-সিতে অবস্থিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একই সঙ্গে থার্ক বাংলাদেশ কল্যাণ সমিতির সভাপতি। মুহাম্মদ সিরাজ আলি থেকে এখন ডক্টর আলি হয়ে ওঠা সিরাজ যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন ১১ বছর বয়সে। তার ইংরেজি ভাষা জ্ঞান তখন সমৃদ্ধ ছিল না। আর্থিক অবস্থায়ও ছিল খারাপ। তারপরও ১৯৭৯ সালে স্ট্যানফোর্ডলিহোপে নিউ কারি সেন্টার নামের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তার এ উদ্যোগের মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো থার্কের সঙ্গে পরিচয় হয় দক্ষিণ এশীয় খাবারের। নিজের এলাকায় পাঁচটি রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠার পর তিনি বাস্তবায়ন শুরু করেন তার বড় স্বপ্নটির। ১৯৯৫ সালে বেনফ্লিটে যাত্রা শুরু করে তার রেস্টুরেন্ট মহারাজা। সংশ্লিষ্ট এলাকার ভারতীয় খাবারের রেস্টুরেন্টগুলোর মধ্যে তার মহারাজা এখন পর্যন্ত অন্যতম জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। মহারাজা রেস্টুরেন্ট ডক্টর আলি মন্তব্য করেছেন, আমাকে ও আমার পরিশ্রমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি গর্বিত। রেস্টুরেন্ট পরিচালনা কারাটাকে আমি কখনও শুধু খাবার সংক্রান্ত বিষয় হিসেবে দেখিনি। বরং এর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিভাজনের দেওয়াল ভেঙে ফেলা যায়, যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং একে অপরের পাশে দাঁড়াবার মানসিকতা তৈরি হয়। এসব আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বলেই কয়েক দশক ধরে এসেক্স ও অন্যান্য এলাকার সমাজসেবামূলক কাজের জন্য আমি লাখ লাখ পাউন্ডের তহবিল গড়ে তুলেছি। আমি সৌভাগ্যবান, যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। ৪৭ বছরের কর্ম জীবনে সিরাজ মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস সোসাইটি, মোটর নিউরন ডিজিজেস, এনএসপিসিসি, ব্রিটিশ রেডক্রস এবং ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেসসহ আরও অনেকগুলো দাতব্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে বিদ্যালয় ও হাসপাতালও গড়ে তুলেছেন। তার রাঁধা খাবার গেছে কঙ্গোতে দায়িত্বপালরত জাতিসংঘের সেনা সদস্যদের জন্য। যুক্তরাজ্য সংসদও সিরাজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তার রাঁধা খাবারের স্বাদ নিতে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন আর/১০:১৪/২৬ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2LHIUXw
July 27, 2018 at 06:31AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top