ঢাকা, ১১ আগস্ট- বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস ক্যারিবীয় সফর থেকে ফিরেই জানিয়েছেন, টেস্টে ভালো করতে হলে আমাদের দ্রুতগতির ও দীর্ঘদেহী পেসার দরকার। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান অবশ্য এ প্রসঙ্গে কঠিন এক বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন, কোচের চাহিদা অনুযায়ী ফাস্ট বোলার তাঁদের হাতে নেই। কিন্তু আসলেই দীর্ঘদেহী আর দ্রুতগতির বোলার না হলে টেস্টে ভালো করা সম্ভব নয়? কামরুল ইসলাম তা মনে করেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলা বাংলাদেশ দলের এই পেসার মনে করেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শারীরিক গঠনের চেয়ে স্কিলে গুরুত্ব দেওয়াটা বেশি জরুরি, আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্কিলে উন্নতি করা। আমাদের স্কিল আরও উন্নতি করতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে আরও ভালো খেলতে হবে। আমরা যে উচ্চতার বোলার, সেটিতেই ভালো করা সম্ভব। আমাদের জিনগত দিকটা যদি দেখেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মতো উচ্চতা আমাদের হবে না। এমন বোলার যদি খুঁজতে বলা হয় তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে বোলার আনতে হবে! আমাদের যে উচ্চতা আছে এটা দিয়েই ভালো করতে হবে। কামরুলের যুক্তি যে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই সেটি ক্যারিবীয় দলের কেমার রোচকে দেখলেই বোঝা যাবে। অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম সকালে যাঁর তোপে বাংলাদেশ অলআউট হয় ৪৩ রানে। কেমোর রোচের উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি, খুব যে দ্রুত গতিতে বোলিং করে ধসিয়ে দিয়েছেন, সেটিও নয়। তামিম ইকবালকে আউট করেছেন ঘণ্টায় ৮৩ মাইল গতির এক বলে। মুমিনুল হক ফিরেছেন তাঁর ৮২ মাইল গতির বলে, মুশফিককে এলবিডব্লু করেছেন ৮৮ মাইল গতিতে পরাস্ত করে। সাকিব আউট ৮৪ মাইল আর মাহমুদউল্লাহ রোচের শিকার হয়েছে ৮৩ মাইল গতির বলে। গড়ে রোচের ৮৩ মাইল বা ১৩৪.৫ কিলোমিটার গতির বোলিংয়েই শেষ বাংলাদেশ! রোচের সাফল্যের মন্ত্র ছিল, জায়গায় বোলিং, লাইন লেংথ ঠিক রাখা আর সিমকে কাজে লাগানো। গতি দিয়েই শুধু ব্যাটসম্যানদের নাকাল করা যাবে, এই তত্ত্বে তাই বিশ্বাসী নন কামরুল। তাঁর যুক্তি, আমরা যে গতিতে বোলিং করি, এ গতিতে যদি ভালো সুইং করাতে পারি তাহলে ভালো করা সম্ভব। আমাদের গতি ঘণ্টায় ১৩০-৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে। এর সঙ্গে সুইং যোগ করলেই ভালো করা সম্ভব। দীর্ঘদেহী, গতিময় ক্যারিবীয় পেসারদের সঙ্গে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেই সাকিব-তামিমরাই তো পাল্টা জবাব দিয়েছেন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে। কামরুল তাই মনে করেন, প্রতিপক্ষের শক্তি নিয়ে চিন্তা না করে নিজেদের শক্তির ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত, আপনি দেখবেন ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে ওদের বোলারদের পাত্তা দেয়নি আমাদের ব্যাটসম্যানরা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতায় কিন্তু বলা হচ্ছে না এই দুই সংস্করণে আমাদের বোলারদের চেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা খুব লম্বা বা ওরা অনেক ভালো। মাশরাফি ভাই, মোস্তাফিজ, রুবেলরাই সেখানে ভালো করেছে। আমাদের সবারই ভালো করা সম্ভব, শুধু পরিশ্রম আরও বাড়াতে হবে, নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হবে। সেটাই হচ্ছে কথা, কামরুলরা উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সামর্থ্যের প্রমাণ পুরোপুরি দিতে পারেননি বলে কথাটা উঠছে। দুর্দান্ত ফাস্ট বোলার হতে যে উচ্চতা প্রথম শর্ত নয়, সেটি বাংলাদেশের পেসারদের যুক্তি দিতে হবে কেন, বহু আগে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ম্যালকম মার্শালই দেখিয়ে গিয়েছেন। সূত্র: প্রথম আলো এমএ/ ০৮:১১/ ১১ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2vZaWnG
August 12, 2018 at 02:16AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top