খাংউওন, ০১ আগস্ট- দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটন খ্যাত এলাকা খাংউওন প্রদেশের মাংসাং সি বিচ ও জংদোংজিন সানক্রুজ পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলাইপিএস বাংলা গ্রীষ্মকালীন মিলনমেলা। এর আয়োজন করে ইপিএস বাংলা কমিউনিটি ইন কোরিয়া। গত রোববার (২৯ জুলাই) এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। কোরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৭টি বিলাসবহুল বাসযোগে ৭৫০ জনেরও বেশি প্রবাসী এই মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করেন। সাত সকালে দেশটির বিভিন্ন এলাকা থেকে হই হুল্লোড় করতে করতে বাসগুলো ১১টা নাগাদ জংদোংজিন সানক্রুজ পার্কে পৌঁছে। এরপরই শুরু হয় পার্কে প্রবেশ। এত লোক একত্রে দেখে কোরীয়দের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়। সবার মাঝে একটিই প্রশ্ন ছিল এত লোক কীভাবে একত্রিত করা সম্ভব? হ্যাঁ, এই অসম্ভব কাজটিই সম্ভব করে দেখিয়েছে কোরিয়ায় বাংলাদেশিদের অন্যতম জনপ্রিয় কমিউনিটি সংগঠন ইপিএস বাংলা কমিউনিটি ইন কোরিয়া। গত বছরও এই কমিউনিটি সংগঠন কোরিয়ার পশ্চিম সাগরে প্রথমবারের মতো সাড়ে চার শ বাংলাদেশি নিয়ে আয়োজন করেছিল প্রথম গ্রীষ্মকালীন মিলনমেলা। দ্বিতীয় গ্রীষ্মকালীন মিলনমেলায় এসে প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক লোক নিয়ে বিদেশের মাটিতে সমুদ্রযাত্রা করা সত্যিই একটি অসাধারণ কাজ। সাড়ে সাত শ লোকের সমুদ্রপাড়ে দাঁড়িয়ে এক স্বরে জাতীয় সংগীত গাওয়া সত্যিই এক অন্যরকম অনুভূতি। মনে হয় যেন সমুদ্রকে জানিয়ে দেওয়াহে সমুদ্রের ঢেউ বঙ্গোপসাগর পাড়ের লোকদের জানিয়ে দাও, কোরিয়া থেকে তোমার দেশের সোনার ছেলেরা তোমাদের কথা ব্যাকুল কণ্ঠে স্মরণ করছে। জংদোংজিন সানক্রুজ পার্কে ঘণ্টা দুয়েক সময় কাটিয়ে গাড়ি রওনা করে পূর্ব সাগরের তীরে মাংসাং সমুদ্র সৈকতে। জাপান থেকে ধেয়ে আসা জুংদারি টাইফুনের প্রভাবে সমুদ্রের ঢেউ অনেকটা অশান্ত ছিল বলে সমুদ্রের পানিতে জলকেলি করতে বারণ ছিল। তারপরও অনেককে হাঁটুপানিতে নামতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ বালির নিচের মাথা ছাড়া শরীরের বাকি অংশ ঢেকে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এ ছাড়া বিচে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খেলার ইভেন্টে মেতে ছিল অংশগ্রহণকারীরা। বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে মোরগের লড়াই, দৌড় প্রতিযোগিতা, কাপলদের জন্য বল নিক্ষেপ, বাচ্চাদের বল নিক্ষেপ এবং বালিশ বদল প্রতিযোগিতা ছিল অন্যতম। এ সময় অল্প কিছুক্ষণের জন্য কোরিয়ার পূর্ব সাগরের তীর ছোট্ট এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়েছিল। অনেক দিন পর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ, বাংলা খাবারের স্বাদ আর এত এত লোক একত্রে পেয়ে সবাই উচ্ছ্বাসিত ছিল। সবার মাঝে আনন্দের কমতি ছিল না। একটি দিনের জন্য প্রবাসী কর্মময় জীবনটা পেয়েছিল দুই দণ্ড শান্তি। দিন শেষে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও ভ্রমণ নিয়ে ঝড় তুলতে দেখা যায়। এমনকি আয়োজনকারীরা ভ্রমণের ছবি দিয়ে ফেসবুক গ্রুপে ছবির প্রতিযোগিতাও চালু করেন। এ ছাড়াও বাস প্রতি সেরা কুইজ বিজয়ী, সেরা বিনোদনদানকারী, সেরা সুদর্শনের প্রতিযোগিতাও ছিল উল্লেখ করার মতো। মিলনমেলায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রথম সচিব (শ্রম) মুকিমা বেগম। তিনি এত লোককে দেখেও উচ্ছ্বাসিত ছিলেন। তিনি আয়োজনকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও দূতাবাসের হয়ে সবার জন্য নিরলসভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এই মিলনমেলার পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল রেমিট্যান্স প্রেরণকারী জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান জিএমই রেমিট্যান্স ও দেশীয় পণ্য ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসএন ফুড। সবার ব্যাপক সাড়ায় মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান কমিউনিটির সভাপতি শান্ত শেখ। অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানটিকে সফল করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। আগামী বছর আরও বড় পরিসরে মিলনমেলাটি আয়োজন করার ইচ্ছে আছে বলেও জানান ভ্রমণ উপকমিটির ইয়াছিন রাছেল, জিয়াউল হক, ফারুক আহমেদ ও আল আমিন। সূত্র: প্রথম আলো এমএ/ ০৯:১১/ ০১ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2AsMYGY
August 02, 2018 at 03:18AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top