আবুধাবি, ১৫ সেপ্টেম্বর-কুশল মেন্ডিসকে সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশ দলেকে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের করা ২৬১ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে শ্রীলংকা ক্রিকেট দল। মাশরাফিদের বোলিং লাইনআপ ভেঙে দেয়ার জন্যই শুরুতে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন লংকান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ওভারে ১৩ রান তুলে নেয়া শ্রীলংকা, দ্বিতীয় ওভারেও মোস্তাফিজকে একেরপর এক বাউন্ডার ছাড়া করে। ওভারের শেষ বলে কুশল ম্যান্ডিসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার। এর আগে মুশফিকের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৬১ মুশফিকুর রহিমের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৬১ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ৪৯.৩ ওভারে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে এ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। মুশফিক ১৫০ বলে ১৪৪ রান সংগ্রহ করেন। তার ইনিংসটি ছিল ১১টি চার ও চারটি দৃষ্টিনন্দন ছক্কায় সাজানো। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফিরা। ইনিংসের প্রথম ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় ওভারে ইনজুরির কারণে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফিরে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য হয়ে যায় মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। এমন কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে টেনে তুলেন মুশফিকুর রহিম। তাকে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিঠুন। এই জুটিতে তারা ১৩২ রান সংগ্রহ করে। মুশফিকের ষষ্ঠতম সেঞ্চুরি ১২ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠতম সেঞ্চুরি হাঁকালেন মুশফিকুর রহিম। শনিবার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী খেলায় শ্রীলংকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। শুধু সেঞ্চুরি করাই নয়, ২ রানে লিটন-সাকিব-তামিম (ইনজুরি) সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন মুশফিক। ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপদে পড়ে যাওয়া দলকে একাই টেনে তুলেন মুশফিক। ২০০৫ সালে টেস্ট ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। পরের বছরের আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়। এরপর থেকে জাতীয় দলের হয়ে ১৮৮টি ম্যাচ খেলে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ২৯টি ফিফটির সাহায্যে ৩৩.৮২ গড়ে ৪ হাজার ৯৭২ রান সংগ্রহ করেন মুশফিক। ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্টেও দারুণ খেলে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। টেস্টের সাদা পোশাকে জাতীয় দলের হয়ে ৬২টি ম্যাচ খেলে পাঁচটি সেঞ্চুরি এবং ১৯টি ফিফটিতে ৩৪.২৫ গড়ে ৩ হাজার ৬৯৯ রান সংগ্রহ করেছেন মুশফিক। আর টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে চরটি ফিফটির সাহায্যে মুশফিক করেছেন ১ হাজার ১৩১ রান। বিদায় মাশরাফি, ভরসা মুশফিক যোগ্য সঙ্গীর অভাব ভালোভাবেই অনুভব করছেন মুশফিকুর রহিম। মোহাম্মদ মিঠুনের মতো আর কেউই পারেননি মুশফিককে সঙ্গ দিতে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজরা পারেননি মুশফিককে সঙ্গ দিতে।সঙ্গীর অভাবে দলকে সেভাবে এগিয়ে নিতে পারছেন না জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরার মিছিলে সর্বশেষ যোগ দেন অধিনায়ক মাশরাফি। ডি সিলভার বলে সজোরে ব্যাট চালাতে গিয়ে উপল থারাঙ্গার ক্যাচে পরিণত হন মাশরাফি। মুশফিককে রেখে মিরাজও ফিরে গেলেন যোগ্য সঙ্গীর অভাবে মুশফিকুর রহিম। মোহাম্মদ মিঠুনের মতো আর কেউই পারেননি মুশফিককে সঙ্গ দিতে। রিয়াদ ফিরেছেন ১ রান করে। তার বিদায়ের পর সাজঘরে নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মালিঙ্গার করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সৈকত। প্রত্যাশা ছিল মেহেদী হাসান মিরাজ ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দেবেন। কিন্তু সুরঙ্গা লাকমলের বলে উইকেটের ওপর ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিরাজ। নিচু হয়ে ওঠা বলটিকে তালুবন্দি করেন লাকমল। মিরাজ ফেরেন ১৫ রান করে। ১৭৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ দল। বাজে শট খেলে মাহমুদউল্লাহ আউট শুরুর ধাক্কা সামলিয়ে মুশফিক-মিঠুনের ব্যাটে ভালোভাবেই খেলায় ফেরে বাংলাদেশ দল। মিঠুনের বিদায়ের পর সেই ভালোর রেশ ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আমিলা আপনসের স্পিন বলে কাভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ (১)। ফিফটি গড়ে মিঠুনের বিদায় প্রথম ওভারে ১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল। লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর দ্বিতীয় ওভারে বাঁ-হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। মুশফিক-মিঠুনের মধ্যে ভালো বোঝা পড়া ছিল। তাদের ব্যাটে ভর করেই এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ দল। ইনিংসের ২৭তম ওভারে মালিঙ্গার বাউন্স বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মিঠুন।শুরুতে তিন ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরে গেলে কোণঠাসা হয়ে যায় বাংলাদেশ দল। সেই অবস্থা থেকে দলকে উত্তরণ করেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে ১৩২ রানের জুটি গড়েন তারা। মালিঙ্গার তৃতীয় শিকারে পরিনত হওয়ার আগে ৬৮ বলে পাঁচ চার ও দুটি ছক্কার সাহায্যে ৬৩ রান করে ফেরেন মিঠুন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটা তার প্রথম ফিফটি। শুরুতেই বিপদে বাংলাদেশ দল। ইনিংসের প্রথম ওভারেই শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার লিটন দাস। তার বিদায়ের ঠিক পরের বলে ফিরেন সাকিব আল হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে বিপদে পড়েন লিটন। প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানেই ফেরেন এই ওপেনার। সাকিব কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখেন লাসিথ মালিঙ্গার বলে বোল্ট। মাত্র ১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে একঘরে হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ দল। তথ্যসূত্র: যুগান্তর এইচ/২২:৩২/১৫ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2pcGSSm
September 16, 2018 at 04:34AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন