ঢাকা, ০৬ সেপ্টেম্বর- চিত্রনায়ক সালমান শাহের মৃত্যু রহস্যের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রায় দুই বছর ধরে তদন্তের দায়িত্বে থাকা সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে দীর্ঘদিন পর সাক্ষী খুঁজে না পাওয়ার সীমাবদ্ধতার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম সালমান শাহ। তার অকাল মৃত্যুর ২২ বছর পূর্ণ হলে আজও তা এক রহস্য! খুব কম সময় তার সিনেমার ক্যারিয়ার, তবু এই অভিনেতা রেখে গেছেন অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী। সালমান শাহের মৃত্যুর তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পিবিআইয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন: এ বিষয়ে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি না হলেও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আমরা সালমানের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে কাজ করছি, নানা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২০ আগস্ট মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও ওইদিন প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস আগামী ১৮ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। গেল বছরের ২০ নভেম্বর চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম আদালতে দাখিল হলেও তাতে নতুন কিছু আসেনি। ওই সময় তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদনে সিরাজুল বলেন, সালমান শাহের মা নিলুফা চৌধুরী ওরফে নীলা চৌধুরীকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। সাক্ষী হিসেবে হুমায়ুন কবির, আ. সালাম, দেলোয়ার হোসেন শিকদার, আ. খালেক হাওলাদার, বাদল খন্দকার (চলচ্চিত্র পরিচালক), শাহ আলম কিরণ (চলচ্চিত্র পরিচালক), মুশফিকুর রহমান গুলজার (চলচ্চিত্র পরিচালক), এস এম আলোক সিকদার ও হারুন আর রশিদকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি জানান, সালমান শাহের অপমৃত্যুর মামলাটি অনেক পুরনো। মামলায় যেসব সাক্ষী করা হয়েছে তাদের অধিকাংশ নির্ধারিত ঠিকানায় না থেকে নতুন ঠিকানায় চলে গেছেন। র্নিধারিত ঠিকানায় সাক্ষীরা না থাকায় তাদের পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। এরপরও তাদের খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তার মধ্যে রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে সালমান শাহর (চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন) লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। যদিও সালমান শাহর স্ত্রী সামিরার দাবি অত্মহত্যা করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধেও সালমান শাহ হত্যার অভিযোগ আনা হয়। শুধু সামিরাই নন সামিরার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও সালমানের মৃত্যুর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ফিল্ম সিন্ডিকেটর আজিজ মোহাম্মদের সাথে সামিরার যোগ সূত্র রয়েছে এমন অভিযোগও করেছেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিডিও বার্তায় কয়েকবার সামিরা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামী রুবিও সালমানকে হত্যার অভিযোগ তোলেন। এই অভিযোগ তোলার পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে সালমানের বাবার মৃত্যুর পর মা নীলা চৌধুরী বাদী হিসাবে আসেন। তিনি আগের তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেন। নীলা চৌধুরী ছেলে সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জনকে তার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা সালমান শাহ হত্যা মামলাটির তদন্ত পুনঃরায় করতে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। এর আগে র্যাবকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলেও দায়রা জজ আদালতে তা আটকে যায়। কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবির মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সাথে অভিষিক্ত হয়েছিলেন সালমান শাহ। সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় ছবিটি তুমুল হিট হয়েছিল। এরপর মাত্র চার বছর বেঁচে ছিলেন সালমান। আর এই কম সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি মোট ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তথ্যসূত্র: চ্যানেল আই আরএস/ ০৬ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NqoVxG
September 06, 2018 at 05:09PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন