ঢাকা, ০১ সেপ্টেম্বর- একটা সময়ে এ দেশে ফুটবলে জোয়ার ছিল। হারিয়ে যাওয়া ফুটবলের সেই জোয়ারে ভাসছে ক্রিকেট। এখন দেশের নাম্বার ওয়ান খেলা ক্রিকেট। বাংলাদেশে ক্রিকেটের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটারদেরও উন্নয়ন হয়েছে। অজপাড়া গ্রাম থেকে উঠে আসা ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই রীতিমতো স্টারে পরিণত হচ্ছেন। হয়ে যাচ্ছেন কোটি টাকার মালিক। হঠাৎ করে এত অর্থের মালিক হওয়ায় তারা জড়িয়ে যাচ্ছেন অসামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। যাদের কারণে দেশের ক্রিকেটে কলঙ্কিত হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম রুবেল হোসেন, আরাফাত সানি, শাহাদাত হোসেন রাজিব, মোহাম্মদ শহীদ, সাব্বির রহমান রুম্মন, আল আমিন হোসেন, নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। রুবেল হোসেন দেশের ক্রিকেট কলঙ্কিত হওয়া শুরু পেস বোলার রুবেল হোসেনকে দিয়ে। হয়তো তার আগে কেউ থাকতে পারেন। তবে দেশের ক্রিকেটের ব্যাড বয় হিসেবে প্রথম খবরে আসেন তারকা এ পেসার। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এই পেসারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী। রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হ্যাপীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়েন। মামলার জের ধরে জেলে যেতে হয় রুবেলকে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে অংশ নিতে দেশছাড়ার আগে তাকে আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছিল। পরে অবশ্য নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পান রুবেল। আরাফাত সানি ২০১৬ সালের ১২ জুন রাতে নাসরিন সুলতানা নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে আসল ফেসবুক আইডিতে ম্যাসেঞ্জারে সানি-নাসরিনের অন্তরঙ্গ কিছু ছবি পাঠানো হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে ৫ জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলাটি করেন নাসরিন। তদন্ত শেষে ২২ মার্চ আরাফাত সানির বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরে তা বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে আসে। ওই তরুণীর দাবি, ২০১৪ সালে সানির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। পরবর্তীতে সানি আরেকজনের সঙ্গে সংসার শুরু করেন। একসময় সানি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে নাসরিনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তাকে পাঠান বলে অভিযোগ তার। সেই মামলায় দীর্ঘ ৫০ দিন কারাভোগ শেষে নাসরিনের অনাপত্তিতেই জামিন পান আরাফাত সানি। শাহাদাত হোসেন রাজিব মাহফুজা আক্তার হ্যাপি নামের এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৫ সালে মামলা হয় জাতীয় দলের পেস বোলার শাহাদাত হোসনে রাজিবের নামে। ওই মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে প্রায় দুই মাস জেলে থাকতে হয়। পরে অবশ্য ওই গৃহকর্মীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হলে মামলা থেকে মুক্তি পান রাজিব। মোহাম্মদ শহীদ জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে তারকাখ্যাতি পাওয়া মোহাম্মদ শহীদের বিরুদ্ধে মেয়েদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ করেন তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে স্ত্রী এমন অভিযোগ করলে ফারজানাকে বাসার ছাদে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতেও চেয়েছিলেন শহীদ। স্বামীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে মামলা করতেও চেয়েছিলেন ফারজানা আক্তার। পরে অবশ্য তাদের সেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়। সাব্বির রহমান রুম্মন জাতীয় দলের এ তারকা ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলার সময় চট্টগ্রামে নিজের হোটেল কক্ষে নারী অতিথি নিয়ে রাত্রিযাপন করার অপরাধে সাব্বিরকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় লিগের ম্যাচ চলাকালীন ম্যাও বলার অপরাধে এক কিশোরকে মাঠের সাইড স্কিনের পাশে নিয়ে বেধড়ক প্রহার করেন সাব্বির। চলতি বছরের জুনে ভারতের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলা অবস্থায় মামুলি বিষয় নিয়ে সতীর্থ মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে হাতাহাতিরও অভিযোগ আছে সাব্বিরের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, গত জুলাই মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলার সময় ফেসবুকে দুই সমর্থককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন সাব্বির। এসব কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে তলব করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে। আল আমিন হোসেন জাতীয় দলের এই পেস বোলারের বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আছে। এমন অভিযোগের কারণে ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ থেকে তাদে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরত আসা আল আমিন এরপরও শোধরাননি। চট্টগ্রামে বিপিএল চলা অবস্থায় হোটেলকক্ষে নারী অতিথি নিয়ে যাওয়ায় আপরাধে আর্থিক জরিমানাও দিতে হয় তাকে। নাসির হোসেন জাতীয় দলের এ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অনেক আগ থেকেই অভিযোগ আছে। যে কারণে তাকে লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আক্রান্ত এ ক্রিকেটারের সঙ্গে সম্প্রতি এক তরুণীর ফোনালাপ ভাইরাল হয়। নিজেকে নাসিরের বান্ধবী পরিচয় দেয়া ওই তরুণী, ফেসবুক লাইভে নাসিরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ করেন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সম্প্রতি জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইন ৩ ও ৪ ধারায় অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন। স্ত্রীর যৌতুকের অভিযোগ নিয়ে মোসাদ্দেক অবশ্য বলেছিলেনন, দেখেন ওকে আমি গত ১৬ আগস্ট তালাক দিয়েছি। তার আগে ও কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি। তালাক দেয়ার পর ও নাটক শুরু করেছে। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। সূত্র: যুগান্তর এমএ/ ০৮:৩৩/ ০১ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PWlKMn
September 02, 2018 at 03:06AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন