আবুধাবি, ১৮ অক্টোবর- আবুধাবি টেস্টে আজ তৃতীয় দিনে হাস্যকর রান আউট হয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান আজহার আলী। টেস্ট ক্রিকেটে দুজনের সম্মিলিত অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ সমৃদ্ধ। ১৩০ ম্যাচ, ৯ হাজারের বেশি রান, ২৫ সেঞ্চুরি আর ২০ হাজারের ওপরে বল খেলেছেন। অর্থাৎ টেস্ট আঙিনায় শিশুসুলভ কোনো কাণ্ড ঘটিয়ে হাস্যরসের জন্ম দেওয়াটা তাঁদের সঙ্গে বেমানান। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটে ব্রেইনফেড নামে একটা শব্দ বেশ আলোচিত হচ্ছে। আজহার আলী আর আসাদ শফিক কি তাহলে ব্রেইনফেড অর্থাৎ মাথা কাজ না করার শিকার? তারপরও বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে, এভাবেও রান আউট হওয়া যায়? রান আউট কিংবা ক্যাচ মিস। কিংবা ক্যাচ হাতছাড়া করেও হাস্যকর উপায়ে সেটা লুকানোর চেষ্টা করে নিকট অতীতে কম হাস্যরসের জন্ম দেননি পাকিস্তানি ক্রিকেটারেরা। বল কামড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে এই দলে। ক্যাচ ধরতে গিয়ে তিনজন ফিল্ডার দাঁড়িয়ে হাতের সামনে বল পড়তেও দিয়েছেন। তবু আজ আজহার ও আসাদ যা দেখালেন, সেটা সব সীমাই অতিক্রম করেছে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অতীতের সব হাস্যকর ঘটনাকে মাথায় রেখেও বলতে হচ্ছে, এমন কিছু ক্রিকেট দেখেনি আগে। আবুধাবি টেস্টে আজ তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে এমন কিছু বিশ্বাস করতে বাধ্য করেছেন আজহার ও শফিক। দিনের খেলার তখন নবম ওভার চলছিল। ব্যক্তিগত ৬৪ রান নিয়ে স্ট্রাইকে আজহার। উইকেটেও বেশ সেট হয়ে গেছেন। পিটার সিডলের তৃতীয় ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে পাঠালেন গালি অঞ্চলে। বাউন্ডারি সীমানার দিকে বলটি যেতে দেখে দুই ব্যাটসম্যানই নিশ্চিত ছিলেন ৪ রান আসবেই। আর তাই উইকেটের মাঝে দাঁড়িয়ে নন স্ট্রাইকের ব্যাটসম্যান আসাদ শফিকের সঙ্গে খোশগল্প (!) করছিলেন আজহার। দুই ব্যাটসম্যানের কেউ-ই খেয়াল করেননি বলটা বাউন্ডারি সীমানার একেবারে কাছে গিয়ে থেমে গেছে। মিচেল স্টার্ক দৌড়ে গিয়ে বলটা কুড়িয়ে ফেরতও পাঠিয়েছেন উইকেটরক্ষক টিম পেইনের কাছে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক সম্ভাব্য সুযোগটা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। আর তাই দৌড়ে চলে এসেছিলেন স্টাম্পের কাছে। বলটা গ্লাভসে জমা পড়া মাত্রই তিনি স্টাম্প ভেঙেছেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আজহার ও শফিক এই দৃশ্য দেখার পরও ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেননি! এটি ব্রেইনফেড নয় তো আর কী? সংবাদমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে হাস্যরস চলছে। বলা হচ্ছে, পেশাদার ক্রিকেটে কোনো কিছু নিশ্চিত হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত না নেওয়াটা মৌলিক শিক্ষার অংশ। ক্রিকেটারদের তরুণ বয়সেই তা শেখানো হয় এবং মাঠে বারবার এ ব্যাপারগুলোই ফিরে আসে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়েও আজহার ও শফিক আজ জন্ম দিয়েছেন ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম অদ্ভুতুড়ে রান আউটের। সংবাদমাধ্যমগুলোর মতামত এমনই। পাকিস্তানি ক্রিকেটে এমন রান আউট অবশ্য নতুন কিছু নয়। দুই বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুবাই টেস্টে প্রায় একই রকমভাবে রান আউট হয়ে হাস্যরসের জন্ম দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির। দেবেন্দ্র বিশুর বলে লং অন অঞ্চলে উড়িয়ে মেরেছিলেন আমির। ধরেই নিয়েছিলেন নিশ্চিত ছক্কা। তাই দৌড়ে রান নেওয়ার কোনো প্রয়োজনবোধ করেননি আমির ও নন স্ট্রাইকে থাকা ওয়াহাব রিয়াজ। দুজন দাঁড়িয়ে ছিলেন একই প্রান্তে। ওদিকে রোষ্টন চেজ বলটা ঠেকিয়ে তা জ্যাসন হোল্ডারের কাছে ফেরত পাঠান। আমির তা দেখে বিপদ বুঝতে পেরে ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করলেও দেরি হয়ে যায়। রান আউট হন তিনি। তবে আমির এই ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারেন, তিনি তবুও ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। আজহার-শফিক কী করলেন! তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের স্কোর ৪ উইকেটে ২৩২ রান। হাতে ৬ উইকেট রেখে এরই মধ্যে ৩৬৯ রানের লিড নিয়েছে পাকিস্তান। আজহার-শফিকের হাস্যকর রান আউটের ভিডিও : এমএ/ ০৪:১১/ ১৮ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2CoJHYl
October 18, 2018 at 10:15PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন