ঢাকা, ২১ অক্টোবর- পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৮৬ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয় বাংলাদেশ দলের। ৩২ বছর পর রোববার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩৫০তম ম্যাচ খেলে টাইগাররা।মাইলফলকের এই ম্যাচে প্রত্যাশিত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এদিন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। প্রথমে ব্যাট করে ইমরুল কায়েসের (১৪৪) সেঞ্চুরি এবং তরুণ ব্যাটসম্যান সাইফউদ্দিনের (৫০) ফিফটিতে ভর করে ৮ উইকেটে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ দল। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১০০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে শেষ পর্যন্ত শেন উইলিয়ামসের ৫০ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ২৪৩ রান সংগ্রহ করে। ২৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ দল। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মিরাজ। ২ উইকেট শিকার করেন নাজমুল ইসলাম অপু। বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পায়নি জিম্বাবুয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলের কাছে পাত্তাই পাচ্ছে না জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হ্যামিল্টন মাসাকাদজার বাহিনী। ১০০ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর, ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে পিটার মুরকে সঙ্গে নিয়ে ৪৫ রান যোগ করেন শেন উইলিয়ামস। বিপদ জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অফ স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৪৫ বলে ২৬ রান করেন পিটার মুর। এরপর ৩ রানের ব্যবধানে নতুন ব্যাটসম্যান ত্রিপানোকে রান আউট করেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া ফজলে মাহমুদ রাব্বি। মিরাজের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন মাভুতা। আরভিনকে ফেরালেন মিরাজ একমাত্র হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ছাড়া জিম্বাবুয়ের বাকি চার ব্যাটসম্যান বোল্ড হয়ে সাজঘরে। সবশেষ ক্রেইগ আরভিনকে মাঠ ছাড়া করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ১০০ রানে প্রথম সারির ৫ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কঠিন চাপের মধ্যে পড়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। আবারও সেই অপুর আঘাত ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটির পর ১৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর খেলায় ফেরার আগেই ফের জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন নাজমুল ইসলাম অপু। তার দ্বিতীয় শিকারে বোল্ড হয়ে সাজঘরে সেকান্দার রাজা। মোস্তাফিজের পর অপুর আঘাত পেস আক্রমণের পর স্পিন। মোস্তাফিজুর রহমানের পর নাজমুল ইসলাম অপু। এই দুই বোলারের জোড়া আঘাতে কুপোকাত জিম্বাবুয়ে। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৮ রান করা জিম্বাবুয়ে এরপর ১৫ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে ৩ উইকেট। জুয়াও ২৪ বলে ৩৫ রান করে মোস্তাফিজের বলে বোল্ড, অপুর বলে একইভাবে আউট হয়ে ফেরেন ১৩ বলে ৫ রান করা ব্রান্ডন টেইলর। অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে রান আউট করে ফেরান ইমরুল-মুশফিক। তার আগে ৩৪ বলে ২১ রান করেন মাসাকাদজা। উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ সাম্প্রতিক সময়ে পরাজয়ের বৃত্তে আটকে আছে জিম্বাবুয়ে। সেই বৃত্ত থেকে বের হতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ দলের করা ২৭১ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলে জিম্বাবুয়ে। একেরপর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ের ওপেনার সিফাস জুওয়াওয়ের লাগাম টেনে ধরেন মোস্তাফিজুর রহমান। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসেই জুওয়াওকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। ৭.১ ওভারে ৪৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ইমরুল-সাইফউদ্দিনের ব্যাটে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সূচনালগ্ন থেকেই যাওয়া-আসার মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। সেখানে নিজের স্বভাবজাত খেলাটা খেলে যান ইমরুল কায়েস। একপর্যায়ে ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। তবুও অবিচল থাকেন বাঁহাতি ওপেনার। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়েই লড়াই চালিয়ে যান তিনি। ভীষণ চাপের মধে ইমরুলকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত লড়াকু সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমরুল। হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাইফউদ্দিন। দুজনের ব্যাটে জিম্বাবুয়েকে ২৭২ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের হয়ে জার্ভিস নেন ৪ উইকেট। চাতারা নেন ৩ উইকেট। রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। ম্যাচের গোড়াপত্তন করতে নামেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। তবে শুভসূচনা এনে দিতে পারেননি তারা। শুরুতেই টেন্ডাই চাতারার শিকারে পরিণত হন লিটন। পরে ক্রিজে আসেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তবে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তিনি। একই বোলারের শিকার বনে ডাক মেরে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেন ইমরুল। দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবলও। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। দলীয় ৬৬ রানে ব্রেন্ডন মাভুতার বলে হার মানেন তিনি। ফলে চাপেই থাকে বাংলাদেশ। সেখান থেকে মোহাম্মদ মিথুনকে নিয়ে নিয়ে চাপ কাটিয়ে উঠেন ইমরুল। যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দিচ্ছেলেন মিথুন। কিন্তু হঠাৎই খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। দলীয় ১৩৭ রানে কাইল জার্ভিসের শিকার হয়ে ফেরেন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ৪০ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি। মিথুন ফেরার পর ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে নির্ভরতার পরিচয় দিতে পারেননি তিনি। খানিক পরেই জার্ভিসের ছোবলে কাটা পড়েন মিস্টার কুল। এতে ফের চাপে পড়ে টাইগাররা। সেই চাপের মধ্যে এ পেসারের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে স্কোরটা হয়ে যায় ১৩৭/৩ থেকে ১৩৯/৬। ২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খুইয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। সেখান থেকে সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান ইমরুল। খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। সাইফউদ্দিনও দারুণ সঙ্গ দেন। দুজনের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে উড়তে থাকে বাংলাদেশ। এগিয়ে যায় চ্যালেঞ্জিং স্কোরের পথে। শেষদিকে জার্ভিসের বলির পাঁঠা হয়ে ফেরেন ইমরুল। ফেরার আগে ১৪০ বলে ১৩ চার ও ৬ ছক্কায় ১৪৪ রান করেন তিনি। এটি বাঁহাতি ওপেনারের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি সাইফউদ্দিন। চাতারার শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। এর আগে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। ৬৯ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় কাঁটায় ৫০ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে ইমরুলের সঙ্গে চরম কঠিন পরিস্থিতিতে ১২৭ রানের জুটি গড়েন পেস অলরাউন্ডার। সপ্তম উইকেটে দেশের হয়ে এটি রেকর্ড জুটি। সপ্তম জুটিতে আগের রেকর্ড ছিল মুশফিক ও নাঈম ইসলামের ১০১। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনে ওই জুটি গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এমএ/ ১০:২২/ ২১ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2R4FNIk
October 22, 2018 at 04:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন