মো. আবুল কাশেম, ও মো. ফজল খান
বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে পা রেখেছে মাত্র। কিন্তু অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। একটি উপজেলায় গড় ১ হাজার জনসংখ্যায় যদি ১ জন পুলিশ বাহিনী নিয়োগ হতো তাহলে বিশ্বনাথ উপজেলায় প্রায় ২ লক্ষ জনসংখ্যা প্রতি অন্তত ২০০ জন পুলিশ বাহিনী সদস্য নিয়োগের প্রয়োজন ছিল। সেই সাথে প্রতিটা ইউনিয়নের জন্য কমপক্ষে ১ টি করে পুলিশের জন্য গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে। এই হিসাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশের সংখ্যা ও গাড়ির সংখ্যা অনেক কম রয়েছে।
বিশ্বনাথ উপজেলায় ৪৩৬ টি গ্রাম, ৭৪ টি ওয়ার্ড, ৮ টি ইউনিয়নে প্রায় ২ লক্ষ জনসংখ্যার অধিক এর মধ্যে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মাত্র ২০ জন পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। ইমার্জেন্সিতে আরো ১০ জন পুলিশ আছে। তার মানে প্রায় গড় প্রতি ১০ হাজার জন জনসংখ্যায় ১ জন পুলিশ বাহিনী রয়েছে।
বিশ্বনাথ থানা কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী- বিশ্বনাথ উপজেলার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্মরত আছেন- বিশ্বনাথ থানা ইনচার্জ ও তদন্ত সহ কর্মকর্তা ২ জন, ১০ জন নারীসহ এস আই মধ্যে ৯ জন পুরুষ, এ এস আই নারীসহ ৯ জনের মধ্যে ৮ জন নারীসহ , কনস্টেবল নারীসহ ৩৮ জনের মধ্যে কনস্টেবল, গাড়ির ড্রাইভার, কম্পিউটার অপারেটরসহ ২০ জন আছেন এবং ইমার্জেন্সি কনস্টেবল ১০ জন রয়েছে বলে জানা গেছে।
মোট ৩৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা দিয়ে কিভাবে ২ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? ২ লক্ষ মানুষের মধ্যে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুন, মদ, জুয়া ও মারামারি প্রতিনিয়ত রয়েছে। গড় ১ জন পুলিশ কী পারবেন এই ১০ হাজার জনসংখ্যা কে আইনি সহায়তা করতে? একটি উপজেলায় কনস্টেবল, গাড়ির ড্রাইভার, কম্পিউটার অপারেটরসহ মাত্র ২০ জন পুলিশ দিয়ে অপরাধ কী ঠেকাতে পারবেন?
একটি উপজেলা থেকে অপরাধ নির্মূল করতে হলে কমপক্ষে ২শ জন পুলিশ বাহিনীর প্রয়োজন। তাহলে অন্তত চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুন, মদ, জুয়া ও মারামারি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা কিছুটা সম্ভব হবে। তার পরেও আমাদের বাংলাদেশের মানুষ অনেক সভ্যতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। মানবতার ভয়ে, ইজ্জতের ভয়ে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে অপরাধ থেকে অনেক দূরে রয়েছেন। এর সাথে শহরে সিসি ক্যামেরা লাগানো জন্য শহরের অপরাধ কমে গেছে। যারা অপরাধ করছে তাদের দরজায় তো পুলিশ পাহারা দিয়ে বসে থাকতে পারবে না। যদি অপরাধ নির্মূল’র জন্য একটি পরিবারকে পুলিশ পাহারায় বসে থাকেন, তাহলে অন্যদের কী করবেন? উন্নত দেশে জনসংখ্যার তুলনামূলক পুলিশ বাহিনী অনেক বেশী রয়েছেন। তার পরেও প্রতিনিয়ত অপরাধ ঘটতে চলেছে। তাদের তুলনায় বাংলাদেশের অপরাধ কম হচ্ছে।
গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে আরো অনেক লোক নিয়োগের প্রয়োজন। দেশে অনেক বেকার শিক্ষিত যুবক – যুবতী রয়েছেন, তাঁদের কে বিনা ঘুষে নিয়োগ নিলে একদিকে বেকারত্ব কমে যাবে, অপরাধ কমে যাবে, আইন শৃঙ্খলা আরো জোরদার হবে।
সাথে সাথে সমাজে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন- পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। অপরাধ নির্মূল’র দায়িত্ব শুধু পুলিশের নয়। আমাদের সচেতন মহলেরও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। যেহেতু জনসংখ্যার তুলনামূলক পুলিশ সদস্য সংখ্যা কম, সেহেতু স্থানীয় সচেতন নাগরিকের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কোথায় কোথায় অপরাধ হচ্ছে- চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুন, মদ, জুয়া ও মারামারি হচ্ছে, তা দেখা মাত্র পুলিশ প্রশাসনকে খবর দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। অপরাধ নিজে দেখে না দেখার বান করে অপরাধীকে আশ্রয় পশ্রয় দিয়ে অপরাধের অংশীদারি হবে না।
এই সমাজ সু-শৃঙ্খল, সুন্দর ও শান্তি রাখার দায়িত্ব তোমার/ আমার / সকলের।
এবিষয়ে বিশ্বনাথ থানা ইনচার্জ শামছুদ্দোহা পি পি এম বলেন- বিশ্বনাথ উপজেলায় কমপক্ষে আরো ৬০ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে এবং লামাকাজিতে একটি পুলিশ ফাঁড়ি দেওয়ার খুবই প্রয়োজন।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2CO3tgP
October 16, 2018 at 11:21PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন