ঢাকা, ১৪ নভেম্বর- প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনার ব্যর্থ হওয়ার পরে চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। দায়িত্বজ্ঞানহীন এক শট খেলে নিজের অভিষেক ইনিংসে সাজঘরে ফিরেছিলেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে পরের ইনিংসেই বোধোদয় হয়েছে তার। আবারও দুই ওপেনার এবং প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান ব্যর্থ হওয়ার পরে দাঁড়িয়ে গেছেন ঢাল হয়ে। অভিষেক টেস্টেই তুলে নিয়েছেন নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। মাত্র ২৫ রানেই ৪ উইকেট পতনের পরে মিঠুন ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১৩ রান। লিড এখন ৩৩১ রানের। ৪ চারের মারে ৯৫ বলে ৫৩ রান নিয়ে ব্যাট করেছেন মিঠুন। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে রানখরায় থাকা মাহমুদউল্লাহ রয়েছেন নিজের পঞ্চাশের অপেক্ষায়। তার সংগ্রহ ৫৯ বলে ৩৭ রান। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে লিটন দাস ও ইমরুল কায়েসের সামনে সুযোগ ছিলো টেস্ট দলে নিজেদের জায়গা পাকা করার। কিন্তু দুজনের কেউই নিতে চাইলেন না সে সুযোগ। সিরিজের দুই ম্যাচের চার ইনিংসেই ব্যর্থ হলেন এ দুই ওপেনার। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মুখ রক্ষা করা ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ব্যতীত বলার মতো আর কিছুই নেই এই জুটির ভাণ্ডারে। ব্যর্থতার ধারা বজায় রেখে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ রানেই সাজঘরে ফিরে গেছেন লিটন ও ইমরুল। তাদের দেখাদেখি আউট হয়ে যান প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরিয়ার মুমিনুল হকও। ২১৮ রানের বিশাল লিড থাকা সত্বেও চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে জিম্বাবুয়ে যখন ২১৮ রানে পিছিয়ে, তখন থেকেই সবার মনে চলছে একটি প্রশ্ন চতুর্থ দিন সকালে কি করবে বাংলাদেশ? সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি তাইজুল ইসলাম দিতে পারেননি এ প্রশ্নের সদুত্তর। তাই অপেক্ষা করতে হয়েছে চতুর্থ দিন সকাল পর্যন্ত। অবশেষে চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর মিনিট ১৫ আগে দলীয় সুত্রে জানা যায় ২১৮ রানে এগিয়ে থাকলেও জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাবে না বাংলাদেশ। নিজেরাই ব্যাট করতে নামবে দ্বিতীয় ইনিংসে। দলের পরিকল্পনা ছিলো অনেকটা এরকম যে, চতুর্থ দিন সকালে দেড়-দুই সেশন ব্যাট করে সফরকারীদের সামনে বড়-সড় একটি লক্ষ্য ছুঁড়ে দেবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এরপর ম্যাচের বাকি চার-সাড়ে চার সেশনে অলআউট করে ম্যাচ জিতে নেয়ার মাধ্যমে সমতায় সিরিজ শেষ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু এ পরিকল্পনায় শুরুতেই বাঁধ সাধেন জিম্বাবুয়ের পেসার কাইল জার্ভিস। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া জার্ভিস দ্বিতীয় ইনিংসে এক ওভারের মধ্যেই সাজঘরে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে। ২১৮ রানের বিশাল লিড সাথে নিয়ে ব্যাট করতে নেমেও যেন স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছিলেন না ইমরুল। শুরু থেকেই নড়বড় ব্যাটিং করতে করতে হুট করেই ইনিংসের পঞ্চম ওভারে খেলতে গেলেন বড় শট। অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বলে স্কয়ার ড্রাইভ করে তিনি ধরা পড়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট ফিল্ডারের হাতে। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৩ রান। ইমরুল ফিরে যাওয়ার এক বল পরেই অগ্রজ ওপেনারের পথ ধরেন লিটনও। জার্ভিসের করা অফস্টাম্পের খানিক বাইরের বল লাইন বুঝে খেলতে না পারার মাশুল দিয়ে বোল্ড হয়ে যান লিটন। ১৪ বল খেলে ৪ রান করতে পেরেছেন তিনি। এক ওভার পরেই ডোনাল্ড তিরিপানোর অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন মুমিনুল। মাত্র ৫ বলের ইনিংসে ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যাওয়া মুমিনুল বাড়িয়ে দিয়ে যান বাংলাদেশের বিপদ। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে পড়েছিল তিন উইকেট। সেখান থেকে রেকর্ডগড়া জুটিতে দলকে রানপাহাড়ে বসিয়েছিলেন মুমিনুল হক এবং মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে আর হয়নি এমন কিছু। ওপেনারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর এবার ব্যর্থ হন প্রথম ইনিংসের দুই নায়ক মুমিনুল ও মুশফিক। মুমিনুলের বিদায়ে মাত্র দশম ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। চাপ সামাল দেয়ার মিশনে মুশফিকও টেকেননি বেশিক্ষণ। দলীয় ২৫ রানের মাথায় তিনিও বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের উইকেট। প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানের বিশাল লিড থাকা সত্বেও স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল লেগসাইডে পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগ ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন মুশফিক। এক চারের মারে ১৯ বলে ৭ রান করেন তিনি।। সূত্র: জাগোনিউজ আর/১২:১৪/১৪ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2qH3lb8
November 14, 2018 at 08:00PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top