মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পরপরই সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মধ্যে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছিল। কিন্তু হঠাৎ থেমে গেল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আমেজ। এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর মধ্যে আমেজ এর পরিবর্তনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নির্বাচনী আমেজ ছেড়ে তারা রাজপথে আন্দোলনে। গত রবিবার থেকে সিলেটের বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ এর পরিবর্তনে ক্ষোভ লক্ষ করা যায়। সারা দেশে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করা হয়েছে। গত রবিবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় চিঠি প্রদান করা হয়। এতে সিলেট জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ২টি আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষনা কিংবা চিঠি প্রদান করা হয়নি। সিলেট-২ ও ৫ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়নি। তবে এ দুটি আসন জাতীয় পার্টির জন্য রাখা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ফলে রবিবার সকাল থেকে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত সিলেট-২ আসনের দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে শুরু হয় কানাঘোষা। শেষ পর্যন্ত কি লাঙ্গল প্রতিক ও ধানের শীষের মধ্যে লড়াই হবে? সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ আসনে নৌকা প্রতিক দেয়ার দাবিতে আওয়ামী লীগের দুটি বলয়ের নেতারা গতকাল সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে হায়-হতাশ বিরাজ করছে। তারপর তারা আসা ছাড়তে নারাজ।
জানাগেছে, সিলেট-২ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী কে হচ্ছেন এনিয়ে দুই উপজেলা জুড়ে গত কয়েকদিন ধরে চলছিল সরব আলোচনা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন দলের কর্মী ও সমর্থকরা। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পেতে বেশ তৎপর ছিলেন। আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে আরও চারজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহা সচিব ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া আবারও মহাজোটের প্রার্থী হতে জোর লবিং চালান। ইতিমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন ফরম নিজ নিজ দলের কাছে জমা দিয়েছেন। গত দুইদিন ধরে মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন চৌধুরীকে ঘিরেই চলছিল নানান-হিসাব-নিকাশ। শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন মহাজোটের প্রার্থী।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করে আসছিলেন এবার এ আসনে নৌকা প্রতিক পাওয়া যাবে। আর জাতীয় পার্টি দাবি করেছিল লাঙ্গল প্রতিকে নির্বাচন হবে। এনিয়ে গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঝড়ে উঠে। গত রবিবার আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করে। এতে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়নি। ফলে জাতীয় পার্টি অনেক নিশ্চিত তারা এ আসনে লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে আবারও নির্বাচন করতে যাচ্ছেন।
এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শফিকুর রহমান চৌধুরী কিংবা যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জোর তৎপরতা শুরু করেছিলেন। তারা দুইজনই নৌকা প্রতিকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে আগ্রহ প্রকাশও করেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দেশে এসে বিশাল শোডাউন করেন। শফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচন তফসিল ঘোষনার আগ থেকে এলাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় অংশ নেন। এলাকায় তার উপস্থিতও ছিল সরব। দুটি উপজেলায় শফিক চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারী রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন ফরম জমাকালে তাদের অনুসারীরাও ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
আর তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের নমিনেশন পেতে প্রার্থীদের মধ্যে মাঠে ময়দানে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছিল। শেষ মুহুর্তে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষনা না হওয়ায় তারা অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। ফলে নির্বাচনী আমেজ তাদের মাঝে নেই বললেই চলে।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব পংকি খান বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীরা বেশ উল্লাসিত ছিলেন। কিন্তু এ আসনে এখন আমাদের নৌকার প্রতিকের কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষনা না হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ। নেতাকর্মীদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ এর পরিবর্তনে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2PYOvMb
November 27, 2018 at 08:00PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন