কুয়েত সিটি, ০৩ নভেম্বর- কুয়েতে অবস্থানরত ২ হাজার ৯০০ পাকিস্তানি, বাংলাদেশি এবং মিশরীয়কে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ নির্দেশনাকে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে কুয়েতের ইতিহাসের সবচেয়ে সিরিয়াস কেস বলে মনে করা হচ্ছে। যাদের আটকাদেশ দেয়া হয়েছে তারা সবাই অবৈধ উপায়ে কিংবা পাচার হয়ে কুয়েতে প্রবেশ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা জারি করেছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র। সরকারের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক কাজের কথা বলে তিনটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান তাদের কুয়েতে এনেছে এবং কোনো চাকরির ব্যবস্থা না করে ছেড়ে দিয়েছে। খবর আল-আনবা ডেইলির। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত কয়েক দিনের মধ্যে ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মন্ত্রণালয়। কুয়েতে চাকরির আশায় এরা সবাই ভুয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রচুর অর্থ প্রদান করেছেন। সূত্রগুলো আরো জানায়, মানব পাচার বিষয়ক প্রসিকিউটর অব ক্রাইমস ওই তিন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের ওপর সমন জারি করেন এবং পরে জামিনে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে মানব পাচারের এমন জাল বিস্তারের পেছনে এক সিরিয়ানকে মাস্টারমাইন্ড বলে মনে করা হচ্ছে। তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। অবশ্য তিনি চোদ্দ শিকের ভেতরেই আছেন। সূত্র জানায়, এই ব্যক্তিই তিনটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক শ্রমিক এনেছেন কুয়েতে। আর তাদের কোনো কাজ না দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব রেসিডেন্স অ্যাফেয়ার্স আচমকা জিব আল-শুইয়ুখ পরিদর্শন করেন। আর সেখানেই অনুসন্ধানে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। ওখান থেকে বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়। তাদের রেসিড্যান্স পারমিটে এমন প্রতিষ্ঠানের নাম স্ট্যাম্প করা ছিল যাদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় কেন তারা কাজে যোগ দিচ্ছেন না। জবাবে তারা জানান যে তাদের ভাগ্যে কোনো চাকরিই জোটেনি। তারা আরো জানান, কুয়েতে তাদের আনা হয়েছে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে। এর জন্যে তারা প্রচুর অর্থও প্রদান করেছেন। আরে চমক অপেক্ষা করছিল। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব রেসিডেন্স অ্যাফেয়ার্স বিষয়টি নিয়ে আরো ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন। দেখা যায়, ওই তিনটি কম্পানি একই উপায়ে তিন হাজারের বেশি সংখ্যক মানুষকে এনেছেন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে। পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। ক্রমেই কুয়েতে মানব পাচারের এক ভয়াল ও মর্মান্তিক চিত্র উঠে আসে। সূত্র জানায় যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মিশর থেকে এত কর্মী আনা হয়েছে। এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভিসার জন্যে দেড় হাজার থেকে তিন হাজার কুয়েতি দিনার পর্যন্ত রাখা হয়েছে। এদিকে, এ ঘটনার পেছনের হর্তাকর্তাদের খোঁজ বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন পাবলিক প্রসিকিউটর। তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এ কারণে ভিসা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পত্রিকায় এমন খবর প্রকাশের পর কুয়েতে সক্রিয় বাংলাদেশি আদম পাচারকারী রাঘব বোয়ালরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের চ্যালাদেরও। অনেকেই পালানোর ধান্ধায় আছে বলে জানান কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা। গ্রেপ্তারকৃত ৯০ জনের মধ্যে জামিনে ছাড়া পাওয়া কয়েকজন নিরীহ শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই আদম পাচারকারীরা মিথ্যা কথায় ভালো বেতনের চাকরির কথা বলে তাদের ঘর-সম্পত্তি বিক্রি করে বিদেশে আসতে বাধ্য করেছেন। তারা আশা করছেন, কুয়েত সরকার এইবার এইসব পাপীষ্ঠকে কঠোর শাস্তি দিক। আরএস/ ০৩ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2RxkEqi
November 03, 2018 at 11:57PM
04 Nov 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top