কলকাতা, ২৪ ডিসেম্বর- সাবেক স্বামীকে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে খুন করে মৃতদেহের সঙ্গে রাত কাটিয়েছিলেন ঘাতক স্ত্রী। সকালে চুপিসারে দরজা ভেজিয়ে তিনি সোজা নিজের বাড়িতে চলে যান। এরপর গোসল করে খাওয়াদাওয়া সেরে চলে গেলেন অফিসে। সারা দিন সেখানে কাজও করলেন। ঘুণাক্ষরেও কেউ জানতে পারলো না মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি এক সময়ের জীবনসঙ্গীকে খুন করে এসেছেন! গত বুধবার রাতে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার জেলার পানিহাটিতে। ৫২ বছর বয়সী প্রতুল চক্রবর্তীতে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছিলেন তার সুন্দরী স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তী। পরদিন দুপুরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় প্রতুলের মরদেহ। তার ঘরে তল্লাশি চালানোর সময় একটি লেডিস রুমাল খুঁজে পায় পুলিশ। ওই রুমালের সূত্র ধরেই খোঁজ মেলে অদিতির। এরপর তাকে আটক করার পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এ তো গেল প্রথম দিককার কথা। এবার পুলিশি জেরায় বেরিয়ে এসেছে আরো সব চাঞ্চল্যকর কাহিনী। পুলিশ বলছে, খুনের আগে প্রাক্তন স্বামী প্রতুল চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘরে বসে মদ্যপান করেছিলেন তিনি। কেননা ঘটনাস্থলে দুটি গ্লাস পাওয়া গেছে। তবে মদ খাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন অদিতি। তিনি পুলিশকে জানান, প্রতুল একাই মদ খেয়েছিলেন। মদ খাওয়ার পর অদিতির সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন। এতে বাধা দিয়েছিলেন অদিতি। বাধা পেয়ে তাকে মারতে এসেছিল প্রতুল। সেই সময় তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে নিস্তেজ করে দেন। পরে, কাপড়ের পাড় গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পুলিসকে অদিতি আরো জানায়, ডিভোর্সের পর তৃতীয়বার বিয়ের জন্য পাত্র বাছাই করছিলেন অদিতি। তাতে বাধ সাধেন প্রতুল চক্রবর্তী। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার অদিতির সঙ্গে বাক বিতণ্ডা হয় প্রতুল বাবুর। সব কিছু ভুলে প্রতুল চক্রবর্তী আবার সংসার পাততে চেয়েছিলেন অদিতির সাথে। কিন্তু অদিতি তাতে রাজি হননি। আর এ কারণেই পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করেন অদিতি। তবে প্রতুলবাবুর দুটি মোবাইলের এখনও কোন হদিশ পায়নি পুলিস। মোবাইল দুটি পেলেই খুনের সব মোটিভ সব পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। শনিবার জেরায় মুখে অদিতি জানিয়েছিলেন, প্রতুলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি মোবাইল তিনি খড়দহ খালে ফেলে দিয়েছিলেন। যদিও পরে পুলিস তাকে জেরা করে জানতে পারে, প্রাক্তন স্বামীর একটি মোবাইল তার কাছে রয়েছে। এছাড়া তার কাছে আরও একটি মোবাইল রয়েছে। এই মোবাইল থেকে তিনি প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। কললিস্ট দেখে সেই তথ্য পুলিসের হাতে এসেছে। অদিতি পুলিসকে আরও জানিয়েছেন, খুনের পর ভোরের দিকে সোদপুর বিটি রোড হয়ে তিনি কাশীপুরে বাড়ি ফেরেন। পরে, অফিস যাওয়ার আগে সুযোগ বুঝে প্রাক্তন স্বামী ও নিজের দুটি মোবাইল তিনি একজনকে বিক্রি করার জন্য দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই খড়দহ থানার পুলিস ওই ব্যক্তির কাছে থেকে ওই দুটি মোবাইলই বাজেয়াপ্ত করেছে। যদিও প্রতুলের আইফোন তিনি ফেলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আদৌ সেই ফোন তিনি খালে ফেলেছিলেন, না পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তা পুলিস খতিয়ে দেখছে। তবে, আই ফোনের মধ্যে কী এমন তথ্য ছিল যা পুলিসের হাতে এলে অদিতির বিপদ হওয়ার আশঙ্কা ছিল পুলিস তা জানার চেষ্টা করছে। এদিকে প্রতুলের মৃতদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হলেও তার দেহ সৎকারের জন্য এখনও পুলিশের কাছে কেউ আসেননি। পুলিসও তার বাড়ির লোকের কোনও হদিশ পায়নি। সূত্র: বর্তমান আর/০৮:১৪/২৪ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2AongRx
December 25, 2018 at 02:48AM
24 Dec 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top