কুয়ালালামপুর, ০৬ জানুয়ারি- মালয়েশিয়ায় গত এক বছরে ৭৮৪ বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৮৪ বাংলাদেশি। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে, সড়ক দুর্ঘটনা ও নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে এসব শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। তন্মধ্যে স্ট্রোক করে বেশিরভাগ প্রবাসী মারা গেছেন বলে এক হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃতের পরিসংখ্যানের তালিকায় প্রথমে আছে সৌদি আরব। দ্বিতীয় অবস্থানেই মালয়েশিয়ার অবস্থান বলে জানিয়েছে দূতাবাস সূত্র। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েতের অবস্থান। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি সংগঠন জানায়, গত চার বছরে যত প্রবাসীর লাশ এসেছে, তাদের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে। তাই মানসিক চাপ কমাতে অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রবাসী শ্রমিকদের মানসিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা তৈরি করার ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, শুধু যে স্ট্রোকের কারণে প্রবাসীরা মারা যায় তা নয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ও সড়ক দুর্ঘটনাও রয়েছে। মৃতদের লাশ বাংলাদেশে পাঠানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসীদের লাশ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি ও জনহিতৈশীদের সহযোগিতায়ও লাশ দেশে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি। লাশ দাফনের জন্য মৃত ব্যক্তিদের পরিবার বিমানবন্দরে ৩৫ হাজার টাকা এবং পরে যারা বৈধভাবে কোম্পানিতে কাজ করেছেন তারা তিন লাখ টাকা আর্থিক অনুদান পায় বলে তথ্য দেন এ কর্মকর্তা। যে অবৈধ প্রবাসী কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করেন তাদের বেলায় কোম্পানির মালিকের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায়ে দূতাবাস সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকে বলে জানান তিনি। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কসূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে দুই হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে দুই হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে দুই হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে দুই হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে দুই হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে তিন হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে ফিরেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে এসেছে ১০০৮, কুয়েত থেকে ২০১, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২২৮, বাহরাইন থেকে ৮৭, ওমান থেকে ২৭৬, জর্ডান থেকে ২৬, কাতার থেকে ১১০, লেবানন থেকে ৪০ সহ মোট তিন হাজার ৫৭ জনের লাশ দেশে ফিরেছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়া থেকে এক বছরে এসেছে ৭৮৪ জনের লাশ। সূত্র: যুগান্তর এইচ/১৭:৪৪/০৬ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2C7BJRx
January 06, 2019 at 11:44PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top