কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি- পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বিজেপি বিরোধী ফেডারেল ফ্রন্টের লক্ষ্যে ব্রিগেডর ময়দানে হলো ঐতিহাসিক সমাবেশ। মমতার ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে শনিবার ভোর থেকে কলকাতা হয়ে ওঠে ব্রিগেডমুখি। জনজোয়ারে ভাসতে শুরু করে শহর কলকাতা। লাখে লাখে মানুষ শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে নেমে ব্রিগেডের পথে পায়ে পা মেলান। ওই সমাবেশ থেকে বিজেপির কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুর ১ টা থেকে শুরু হয় ব্রিগেডের মঞ্চে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা। ব্রিগেডের এই মঞ্চ থেকেই নতুন নাম উচ্চারিত হলো ভারতীয় রাজনীতিতে। ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। এর আগে ভারতে ইউপিএ, এনডিএ জোট হয়েছে। এবারে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। এখানে কোন ও রাজনৈতিক পক্ষের রঙ নেই। বাম-দক্ষিণে ভাগাভাগি নেই। এই জোটের একটাই মন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভারত। মমতার ডাকে ব্রিগেডের এদিনের মঞ্চে এসে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির সাবেক নেতা এইচডি দেবগৌড়া জানান, ভারতের সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে জোট বাঁধতে চাইছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। মমতার সঙ্গে আমরা রয়েছি। আগামী দিনে ভারতে স্থায়ী সরকার তৈরি হবে। তবে ফেডারেল ফ্রন্টের তরফে আগামী দিনে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তার উত্তরে দেবগৌড়া বলেন, আগে বিজেপিকে পরাজিত করতে হবে। তারপর ভাবা যাবে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন। ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শারদ পাওয়ার বলেন, বিজেপি জনবিরোধী। তাই জোট বেঁধে বিজেপির বিরুদ্ধে নামতে হবে। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, মমতা দিদির ডাকে সাড়া না দিয়ে পারলাম না। সমস্ত আঞ্চলিক দলের নেতারা ব্রিগেডে আসছেন। আগামী দিনে বিজেপির বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ লড়াই হবে। ভারতের অরুনাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং বিজেপি থেকে ইস্তাফা দিয়ে সামিল হয়েছেন মমতার এই ব্রিগেডে। তিনি বলেন, আলাদা দল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিজেপিকে হঠানোর লড়াইয়ে নামবো। ভারতের টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নাইডু বলেন, আজকের দিনটা ভারতীয় রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপুর্ন দিন। বিজেপি দেশের বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যার্থ হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির অপব্যাবহার করেছে। সেই কারনে সমস্ত বিরোধী দলগুলি দেশের স্বার্থে এক হয়েছে। ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশানাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরোধীরা একজোট হয়েছে। ভারতকে মজবুত করার বার্তা দেওয়া হবে এদিনের ব্রিগেড মঞ্চ থেকে। বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করার যে চেষ্টা চালাচ্ছে তার বিরোধীতা করতে হবে। আমরা ভারতের সংবিধানকে রক্ষা করতে চাই। সারা ভারতে আগুল লেগে গেছে। সেই আগুনকে নেভানোর জন্য এমন কাউকে চাই, যে বিরোধীদের একজোট করতে পারে। এজন্য বিরোধীরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একজোট হয়েছে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেন, রামধনুর সাত রঙের মতোই আজ সব রঙ একসঙ্গে। রামধনুর মতোই সবার এক জোট। আর নয় মোদি সরকার। এই সরকারের মধ্যে প্রবল প্রতিশোধস্পৃহা। ভোট ভাগাভাগি বন্ধ করলেই বিজেপির পরাজয়। বিজেপির সাবেক নেতা যশবন্ত সিনহা বলেন, আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি একজনকে সরানোর জন্য। গত ৫৬ মাসে ভারতের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের আর্থিক অবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত। এই সরকারকে দেশকে বিভক্ত করতে চায়। তাই এই সরকারের পতন দরকার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদি ভোটে জিতেছেন। ভারতের সর্বনাশ করছেন মোদি। গণতন্ত্রের উপর বারবার হামলা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে। সংবিধানকে খর্ব করার চেষ্টা চলছে। এই গুন্ডাদের দেশ থেকে ভাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি আসলে হিটলারের মতো। হিটলার জার্মানিতে যা করেছিলেন, মোদি এবং অমিত শাহের জুটি ভারতে সেটাই করার চেষ্টা করছে। অখিলেশ যাদব বলেন, বাংলা থেকে যা শুরু হয়েছে তা গোটা ভারত দেখবে। দেশবাসী মোদিকে হঠাতে তৈরি। ভারতে নতুন প্রধানমন্ত্রী আসবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবেন মানুষ। কুমারস্বামী বলেন, মমতা দেশের রোল মডেল। বরোধীদের মিলিয়েছেন মমতাদি। অসাংবিধানিক সরকার চলছে ভারতে। দেশে অগনতন্ত্রের সরকার চলছে। এই সরকারকে দেশবাসী আর চান না। এমএ/ ০৯:২২/ ১৯ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2FC3N3R
January 20, 2019 at 03:20AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন