যোধপুর, ১২ জানুযারিঃ এক যুগ পর অবশেষে অপেক্ষার অবসান হল। ভারতের নাগরিকত্ব পেলেন প্রবীণতম পাক হিন্দু ১০১ বছরের যমুনা মাই। গত ১২ বছর ধরে তিনি রাজস্থানের যোধপুরের সোধা রি ধানি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আর এভাবেই যমুনা গড়ে ফেললেন অনন্য এক রেকর্ড। পুরুষ-নারী ভেদে তিনি হলেন প্রবীণতম ব্যক্তি যিনি ভারতের নাগরিকত্ব অর্জন করলেন।যোধপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক জওহর চৌধুরি জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় যমুনা মাইয়ের হাতে তাঁর নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। ১২ বছর পর নাগরিকত্ব পাওয়ায় যমুনা মাইয়ের ছোট্ট বাড়িটিতে আনন্দের জোয়ার। এখন যমুনা মাই একটিই অনুরোধ, তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও যেন ভারতীয় নাগরিকত্ব পায়।
প্রশাসনিক রেকর্ড অনুসারে, মেঘওয়াল সম্প্রদায়ভুক্ত যমুনা মাইয়ের জন্ম হয়েছিল অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশে। দেশভাগের পর তাঁর পৈতক ভিটেটি পড়ে পাকিস্তানে। সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী যমুনার পরিবার ভূমিহীন কৃষক হিসাবে অন্যের জমিতে অমানুষিক পরিশ্রম করে কোনোক্রমে দিন গুজরান করত। কিন্তু ১৯৯২ সালে এদেশে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রভাব সীমান্ত পেরিযে পাকিস্তানের হিন্দুদের উপরেও পড়ে। যমুনা মাইয়ের ছেলে আত্মারামের কথায, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর সেখানে থাকা অসহনীয় হযে ওঠে। রাতারাতি প্রতিবেশী এবং জমির মুসলিম মালিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বদলে যায। ২০০০ সালেই আমরা পাকিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই এবং ২০০৬ সালে পাকিস্তানকে চিরবিদায় জানিয়ে পরিবারের ১৫ জন সদস্যই ভারতে চলে আসি। যদিও ভারত তাদের সহজে মেনে নেয়নি। পাকিস্তান থেকে আসায় যমুনা মাই ও তাঁর পরিবারকে প্রশাসনিক স্তরে অজস্র প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই জোগাড় করতেও কম খেসারত দিতে হয়নি। তবু সুদিনের আশায দাঁতে দাঁত চেপে পড়েছিলেন তাঁরা। দীর্ঘ লড়াইযে পর অবশেষে যমুনা মাই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ায় সেই লড়াই সার্থক হয়েছে বলে জানিয়েছন আত্মারাম। এখন তাঁদের একটিই লক্ষ্য, বাকিরাও যাতে এদেশের নাগরিকত্ব পায়।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://bit.ly/2spR7EC
January 13, 2019 at 10:33AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন