ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি- মোস্তাফিজুর রহমানের কাছেই হেরে গেল চিটাগং ভাইকিংস। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ১৯৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২ উইকেটে ১৩৬ রান করা চিটাগং জয়ের পথেই ছিল। কিন্তু শেষ দিকে মোস্তাফিজের আগুনঝরা বোলিংয়ে জয়ের স্বপ্ন ভেস্তে যায় মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চিটাগং ভাইকিংসের। জয়ের জন্য ইনিংসের শেষ দিকে চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ৩০ বলে ৪৪ রান। ১৬তম ওভারে ১২ রান খরচ করে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের উইকেট তুলে নেন মিরাজ। ঠিক পরের ওভারে রায়ান টেন ডেসকাটকে এক ছয় এবং দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৭ রান আদায় করে জয়ের স্বপ্ন দেখান সিকান্দার রাজা। শেষ ১৮ বলে চিটাগংয়ের প্রয়োজন ২৭ রান। ১৮তম ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বি ৮ রান খরচ করে নজিবুল্লাহ জাদরানের উইকেট তুলে নেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ওভারের প্রথম বলে ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে আউট করেন মোস্তাফিজ। পরের তিন বলে চার রান আদায় করে নেয় চিটাগং। ওভারের পঞ্চম বলে রবিউল হককে বোল্ড করেন মোস্তাফিজ। শেষ বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেনি চিটাগং। মোস্তাফিজ নৈপুণ্যে ৭ রানের জয় পায় রাজশাহী কিংস। ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৯৯ রানের র্টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ব্যাটিং তাণ্ডব চালান মোহাম্মদ শেহজাদ। চিটাগং ভাইকিংসের এই আফগান ওপেনার একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন। দলীয় ৩১ রানে ৮ বলে ৭ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন অন্য ওপেনার ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ডেলপোর্টের বিদায়ের পরও ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন শেহজাদ। প্রথম ৯ বলে তিন ছক্কা ও এক চারের সাহায্যে ২৪ রান করা এই ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ বলে পাঁচটি ছয় এবং তিন চারের সাহায্যে ৪৯ রান করেন শেহজাদ। তার বিদায়ের পর চলতি বিপিএলে দুর্দান্ত খেলে যাওয়া ইয়াসির আলী দলের হাল ধরেন। চিটাগং ভাইকিংসের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান এদিনও রানের বন্যা বইয়ে দেন। ৩২ বলে ফিফটি তুলে নেন ইয়াসির। চলতি বিপিএলে এটা তার তৃতীয় ফিফটি। দেশিয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ৭ ম্যাচে ২৫৩ রান নিয়ে টপ থ্রিতে আছেন ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। শনিবার আরাফাত সানির স্পিনে বিভ্রান্ত হওয়ার আগে ৩৮ বলে সাত চার ও দুই ছক্কায় ৫৮ রান করেন ইয়াসির। দলীয় ১৩৬ রানে ইয়াসিরের বিদায়ের পর ৬ রানের ব্যবধানে আউট হন মুশফিকুর রহিম। রাজশাহী কিংস ১৯৮/৫ জনসন চার্লসের ফিফটি, রায়ান টেন ডেসকাট ও ক্রিশ্চিয়ান জনকারের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটে ১৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে রাজশাহী কিংস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন চার্লস। ১৭ বলে ৩৭ করেন জনকার। ১২ বলে ২৭ রান করেন রায়ান টেন। শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩২তম ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে রাজশাহী কিংস। উদ্বোধনীতে জনসন চার্লসের সঙ্গে ৬ ওভারে ৫০ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার।খালিদ আহমেদের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেয়ার আগে ২০ বলে ২৬ রান করেন সৌম্য। চলতি বিপিএলে রানখরায় ভুগছেন জাতীয় দলের এই ওপেনার। রাজশাহীর হয়ে আগের ৬ ম্যাচে (৪, ১১*, ০, ১৮, ২ ও ৩) সবমিলে ৩৮ রান করেন সৌম্য। বিপিএলে ৪৯ ম্যাচ খেলে ১৩.৬৯ গড়ে এক ফিফটিতে ৫৮৯ রান করেন সৌম্য সরকার। চলতি বিপিএলে রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলতে নেমেই ফিফটি করেন জনসন চার্লস। সৌম্য সরকার ও লরি ইভান্সের সঙ্গে ৫০ ও ৭০ রানের জুটি গড়া চার্লস ৪০ বলে করেন ফিফটি। এরপর তিন বলের ব্যবধানে আবু জায়েদ রাহীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন রাজশাহী কিংসের এই ক্যারিবিয়ান ওপেনার। তার আগে ৪৩ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৫৫ রান করেন চার্লস। চলতি বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি করা ইভান্স, খালিদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৯ বলে চারটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৬ রান করেন। ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন রায়ান টেন ডেসকাট ও ক্রিশ্চিয়ান জনকার। মাত্র ১২ বলে চারটি ছক্কার সাহায্যে ২৮ রান করেন রায়ান টেন। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে তিন ছক্কা ও এক চারের সাহায্যে ৩৭ রান করেন জনকার। সংক্ষিপ্ত স্কোর রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৯৮/৫ (চার্লস ৫৫, জনকার ৩৭, ইভান্স ৩৬, রায়ান টেন ২৭, সৌম্য ২৬; খালিদ ২/৩২)। চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৯১/৮ (ইয়াসির ৫৮, শেহজাদ ৪৯, সিকান্দার ২৯; মোস্তাফিজ ৩/২৮)। ফল: রাজশাহী কিংস ৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: মোস্তাফিজুর রহমান (রাজশাহী কিংস)। এমএ/ ১১:৪৪/ ২৬ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2TeC7oJ
January 27, 2019 at 05:54AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন