কুয়ালালামপুর, ০৬ জানুয়ারি-প্রবাসে বাড়ছে বাংলাদেশিদের মৃতের সংখ্যা। প্রতিদিনই প্রবাসীদের মরদেহ আসছে বাংলাদেশে। মালেয়শিয়া দূতাবাস সূত্রের খবর, মালয়েশিয়ায় গত এক বছরে ৭৮৪ বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃতের পরিসংখ্যানের তালিকায় প্রথমে আছে সৌদি আরব। দ্বিতীয় অবস্থানেই মালয়েশিয়ার অবস্থান বলে জানিয়েছে দূতাবাস সূত্র। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েতের অবস্থান। গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে গেছে ২০১৮ সালে। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এ হিসাব পাওয়া গেছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে, সড়ক দুর্ঘটনা ও নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে এসব শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। তন্মধ্যে স্ট্রোক করে বেশিরভাগ প্রবাসী মারা গেছেন বলে এক হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি সংগঠন জানায়, গত চার বছরে যত প্রবাসীর লাশ এসেছে, তাদের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে। স্ট্রোকজনিত কারণে প্রবাসীদের অকালমৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনে ১২-১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং ধার করে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপ তাদের মৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো এমনটিই জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছেন শরীয়তপুরের শাহ আলম হাওলাদার জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিবাসী কর্মীরা ঋণ নিয়ে বিদেশে যায়। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার পর যে বেতনের কথা তাদের বলা হয়, তা তারা পায় না। এ ঋণের বড় বোঝার চাপ মানসিক চাপের সঙ্গে হাড়ভাঙা পরিশ্রম যোগ হয়। এভাবে শারীরিক ও মানসিক চাপে হার্টঅ্যাটাক করে মারা যান অনেক প্রবাসী শ্রমিক। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেই বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। বিদেশ গমনের জন্য নির্ধারিত খরচের পরিমাণ কমালে বা সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে সহায়তা করলে টেনশনে এমন মৃত্যুর হার কমবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি মনে করি, অভিবাসনের যে খরচ সেটি না থাকলে তাদের মধ্যে এই টেনশন কাজ করবে না। খরচ তুলে আনার বিষয়ে যে অস্থিরতা তাদের মধ্যে কাজ করে এটি আর থাকবে না। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কসূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে দুই হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে দুই হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে দুই হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে দুই হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে দুই হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে তিন হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে ফিরেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে এসেছে ১০০৮, কুয়েত থেকে ২০১, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২২৮, বাহরাইন থেকে ৮৭, ওমান থেকে ২৭৬, জর্ডান থেকে ২৬, কাতার থেকে ১১০, লেবানন থেকে ৪০ সহ মোট তিন হাজার ৫৭ জনের লাশ দেশে ফিরেছে। সূত্র: যুগান্তর এইচ/১৭:৫৬/০৬ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2C3YpCi
January 06, 2019 at 11:57PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন