ঢাকা, ১১ জানুয়ারি- ১৮৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। রাইলি রুশো ও মোহাম্মদ মিথুনের ব্যাটে সেই চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে টপকে যাচ্ছিল রংপুর রাইডার্স। পথিমধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন আলিস আল ইসলাম। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে রাইডার্সদের হার মানতে বাধ্য করলেন তিনি। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে সাকিব ব্রিগেডের বিপক্ষে ২ রানে হেরে গেল মাশরাফি বাহিনী। জবাবে মন্থর শুরু করে রংপুর। দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেন ক্রিস গেইল। এতেই বাধে যত বিপত্তি। শুভাগত হোমের দ্বিতীয় বলেই খেই হারান তিনি। বল পায়ে লাগলে আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ক্যারিবীয় দানব। লাইফ পেয়েই চওড়া হন গেইল। পরের বলই তুলে মারেন। বল উড়ে চলে যাচ্ছিল লং অনের ওপর দিয়ে। একেবারে সীমানার ওপরে তা তালুবন্দির চেষ্টা করেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ পর্যন্ত না পেরে অসামান্য দক্ষতায় বল থ্রো করেন বাউন্ডারির মধ্যে। ক্ষীপ্রগতিতে দৌড়ে এসে সেটি লুফে নেন কাইরন পোলার্ড। পরে বারবার রিপ্লে দেখা হয় ক্যাচটি। শেষ পর্যন্ত প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হিটার। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই সাজঘরে ফেরেন মেহেদী মারুফ। শুরুতেই গেইল আর মারুফকে হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর। মোহাম্মদ মিথুনকে নিয়ে ধীরে ধীরে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠেন রাইলি রুশো। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন গড়ে ওঠে। উভয়ই ছোটাতে থাকেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। তাদের ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে মাশরাফি বাহিনী। মিথুন ধীরে-লয়ে চললেও ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে সাকিব-পোলার্ডদের কচুকাটা করেন রুশো। রীতিমতো তাদের ওপর ছড়ি ঘোরান তিনি। তবে হঠাৎই ছন্দ হারান এ আফ্রিকান। আলিস আল ইসলামের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে মাত্র ৪৪ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন ইনফর্ম এ ব্যাটার। অল্পক্ষণ পর সাকিবের শিকার হয়ে ফেরেন রবি বোপারা। টপঅর্ডাররা সবাই ফিরলেও একপ্রান্তে থাকেন মিথুন। তখন পর্যন্ত জয়ের পথে ছিল রংপুর। এ পরিস্থিতিতে আলিসের শিকার হয়ে তিনি ফিরলে জয়ের আশা ফিকে হয়ে যায়। ফেরার আগে ৩৫ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ৪৯ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন এ মিডলঅর্ডার। বাকি সময়ে চলেছে আলিস শো। পরের দুই বলে মাশরাফি আর ফরহাদকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ প্রতিপক্ষের লাগাম টেনে ধরেন আলিস। পরক্ষণেই গাজী ও হাওয়েলকে ফিরিয়ে মাশরাফিদের গলা চেপে ধরেন নারাইন। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ২ রানের দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় ঢাকা। এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ঢাকা ডায়নামাইটস। তবে শুরুটা শুভ হয়নি ঢাকার। সূচনালগ্নেই অশুভ ভূত ঘাড়ে চেপে বসে তাদের। অযাচিত শট খেলে আসেন আর যান টপঅর্ডাররা। ইনিংসের ভূমিকাতেই সোহাগ গাজীর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ইনফর্ম হযরতউল্লাহ জাজাই। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে পয়েন্টে মাশরাফির বলে বোপারাকে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন সুনিল নারাইন। এর রেশ না কাটতেই গাজীর দ্বিতীয় শিকার বনেন রনি তালুকদার। তবে এতে বোলারের যতটা না কৃতিত্ব, তার চেয়ে বেশি ফিল্ডারের। বেনি হাওয়েলের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তিনি। পরে মিজানুর রহমানকে নিয়ে উদ্ভূত চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। তবে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দিতে পারেননি মিজানুর। বেনি হাওয়েলের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি। ৬৪ রানের মধ্যে জাজাই, নারাইন, রনি, মিজানুরকে হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে ঢাকা। কাইরন পোলার্ডকে নিয়ে সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সাকিব। এক্ষেত্রে সফল হন এ জুটি। রংপুর বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালান পোলার্ড। রীতিমতো তুলোধোনা করেন তিনি। পথিমধ্যে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন ক্যারিবীয় হিটার। অবশ্য ফিফটির পর বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। মাত্র ২৬ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬২ রান করেন এ ব্যাটিং অলরাউন্ডার। একে একে সবাই ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন সাকিব। ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন আন্দ্রে রাসেল। তাতে দুরন্ত গতিতে ছোটে ঢাকা। হঠাৎই থেমে যান অধিনায়ক। ফরহাদ রেজাকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ফিনিশ হন তিনি। ফেরার আগে ৩৭ বলে ৪ চারে ৩৬ রান করেন সাকিব। খানিক পর থামে রাসেল টর্নেডো। ১৩ বলে ৩ ছক্কায় ২৩ রান করে ফেরেন তিনি। এর জের না কাটতেই শফিউলের শিকার হয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন শুভাগত হোম ও নুরুল হাসান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেটে ১৮৩ রান করে ঢাকা। রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শফিউল। ২টি করে উইকেট নেন হাওয়েল ও গাজী। সূত্র:যুগান্তর এইচ/১৮:১০/১১ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2AJ0MKZ
January 12, 2019 at 12:12AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top