কলকাতা, ১৫ ফেব্রুয়ারি- কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি এবার রাজ্য মহিলা কমিশন পর্যন্ত গড়াল। শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন রত্নাদেবী। যার জেরে আজ শুক্রবার বৈশাখীদেবীকে হাজির হতে অনুরোধ করেছে কমিশন। অন্যদিকে রত্নাদেবীর চিঠির পালটা উত্তর কমিশনকে দিয়েছেন প্রাক্তন মেয়র। ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই চিঠি কমিশনের দপ্তরে জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে রত্নাদেবীর তোলা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে বৈশাখীর পাশেই দাঁড়িয়েছেন শোভন। কিন্তু কমিশনের দরবারে রত্নাদেবী ঠিক কী অভিযোগ পেশ করেছেন? রত্নাদেবীর অভিযোগের তির মূলত বৈশাখীর দিকে। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে শোভনবাবুর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এরপর বাইশ বছর সব ঠিকঠাকই চলেছে। সমস্যার সূত্রপাত ২০১৭-র আগস্টে। তখনই তাঁদের মাঝে আবির্ভূত হন বৈশাখী, যিনি কিনা বারবার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেন বলে রত্নাদেবীর অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, বৈশাখী চেষ্টা করেছেন স্ত্রীর সঙ্গে শোভনবাবুর মানসিক দূরত্ব তৈরি করতে। এবং তারই পরিণামে শোভনবাবু বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে আমার স্বামীর শুভাকাঙ্ক্ষী বলে দাবি করেন, চিঠিতে লিখেছেন রত্নাদেবী। এখানেই শেষ নয়। রত্নাদেবীর অভিযোগ, বৈশাখী শোভনবাবুকে নিজের ছেলে-মেয়ের সঙ্গে পর্যন্ত দেখা করতে দেন না। যে কারণে তাঁদের মেয়ে সুহানি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাকে নিয়মিত মনোবিদ দেখাতে হচ্ছে। প্রমাণস্বরূপ মেয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি প্রেসক্রিপশনও চিঠির সঙ্গে জমা দিয়েছেন রত্নাদেবী। অন্যদিকে রত্নাদেবীর তোলা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কমিশনে পালটা চিঠি দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। লিখেছেন, ভাবতে অবাক লাগছে, রত্নাদেবী এক জন মহিলা হয়ে আর এক মহিলার ভাবমূর্তিকে প্রতি পদে খর্ব করার চেষ্টা করছেন! শোভনবাবুর দাবি, কারও চাপে বাধ্য হয়ে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদ চাননি। মানসিক নির্যাতন, আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েই তিনি বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছেন, এখানে বৈশাখীর কোনও ভূমিকা নেই। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাবমূর্তি খর্ব করার চেষ্টা করেছেন বলে রত্নাদেবীর যে অভিযোগ, সে প্রসঙ্গে চিঠিতে শোভনবাবুর প্রতিক্রিয়া, এটা একেবারেই মিথ্যে। বরং রত্নাদেবীর বাবা দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ই বৈশাখী সম্পর্কে প্রকাশ্যে কুকথা বলেছেন। যা বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছে। মেয়ের অসুস্থতা প্রসঙ্গে শোভনবাবু কমিশনকে জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী যদি সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এতটাই ভাবিত হয়ে থাকেন, তাহলে সন্তানদের নিয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি ঘেরাও করতে আসতেন না। স্বামী-স্ত্রীর বিবাদে সন্তানদের পক্ষ করতেন না। সন্তানদের আমি আমার সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারাই রাজি নয়।লিখেছেন প্রাক্তন মেয়র। পাশাপাশি শোভনবাবুর দাবি, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় একজন অধ্যাপিকা। সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব। তিনি রত্নাদেবীর ভাবমূর্তি খর্ব করেননি। উলটে রত্নাদেবীর আচরণে বারবার বৈশাখীরই ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয়েছে। কমিশনকে শোভনবাবু জানিয়েছেন, পরিবারের যাঁদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখতে চান, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। রত্নাদেবীর এই চিঠি প্রসঙ্গে বৈশাখী দেবী অবশ্য বলেন, মহিলা কমিশন আমাকে তাদের দপ্তরে গিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু আমি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। রত্নাদেবী মনের মাধুরি মিশিয়ে যে চিঠি লিখেছেন তার যোগ্য উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছেন শোভনবাবু। সবশেষে কমিশনের দিকে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন শোভনবাবু। জানতে চেয়েছেন, কোনও কিছু খতিয়ে না দেখেই কীভাবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বকে তলব পাঠাল কমিশন? মহিলা কমিশনকে খাপ পঞ্চায়েত মনে করে কেউ এমনটা করলে আমার মতো একজন প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি চুপ থাকতে পারে না।-চিঠিতে লিখেছেন শোভন।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Ebr9LH
February 15, 2019 at 11:39PM
15 Feb 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top