একটি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি চালায় সেখানকার প্রযোজক। সিনেমা নির্মাণ না হলে তো নায়ক-নায়িকাদেরও খোঁজ থাকতো না। বলিউডে এ সময়ে যারা নামজাদা প্রযোজক ও তাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। তাঁদের গল্প শোনানো হলো আজ: রনি স্ক্রুওয়ালা ও ইউটিভি: ১৯৯৬ সালে ইউটিভি প্রডাকশন হাউজ শুরু করলেন রনি স্ক্রুওয়ালা ও তার স্ত্রী জেরিনা স্ক্রুওয়ালা। শুরুতে শুধু সিনেমার প্রচারণাতেই ব্যস্ত ছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু একটা সময়ে প্রযোজনার খাতায় নাম লেখান। ১৯৯৭ সালে প্রথম সিনেমা দিল কো ঝারোকা মো প্রযোজনা করলেন। তারকা বলতে ছিলেন মনীষা কৈরালা। তবে দ্বিতীয় ছবিতেই চমক দিলেন। নির্মাণ করলেন ফিজা। কারিশমা কাপুর, হৃত্বিক রোশান, জয়া বচ্চন অভিনীত ছবিটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। এরপর প্রতিষ্ঠানটি একে একে নির্মাণ করে ,চলতে চলতে, লক্ষ্য, স্বদেশ, ডি, রং দে বসন্তি, ফ্যাশন- এর মত বহু প্রশংসিত সিনেমা। ইউটিভিরই অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইউটিভি স্পট বয়। তারাও ২০ টির অধিক সিনেমা নির্মাণ করেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বহু ব্যবসাসফল ছবির ডিস্ট্রিবিউটরও। ২৪ বছর প্রতিষ্ঠানটি একহাতে চালিয়েছেন। এরপর তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের পদ থেকে সরে যান। তিনি অন্য ব্যবসায় মন দেন। কিন্তু রনি এখনো নিয়মিত সিনেমা প্রযোজনা করছেন। গত বছর ৫ টি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন তিনি। এ বছরে প্রথম হিট উড়ি: দ্যা সার্জিকাল স্ট্রাইক, সামনে আসছে সঞ্চারিয়া, দ্যা স্কাই ইজ পিংক, ওয়াইল্ড, রোশনি অর অলক সিনেমাগুলো। টেলিভিশনের জন্য নিয়মিত সিরিয়াল নির্মাণ করে এই প্রতিষ্ঠানটি। এমন এক মিডিয়া হাউস যা বহু বছর ধরে টিভি কনটেন্ট, গেমস ব্রডকাস্টিং চ্যানেল, মুভি স্টুডিও চালিয়ে গিয়েছে। বলিউডের এ সময়ের সবচেয়ে ক্ষমতা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বলা হয় ইউটিভিকে। প্রতিষ্ঠানটির আরেক পরিচিত মুখ সিদ্ধার্থ রয় কাপুর। কম্পানির সিইও ও বহু সিনেমার প্রযোজক তিনি। বিদ্যা বালানের স্বামী বললে আরেকটু বেশি পরিচিত লাগে। ইরোস ইন্টার ন্যাশনাল ও অর্জন লুল্লা: ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির জন্ম। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অর্জন লুল্লা এবং কিশোর লুল্লা। ১৯৭৮ সালে ঘর সিনেমার মাধ্যমে সিনেমা প্রযোজনার যাত্রা শুরু। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বলিউড ছাড়াও. তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কলকাতাসহ ভারতের প্রায় সকল ইন্ডাস্ট্রির জন্য সিনেমা নির্মাণ করে। অর্জন গত বছরের ডিসেম্বরে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তিনি জীবিত থাকা অবস্থাতেই তার ছেলে সুনীল লুল্লা সিনেমা প্রযোজনায় নাম লেখান। এখন পর্যন্ত ৩৪ টি সিনেমা তিনিও প্রযোজনা করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা বজরাঙ্গি ভাইজান। মি. ইন্ডিয়া, পার্টনার, গান্ধী মাই ফাদারর মত অসংখ্য সিনেমা নির্মাণ করেছেন তারা। তবে ডিস্ট্রিবিউশন ও কো প্রডিউসার হিসেবে তাদের খ্যাতিটা একটু বেশি। যশ রাজ ফিল্মস ও আদিত্য চোপড়া: যশ রাজ চোপড়ার হাত ধরে ১০৭০ সালে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। ইয়াশ চোপড়া তার বড় ভাই বিআর চোপড়ার সঙ্গে সহকারী ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান বিআর ফিল্মস থেকে সিনেমাও নির্মাণ করেছেন। ১৯৭৩ সালে দাগ: পয়েম অব লাভ সিনেমার মাধ্যমে যাত্রা শুরু। প্রথম সিনেমাটি যশ চোপড়া নিজেই পরিচালনা করেন। সিনেমাটিতে রাজেশ খান্নার সঙ্গে ছিলেন রাখি ও শর্মিলা ঠাকুর। এরপরের সিনেমাটি ছিল এর চেয়েও বড় সারপ্রাইজ। একই সিনেমায় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে আছেন রাখি, ওয়াহিদা রহমান, শশী কাপুর, ঋষি কাপুর, নিতু সিংরা। লম্বা সময় ধরে যশ রাজ ফিল্মস বলিউডে রাজত্ব করেছে। বলিউড ইতিহাসের বড় বাজেটের সিনেমাগুলো এই প্রতিষ্ঠান থেকেই মুক্তি পেয়েছে। ২০১৮ সালটা ভালো যায়নি প্রতিষ্ঠানটির। কারণ, থাগস অব হিন্দুস্থানের মত ডিজাস্টার সিনেমা তাদের খাতায় যোগ হয়েছে। এছাড়া সই দাগা হিচকিও তেমন ব্যাবসা করতে পারেনি। এ বছর সিদ্ধার্থ আনন্দের হৃত্বিক ও টাইগারকে নিয়ে নাম প্রকাশ না করা সিনেমাসহ মারদানি ২ , সন্দীপ অর পিংকি ফারার সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। আগামী বছরের প্ল্যানে আছে শমসেরার মত সিনেমা। অনেকে বলে শাহরুখ খানের উথান এ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। কারণ, শাহরুখের সব ব্যবসাসফল সিনেমা এই প্রতিষ্ঠানই নির্মাণ করে। করণ জোহর এবং ধর্মা প্রডাকশন: এ সময়ের অন্যতম সাকসেসফুল প্রডাকশন হাউজ। এ প্রজন্মের কাছে পরিচিত মুখ করণ জোহর। প্রযোজকের চেয়ে তিনি পরিচালক হিসেবেই নাম কুড়িয়েছেন। তবে তাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি কিন্তু বেশ পুরনো। তার বাবা যশ জোহরের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে রাজ খোসলার,দস্তানা সিনেমার মাধ্যমে। অমিতাভ বচ্চন, শত্রুঘ্ন সিনহার, জিনাত আমানের সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৮০ সালে। ২০০৪ সালে যশ জোহরের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই মূলত করণ সিনেমা পরিচালনার পাশাপাশি প্রযোজনাতেও মন দেন। নিজের পরিচালনার সিনেমা ছাড়াও অসংখ্য ব্যবসা সফল সিনেমা তিনি প্রযোজনা করেছেন। মহেশ ভাট ও মুকেশ ভাট এবং ভিসেস ফিল্মস: মহেশ ও মুকেশের বাবার নাম ভিসেস। তার নাম অনুসারেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির নাম করণ করা হয়। ১৯৮৭ সালে দুই ভাই মিলে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকেই তারা নতুনদের সুযোগ দেন। বলিউড ইন্ডাস্ট্রির একঝাক তারকাকে সুযোগ দেয় এ প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৮ সালে কবজা সিনেমা দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের শুরু। এরপরের বছরই মুক্তি পায় আশিকি। সিনেমাটি রীতিমতো রেকর্ড ব্রেক করে। বিশেষ করে সিনেমার গানগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে। একটা সময়ে প্রযোজনার পাশাপাশি পরিচালনাও করতেন তারাই। দস্তক, গোলাম, সংঘর্ষ মার্ডার, কিলার, রাজ, আওয়ারাপান, গ্যাংস্টার সিনেমাগুলো তাদের প্রডাকশনেরই। স্বল্প বাজেটের সিনেমা ও সিনেমায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রাখার জন্য তারা সমলোচিতও। এছাড়াও সঞ্জয় লীলা বনশালির,বনশালি ফিল্মস,সুভাষ ঘাইর মুক্তা আর্টস, বাশু ভগনানীর পূজা ফিল্মস রাকেশ রোশনের ফিল্ম ক্রাফট কুমার তরানি, রমেশ তরানি,টিপস মিউজিক ফিল্মস, বিধু বিনোদ চোপড়ার বিনোদ চোপড়া প্রডাকশন্স আমির খানের, আমির খান প্রডাকশন্স যশ জোহর ও করণ জোহরের, ধর্ম প্রডাকশন, ফারহান আখতার ও রিতেশ সিদ্ধনির এক্সেল এন্টারটেইনমেন্ট সতিশ কৌশিকের মেগা বলিউড শাহরুখ খান, গৌরি খানের,রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসন এন্টারটেইনমেন্ট, অজিত কুমার বার্জাতিয়া, কমল কুমার বার্জাতিয়া, রাজকুমার বার্জাতিয়ার রাজশ্রী প্রডাকশন্স মণি রত্নমের মাদ্রাজ টকিজ, দিল্লিন মেহতার ,শ্রী আস্তাবিনায়ক সিনে ভিশন লিমিটেড বনি কাপুরের,সাহারা ওয়ান, সালমান খানের এসকে ফিল্মস এন্টারপ্রাইজ, একতা কাপুর, শোভা কাপুরের বালাজি মোশন পিকচার্স, অনুরাগ ক্যাশ্যপের,ভায়াকম এইটিন মোশন পিকচার্স জন আব্রাহামের,জন আব্রাহাম এন্টারটেইনমেন্ট, ভূষণ কুমারের ,টি-সিরিজ প্রডাকশন গুলোই নিয়মিত সিনেমা নির্মাণ ও আধিপত্য বজায় রেখেছে বলিউডে। এমএ/ ০৮:০০/ ১৫ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2TTe5jy
February 16, 2019 at 02:10AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন