সিঙ্গাপুর, ২৮ মার্চ- সিঙ্গাপুরে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে গতকাল ২৬ মার্চ দিবসটি উদ্যাপন করা হয়। সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং জাতির সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পড়ে শোনানো হয়। হাইকমিশনার তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগ ও অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশগড়া ও দেশের উন্নয়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান। এ ছাড়া বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন অনুষ্ঠানকে একটি ভিন্ন মাত্রা প্রদান করে। সন্ধ্যায় হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। হোটেল মেরিনা মান্দারিনের বলরুমে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সিঙ্গাপুরপ্রবাসী বাংলাদেশিরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র প্রতিমন্ত্রী ড. এমি খোর। তিনি ছাড়াও স্বাগতিক সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দুজন পার্লামেন্ট সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিঙ্গাপুর সফররত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাংসদ আবদুল মতিন খসরু এমপি ও ডা. আ ফ ম রহুল হক এমপি এবং বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবদান ও অর্জন তুলে ধরেন। বর্তমান উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান হতে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে তিনি সরকারের অভিকল্প তুলে ধরেন। মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও সরকারি বিনিয়োগ সহায়ক নীতি বর্ণনা করে দেশটির ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। হাইকমিশনার এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী কয়েকটি বৃহৎ শিল্প-বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে অন্য প্রতিষ্ঠানকেও বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত বিশেষ সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। প্রধান অতিথি এমি খোর তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে অত্যন্ত উষ্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজমান। আগামী দিনে এ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করতে দুই দেশের সরকারই আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া হাইকমিশন স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে Bangladesh Beckons শিরোনামে একটি ম্যাগাজিন এবং দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক The Business Times-এ দুই পৃষ্ঠার রঙিন ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। সূত্র: প্রথম আলো এমএ/ ০৩:০০/ ২৮ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2YvaHy4
March 28, 2019 at 09:10AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন