সুভাষ বর্মন, শালকুমারহাট, ১৮ মার্চঃ আলিপুরদুযার জেলার শালকুমার-১, শালকুমার-২, পূর্ব কাঁঠালবাড়ি, পাতলাখাওয়া ও মথুরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হাজার হাজার মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল পাচ্ছেন না। তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন আযরনযুক্ত জল খেতে। একাধিক স্কুলে পিএইচই-র জল না থাকায় দূষিত জল খেতে হয় পড়ুযাদের। মিড-ডে মিলের রান্নাও হয় সেই জলে। শিক্ষকদেরও খেতে হয় দূষিত জল। এজন্য জলবাহিত রোগব্যাধি ছড়াচ্ছে গ্রামে গ্রামে। আবার এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কিছু এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ মাঝেমধ্যেই ব্যাহত হয়। কোথাও পাইপ ফেটে যাওযার জন্য, আবার কোথাও অপচয়ের জন্য।
লোকসভা ভোটের মুখে পানীয় জলের এই সংকট ভোগাবে শাসকদলকে, মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা যেমন জলকে এবার ভোটের ইশ্যু করছেন, তেমনই আঞ্চলিক স্তরে বিজেপি-ও এই বিষয়টিকে প্রচারে তুলে ধরার কথা জানিয়েছে। তবে শাসক তৃণমূল এতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, জল কোনো ইশ্যু নয়। গ্রামে সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন চলছে।
চিলাপাতা বনাঞ্চল লাগোয়া পাতলাখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬টি গ্রামের দশ হাজার বাসিন্দা আযরনযুক্ত জল খেতে বাধ্য হচ্ছেন। মথুরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও নেই পিএইচই-র জল। শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুনশিপাড়ার পিএইচই-র রিজার্ভারের মাধ্যমে ৬-৭টি গ্রামের একাংশে জল পাওয়া গেলেও দুবছর আগের বন্যায় অনেক জাযগায় পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাইপে রয়েছে একাধিক ফুটো। নতুনপাড়ার উত্তরাংশে স্ট্যান্ডপোস্ট থাকলেও জল পৌঁছায় না।
এদিকে, জলদাপাড়া ও প্রধানপাড়া মিলে তিন পঞ্চায়েত এলাকায় জলের ব্যবস্থা নেই। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বাবুল কার্জি বলেন, কিছু সমস্যা থাকলেও পানীয় জল ভোটের ইশ্যু হতে পারে না। কারণ গ্রামে গ্রামে সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে বা হচ্ছে। এদিকে, শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩টির মধ্যে দুটি পঞ্চায়েত এলাকায় পাম্প হাউজের মাধ্যমে জল পরিসেবা চালু রয়েছে। শালকুমার বাজার, অযোধ্যানগর, মণ্ডলপাড়া, কলাবাড়িয়া, সিধাবাড়ি, সুরিপাড়া, রাভাবস্তি সহ ১১টি পঞ্চায়েতে পিএইচই-র জল নেই। ভোট ঘোষণার আগে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে আলোচনা হয়। উপপ্রধান উত্তম কার্জি বলেন, অধিকাংশ গ্রামে পানীয় জল নেই বলেই কয়েক মাস আগে বৈঠক হয়েছে। ভোটের পর জলপ্রকল্পের জন্য উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
পূর্ব কাঁঠালবাড়িতে দুটি পাম্প হাউজের মাধ্যমে শালকুমার মোড়, পলাশবাড়ি, মেজবিল ও পশ্চিম কাঁঠালবাড়ির একাংশে জল পরিসেবা রয়েছে। যদিও পাইপ ফেটে মাঝেমধ্যেই এইসব গ্রামে পরিসেবা ব্যাহত হয়। উত্তর ও মধ্য মেজবিল, যোগেন্দ্রনগর, সিরুবাড়ি, মরিচঝাঁপি, পার পাতলাখাওয়া, গুদামটারিতে পৌঁছায়নি পিএইচই-র জল। উপপ্রধান সৌরভ পাল বলেন, গোটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এর জন্য বড়ো রিজার্ভার প্রয়োজন। ভোটের পর বিষয়টি প্রশাসনের উপরমহলে জানানো হবে।
বিজেপির জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হেমন্তকুমার রায় বলেন, হাজার হাজার গ্রামবাসীর পানীয় জলের দাবি আজও পূরণ হয়নি। বিষয়টি ভোটের প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পপি কর বলেন, ভোটের পর মিটিংয়ে বিষয়টি নিযে আলোচনা করা হবে।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2HsjZ8L
March 18, 2019 at 02:18PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন