মহানন্দা ক্যানেলের জায়গা দখল

সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি, ১৯ মার্চঃ শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পোড়াঝাড়ের রাধাকৃষ্ণপল্লির কাছে মহানন্দা ক্যানেলের জায়গা দখল করে ইতিমধ্যে প্রায় ৬০০ ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন থেকে সরকারি জায়গা দখল হলেও সেভাবে প্রশাসনের পক্ষে কোনো পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত দখলদারির বিরুদ্ধে চোখে পড়েনি।

তবে মহানন্দা ক্যানেলের জায়গা দখলের বিষয়ে রাজগঞ্জের ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক রূপক ভাওয়াল বলেন, আমরা ওই জায়গায় একটি সার্ভে করে তার রিপোর্ট নিউ জলপাইগুড়ি থানায় দিয়েছি। ওখানে দখল হওয়া জায়গার পাশাপাশি অনেকটা খালি জায়গাও রয়েছে। যদিও দখল হয়ে যাওয়া জায়গা খালি করার জন্য যা করার তা মহানন্দা ক্যানেল প্রোজেক্ট অথরিটিকেই করতে হবে। তাদেরকেই পুরো বিষয়টির জন্য উদ্যোগী হতে হবে।

যদিও এ বিষয়ে মহানন্দা ব্যারেজের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের কোনো সার্ভে রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত পাইনি। থানায় কিছুদিন আগেই লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া কোনোভাবেই আমাদের একার পক্ষে ওই দখল হয়ে যাওয়া জায়গা পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ করব।

মহানন্দা ক্যানেলের জায়গা দীর্ঘদিন থেকে দখল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফুলবাড়ির ধনতলা এলাকায় নদী দখলের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে দু-একবার পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু রাধাকৃষ্ণপল্লি এলাকাটি পোড়াঝাড়ের অনেক ভেতরে হওযায় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দীর্ঘদিন থেকে সেখানে দখলদারি চলছে। দখল হয়ে যাওয়া জায়গা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে কাঠা প্রতি দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকায়। এই ক্ষেত্রেও স্থানীয় একটি ক্লাবের নাম ভাঙিয়ে তোলা হচ্ছে টাকা।

স্থানীয় এক মহিলা বলেন, বছর তিনেক আগে তিন লক্ষ টাকায় শাসকদলের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তির কাছ থেকে জায়গাটি কিনেছিলাম। ওই ব্যক্তি জায়গাটি দখল করে রেখেছিল। তবে জায়গাটির বৈধ কোনো কাগজ নেই। কিন্তু আমরা এখানে চৌকিদারি ট্যাক্স দিচ্ছি। আমাদের এখানে বিদ্যুতের সংযোগও রয়েছে।

শংকর সরকার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ধূপগুড়ি থেকে এখানে এসে দেড় বিঘা জায়গা কিনেছিলাম। তার মধ্যে পাঁচ কাঠা জায়গা আমি সাড়ে ৭ লক্ষ টাকায় বিক্রি করব। কিন্তু সেক্ষেত্রে দশ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর করা কাগজ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারব না। যদি প্রশাসন এসে ওই জায়গা থেকে তুলে দেয় তাহলে কিছু করার নেই।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই জায়গায় এক পঞ্চায়েত সদস্যর দখল করা জায়গাও রয়েছে। অভিযোগ, শাসকদলের কিছু নেতার মদতেই চলছে এই গোটা কারবার। নতুন করে বেশ কিছু জায়গায় দখলদারির পাশাপাশি হাতবদল হচ্ছে। তবে শাসকদল জড়িত থাকায় দখল হয়ে যাওয়া বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি আদৌ খালি হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2TZaeET

March 19, 2019 at 04:25PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top