স্টকহোম, ২৭ মার্চ- উৎসবমুখর পরিবেশ ও যথাযোগ্য মর্যাদায় সুইডেনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানী স্টকহোমের প্রাণকেন্দ্রে স্টকহোম সিটি কনফারেন্স সেন্টারের ঐতিহ্যবাহী পিলার হলে এক জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত জানান। দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলাম তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির কথা বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অর্জনের ওপর আলোকপাত করেন। বাংলাদেশের সম্প্রসারণশীল অর্থনীতি ও ক্রমবর্ধমান ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর আলোকপাত করার প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন ইতিবাচক মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ ও সুইডেনের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে সুইডেনের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য সুইডিশ সরকার ও জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৭ সালের সুইডেন সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সফর ছিল সরকারপ্রধান পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে প্রথম ও একমাত্র দ্বিপক্ষীয় সফর। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এক নতুন স্তরে নিয়ে যেতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সরব ও প্রশংসনীয় উপস্থিতি এবং দায়িত্বশীল ভূমিকার বিষয়ও স্থান পায় তাঁর বক্তব্যে। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সার্বিক অগ্রযাত্রার ওপর একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি, বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধাবিষয়ক বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সবার সামনে তুলে ধরার প্রয়াস চালানো হয়। অভ্যর্থনা হলের প্রবেশমুখে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনার ছিল অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। এ ছাড়া প্রদর্শনী কর্নারে ছিল বাংলাদেশি মসলিন, জামদানি, কাতানসহ বিভিন্ন পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, বাঁশ-বেত ও মাটির পণ্যসামগ্রী, সিরামিক, কাঠের পণ্য, বাংলাদেশি বিভিন্ন হস্ত ও কুটিরশিল্পসহ হরেক রকম বাংলাদেশি পণ্য। এসব বিদেশি অতিথিদের বিপুল আগ্রহ সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা নান্দনিক এ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নৈশভোজে দূতাবাসের আয়োজনে নানা পদের ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। এমএ/ ১১:৪৪/ ২৭ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Ud3iUU
March 28, 2019 at 05:51AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top