কলকাতা, ০৭ মার্চ- প্রধান শিক্ষক স্বামী এবং তার সম্পত্তির দখল নিয়ে দুই সতীনের মধ্যে কিছুদিন ধরেই চলছিলো তুমুল ঝগড়া। এক পর্যায়ে এক সতীন আরেক এক সতীনের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হন। এ নিয়ে গ্রামজুড়ে ছি ছি পড়ে যায়। আর দুই বউয়ের ঝগড়ার জন্য স্থানীয়রা ওই ব্যক্তিকেই দায়ী করতে থাকেন। তারা নানাভাবে তাকে কথা শোনায়। শেষে দুই স্ত্রীর বিবাদ মেটাতে না পেরে অভিমানে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজেশচন্দ্র প্রসাদ (৪৮)। সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে মালদহ জেলায়। আত্মঘাতী ওই প্রধান শিক্ষক তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে জেলার গাজোল থানার পূর্ব কলেজপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। শিক্ষকের আত্মহত্যার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় গাজোল থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে স্বামীর মৃত্যুর পরও দুই সতীনের লড়াই অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা স্বামীর হত্যার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করে গাজোল থানায় আলাদা আলাদা অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ দুই সতীনের অভিযোগই খতিয়ে দেখছে। মালদহ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক রাজেশচন্দ্র প্রসাদ বরিজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি গম্ভীরা শিল্পী হিসাবেও এলাকায় পরিচিত ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগে ওই শিক্ষক দুর্গা প্রসাদ নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। কিন্তু ওই স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিলো না। তাই বছর দুয়েক আগে ওই শিক্ষক দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে পিংকি মিস্ত্রিকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গাজোল থানার পূর্ব কলেজপাড়া এলাকায় থাকতেন ওই শিক্ষক। পাশের গ্রামে থাকতেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী দুর্গাদেবী। কিন্তু স্বামীর অধিকার এবং সম্পত্তির ভাগবণ্টন নিয়ে দুই সতীনের ক্রমাগত বিবাদ চলছিল। তার জেরেই ওই শিক্ষক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। মৃতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পিংকি মিস্ত্রী জানান, তার স্বামীর বেশ কিছু জমি রয়েছে গাজোলে। ওই জমির মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। সেই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল তার সতীন দুর্গা প্রসাদ। রবিবার রাতে দুর্গাদেবী দলবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে ঝামেলা করে। তুমুল ঝগড়া করে ফিরে যায়। এই গোলমালের কথা জানতে পেরেই স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপরই তিনি বাইরে থেকে কীটনাশক খেয়ে বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতেই মৃত্যু হয় স্বামীর। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কারণেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। তবে দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী দুর্গা প্রসাদ। তার পালটা অভিযোগ, পিংকির বাড়িতেই থাকতেন আমার স্বামী। সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে পিংকি। ২৮ শতক জমি হাতানোর উদ্দেশ্যে পিংকিই অশান্তি শুরু করে। এই অশান্তির জেরেই স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। এ ঘটনায় মৃত শিক্ষকের দুই স্ত্রীকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। চলছে তদন্ত। এন এ/ ০৭ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2XI4XR9
March 07, 2019 at 06:56PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top