নো বিমল-নো ভোট, ডুয়ার্সে কৌশল হতে পারে মোর্চার 

মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়াঃ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং প্রকাশ্যে না এলে ডুয়ার্সে কোনো প্রার্থীকেই ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিমলপন্থী মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা। বিমলপন্থী মোর্চার কেন্দ্রীয কমিটি সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। তবে, বিমল প্রকাশ্যে না এলে ভোট বয়কটের পথে না গিয়ে নোটার বোতাম বেছে নিতে পারেন মোর্চা সমর্থকরা, জানিয়েছেন বিমলপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কোর  কমিটির সদস্য রঞ্জিত থাপা। রঞ্জিতবাবু বলেন, ডুয়ার্সে আমরা কী অবস্থান নেব, তা পরিষ্কারভাবে জানানো হবে ২৮ মার্চ। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিমলপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ভোটাররা বেঁকে বসলে ডুয়ার্সের একাধিক আসনে সমীকরণ পালটে যাবে। তেমনটা হলে সবচেয়ে বেশি খেসারত দিতে হবে বিজেপিকে।

ডুয়ার্সের নেপালি অধ্যুষিত এলাকায় একসময গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং ছিলেন একচ্ছত্রাধিপতি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিমলের সম্পর্কের অবনতি, বিনয় তামাংয়ের উত্থান এবং বিমলের গা-ঢাকা দেওয়ার পরও যে ডুয়ার্সে বিমলপন্থী মোর্চার সংগঠন ভালোই রয়েছে তা বোঝা গিয়েছিল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর। গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি থাকায় বিমল গুরুং প্রকাশ্যে নেই অনেকদিন ধরেই। তবে, তিনি সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানে বিমল গুরুংয়ের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলা চলছে। তবে, জামিন না মিললে বা বিমল গুরুং প্রকাশ্যে না এলে লোকসভা নির্বাচনে নোটাকেই বেছে নিতে পারেন বিমলপন্থী মোর্চার সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা। বুধবার অবশ্য গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জিএনএলএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে। তবে ডুয়ার্সের পরিচিত নেতা রঞ্জিত থাপা বলেন,  জিএনএলএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের উচ্চ নেতৃত্ব বিজেপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে এটা ঠিক। তবে তা এখনও পর্যন্ত দার্জিলিংয়ে ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ডুয়ার্সে বিমলপন্থী মোর্চা সিদ্ধান্ত নেবে বিমল গুরুংয়ে প্রকাশ্যে আসা না আসার ওপর।

ডুয়ার্সে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই বিজেপিকে একাধিকবার সমর্থন দেওয়ার পর নিজেদের সংগঠনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। ২০১৪ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন নিয়ে ভোটে নির্বাচিত হন দার্জিলিংয়ে বর্তমান সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়া। আলিপুরদুয়ারেও ভালো ভোট পায় বিজেপি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মোর্চার সমর্থন নিয়ে মাদারিহাটের আসনটি দখল করে বিজেপি। স্বাভাবিকভাবে, বিমল গুরুং গা-ঢাকা দেওয়ার পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুর্দিনে বিজেপি মোর্চার পাশে কতটা দাঁড়িয়েছে সে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিমলের অনুগামীদের অনেকেই। এমনকি, দার্জিলিংয়ে বিজেপি সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়া ও মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার সমালোচনা করতেও পিছপা হননি বিমলপন্থী মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য রঞ্জিত থাপা ও মধুকর থাপা। বিনয় তামাং নেতৃত্বাধীন মোর্চা প্রসঙ্গে রঞ্জিত থাপা বলেন,  বিনয় তামাং তৃণমূলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। তাই, মোর্চার সমর্থকরা তাঁর পাশে নেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। বিমলপন্থী মোর্চাই নির্ধারণ করবে ডুয়ার্সের প্রার্থীদের ভাগ্য। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক মনোজ টিগ্গা বলেন,  বিজেপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে মোর্চা নেতৃত্ব। মোর্চা নেতৃত্বের কোনো অংশ ভিন্ন অবস্থান নিলে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই বিষয়টি দেখবে। তাঁর প্রতি মোর্চার একাংশের ক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। কোনো খামতি থাকলে ভবিষ্যতে তা পূরণ করার চেষ্টা করব।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2HBZYNc

March 24, 2019 at 12:59PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top