শিলিগুড়ি, ৫ মার্চঃ লোকসভা নির্বাচনের জেরে দার্জিলিং জেলায় মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সমস্ত সরকারি কর্মচারীর ছুটি বাতিল করলেন জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনি আধিকারিক জয়শী দাশগুপ্ত। জেলাশাসকের এই নির্দেশ ঘিরে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের একাংশ বলছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই জেলাশাসক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার একাংশের বক্তব্য, নির্বাচনের জন্যই যদি এই নির্দেশিকা জারি হয়, তাহলে শুধু দার্জিলিংয়ে কেন জেলাশাসক এমন নির্দেশ জারি করলেন? রাজ্যজুড়ে সমস্ত জেলাতে একসঙ্গে এই নির্দেশিকা জারি হওয়া উচিত ছিল।
জেলাশাসক অবশ্য বলেন, ভোটের সময় ছুটি নিয়ে ঘুরতে চলে যাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়। দার্জিলিংয়ে এবার আমাদের ভোট পরিচালনা করতে যত কর্মী প্রয়োজন হবে তার তুলনায় অনেক কম রয়েছে। এমনিতেই আমরা এই বিষযটি নিয়ে চিন্তিত। তার মধ্যে কর্মীরা ছুটি নিয়ে বসে থাকলে ভোটপর্ব পরিচালনা করব কীভাবে? তাই বাধ্য হযে এই নির্দেশ দিয়েছি। তবে, ভোট আগেই মিটে গেলে ৩১ জুলাইয়ের আগেই নির্দেশ তুলে নেওয়া হতে পারে।
এপ্রিল-মে মাসেই লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যান্য জেলার মতোই দার্জিলিং জেলাতেও নির্বাচনি প্রস্তুতি তুঙ্গে। এরই মধ্যে দার্জিলিংয়ে জেলা নির্বাচনি আধিকারিক একটি নির্দেশ জারি করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ১ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই জেলায় কোনো কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি কর্মচারী অসুস্থতাজনিত কারণ ছাড়া অন্য কোনো ছুটি নিতে পারবেন না। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে মেডিকেল বোর্ডের কাছে রিপোর্ট নিতে হবে। কিন্তু কেন এই নির্দেশিকা জারি করা হল?
জেলাশাসক বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় ভোটকর্মীর সংখ্যা অনেক কম। এই নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি। তার উপরে এবার নির্বাচন কমিশনের অনেক নতুন নতুন নির্দেশিকা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিভিজিল অ্যাপ। ভোট ঘোষণা হওয়ার দিন থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা এই অ্যাপে তথ্য আদানপ্রদান হবে। লোকসভা কেন্দ্রের তথ্য এই অ্যাপে আপলোড করতে হবে। সেইজন্য প্রচুর কর্মী এই বিভাগ দেখার জন্য দিতে হবে। আমি তো কোনো কর্মীকে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব দিয়ে বসিয়ে রাখতে পারব না। ৮ ঘণ্টা করে তিনটি ধাপে কর্মী সেই বিভাগের জন্য দাযিত্ব দিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু ভোটের সময় একটু গরম পড়ায় ছুটি নিয়ে বাইরে ঘুরতে চলে যাওয়ার একটা প্রবণতা আমরা এর আগেও দেখেছি। সেই জন্যই অহেতুক ছুটি নেওয়া রুখতে আমাদের নির্দেশ জারি করতে হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক প্রশান্ত সরকার বলেন, জেলাশাসক নিশ্চয়ই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেই এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। নির্বাচনের কাজে আমরা সবাই সহযোগিতা করব। বামপন্থী কর্মচারী সংগঠন কোঅর্ডিনেশন কমিটির দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমরেশ ভট্টাচার্য বলেন, আমরা জেলাশাসকের এই নির্দেশের ব্যাপারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতত্বকে জানিয়েছি। তাঁরাই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2Ts36ki
March 05, 2019 at 02:33PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন