নিশীথ বিদায়ে কোন্দল কমবে, আশা তৃণমূলের

দিনহাটা, ২ মার্চঃ বহিষ্কৃত তণমূল যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিক বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরই কি তৃণমূল কংগ্রেস ও যুবর মধ্যে দূরত্ব কমতে শুরু করল? রাজনৈতিক মহল অবশ্য এমনটাই মনে করছে। তৃণমূলের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটে তথাকথিত যুব হিসাবে জয়ী নির্দল প্রার্থী ও তাঁদের অনুগামীদের দলের মূলস্রোতে ফেরানোর কাজ ইতিমধ্যেই স্থির হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, একদা যাঁরা নিশীথের অনুগামী হিসাবে পরিচিত ছিলেন তাঁরা যাতে পদ্ম শিবিরের দিকে ঝুঁকে না পড়েন সে জন্যই তৃণমূল শিবিরে এই তত্পরতা শুরু হয়েছে। শুক্রবার দিনহাটা-১ ব্লকের আটিয়াবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিশীথ অনুগামী তিন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। শনিবার আটিয়াবাড়ি১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চার পঞ্চায়েত সদস্যর পাশাপাশি দিনহাটা-১ পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ তণমূলে যোগ দেন। এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সৈযদ হোসেন, জাহানারা বিবি, আখলিমা বিবি, এনামুল হকের মতো পঞ্চায়েত সদস্যরা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযকে দেখেই তাঁরা দল করেন। ভোটে টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আবার দলে ফিরে এসেছেন। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, নির্দল ও তাদের অনুগামীদের শীঘ্রই দলের মূলস্রোতে ফেরানো হবে। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েত সঙ্গে আছেন বলে ইতিমধ্যেই তাঁদের অনেকে জানিয়েতেন। শীঘ্রই বাকিদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। জেলা সভাপতির এই দাবিকে নস্যাত্ করে দিনহাটা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিজুল হক অবশ্য বলেন, সমিতির সমস্ত সদস্যের সঙ্গে বৈঠক হয়েতে। তাঁদের কেউই বিজেপি-তে যোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

গত পঞ্চায়েত ভোটে দিনহাটা-১ ব্লকে নিশীথ অনুগামী যুব প্রার্থীরা তণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ান এবং ঘাসফুল প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, দিনহাটা-১ ব্লকের আটটির বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত, একটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং একটি জেলাপরিষদের আসনে নিশীথের অনুগামীরা জয়ী হন। সেই সময় থেকে তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে বারে বারে দিনহাটা-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে। তথাকথিত মাদার এবং যুব-র সংঘর্ষে বিভিন্ন স্থানে শতাধিক জখমের পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। তৃণমূলের রাজ্য নেতত্বের কাছেও গোষ্ঠী সংঘর্ষের খবর পৌঁছে যায়। কিন্তু রাজ্য নেতত্বের চরম বার্তার পরও সমস্যা মেটেনি। শেষ পর্যন্ত গত ৮ ডিসেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে নিশীথ প্রামাণিককে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয। এরপর গত বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। এরপর থেকেই দিনহাটার রাজনৈতিক মহলে লাভ-ক্ষতি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই তবে কিছু দুষ্কৃতী দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।  নিশীথ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ওর সঙ্গে যাদের দিল্লিতে দেখা গিয়েছে তারা ওখানকার একটা কলোনিতে থাকা এখানকার কিছু লোক। ওর সঙ্গে থাকা এক শতাংশ লোকও বিজেপিতে যায়নি আর যাবেও না। অন্যদিকে বিজেপি-র দাবি, সামগ্রিকভাবে দল হিসাবে কাজ করায কোচবিহারে তারা ক্রমশই ভালো করছে। দলের কোচবিহার সহসভাপতি অলোক মণ্ডল বলেন, বিজেপি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। এই দলে নির্দিষ্ট নিযমনীতি রয়েতে। এখানে ব্যক্তি নয়, দলই শেষ কথা।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2Etj1oV

March 03, 2019 at 12:56PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top