বলিউডের আলোর ঝলকানি বাংলাদেশেও এসে পরে। তাইতো সেখানকার বড় , মাঝারি, ছোট তারকারাও আমাদের অপরিচিত থাকেন না। যদি কেউ গেল ১০ বছর খেয়াল করেন। এমন অনেক তারকাকেই চেনেন, যারা ধুমকেতুর মতো এসে আবার কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। প্রতিটা ইন্ডাস্ট্রিতেই এমনটা থাকে। বলিউডের নায়ক- নায়িকাও পাশাপাশি গায়ক-গায়িকারাও আমাদের অপরিচিত নন। এমন অনেক গায়ক গায়িকা আছেন যারা আমাদের একটা সময় মুগ্ধ করে হারিয়ে গেছেন। এ কাতারে আছেন এমন কয়েকজনের খোঁজ নেওয়া যাক: লাকি আলী: অভিনেতা কমেডিয়ান মেহমুদের দ্বিতীয় পুত্র। ছোট থেকেই জানতেন তার মেজ ছেলে খুব ট্যালেন্টেড। চেষ্টা করেছিলেন অভিনয়ে নাম লেখাতে। কিন্তু ছেলে পড়ে থাকতেন আর ডি বর্মন, কিশোরকুমারকে নিয়ে। তিনবন্ধুকে নিয়ে ১৯৯৬সালে প্রকাশ করলেন `সুনোহ` অ্যালবামটি। এম টি ভিতে টানা ষাট সপ্তাহ এশিয়ার সেরা গান ছিল ও সনম। ঢুলু ঢুলু চোখ খোচা খোচা দাঁড়িতে অদ্ভুত সুরে গাওয়া মানুষটার প্রেমে পড়ে যায় সবাই। এরপর অসংখ্য হিট গান গেয়েছেন। অভিনয়ও করেছেন। ঋত্বিকের ট্রেডমার্ক এক পাল কি জিনা তারই গাওয়া। শেষ তাকে তামাশা সিনেমায় সফরনামা গানটি গাইতে দেখা গিয়েছিল। শেষ অ্যালবাম ছিল ২০১১ সালে। এখনো গান করেন স্টেজে বাউন্ডুলে লোকটা। মাঝে মাঝে আলু চাষ করেন। বিতর্কিত টুইট করেন। কিন্তু তার ভক্তরা তাকে ভুলবে না কোনদিন। এখনো তার মন উদাস করা গান শুনতে হয়। হিমেশ রেশমিয়া: এলাম, দেখলাম, জয় করলাম ক্যারিয়ার হিমেশ রেশমিয়ার। সালমান খানের মাধ্যমেই চলচিত্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে। সালমান খান হিমেশকে পিয়ার কিয়া তো ডর না কিয়া সিনেমার জন্য সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জতিন-ললিত এবং সাজিদ-ওয়াজিদ এর সাথে কাজ করার সুযোগ করে দেন। এই কাজে সফলতার পর হিমেশ ও খান আরো অনেক কাজ একসাথে করেছেন। তবে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে হিমেশের সাফল্যটার শুরু হয় ২০০৩ সালে তেরে নাম সিনেমার মাধ্যমে। তবে সব সাফল্য ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় আরও দুই বছর। ২০০৫ সালের মুক্তি পাওয়া আশিক বানায়া আপনে সিনেমার টাইটেল গানসহ সব গান সুপারহিট হয়। রীতিমতো রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে। অনেকেই জানিনা, এই সিনেমার অডিও অ্যালবামটা বিক্রি হয়েছিল বিশ লক্ষ পিস! এরপর আকসার, ফির হেরা ফেরি, চুপ চুপ কে, আপ কি খাতির, ফুল এন্ড ফাইনালসহ আরও অনেক ছবি ফ্লপ হলেও হিমেশের গান ছিল সুপারহিট। সংগীত পরিচালক থেকে হিমেশ যখন কন্ঠশিল্পী হন। শুরুতে তার গাওয়া গানের অ্যালবাম ব্যাপক প্রশংসিত ও বিক্রিত হয়। গলায় অদ্ভুত একটা মাদকতা ছিল তার। কিন্তু তার এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চাইলেন বলিউডের পরিচালকরা। তাকে নায়ক বানালেন। হিমেশও ছুটলেন নায়ক হতে। ৯ টি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। যেসব সিনেমার সবগুলোই ছিল ফ্লপ। তিনি প্রডিউসারের খাতাতেও নাম লেখান। সেখানেও তিনি ব্যর্থ। ২০১৯ সালে তার অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। এর একটি হলো মে যাহা রাহু ও আপ কা সুরুর ৩। সামনে তার কম্পোজিশনে আসছে গুড নিউজ সিনেমা। কিন্তু হিমেশর সেই দিন নেই। আড়ালেই চলে গেলেন তিনি। কোনভাবে কোনমতেই যেন তিনি আর আলোচনা তৈরী করতে পারছেন না। মোহিত চৌহান: ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া যাব উই মেট সিনেমার তুম সে হি গান গেয়ে রীতিমতো আলোচনায় চলে আসেন। তবে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল আরও আগেই। ২০০২ সালে রোড সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক হয়। এরপরও আরও কয়েকটি সিনেমায় গান করেন। তিনি মূলত ব্যান্ডে গান করতেন। সিল্ক রুট ব্যান্ডের সদস্য তিনি। সেখান থেকে বলিউডের গানে অভিষেক হয়। তবে ২০০৭ সালের পর রীতিমতো তার ক্যারিয়ার বদলে যেতে শুরু করে। তার সম্পর্কে সবচেয়ে মজার তথ্য সংগীত বিষয়ক কোন প্রাতিষ্ঠানিক বা প্রথাগত বিদ্যা নাই , এককথায় স্বশিক্ষিত! কন্ঠ দেয়ার পাশাপাশি তিনি খুব ভালো গীটার আর বাঁশিও বাজান! মোহিত চৌহান তার মিউজিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৯৬ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার করে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হিমাচল থেকে চলে আসেন দিল্লীতে। সিল্ক রুট তখনই গঠন করেন। মূলত পপ ঘরানার ওই ব্যান্ডের মাত্র দুটো অ্যালবাম রিলিজ হয় ২০০৮ এ ভেঙ্গে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। মোহিত চৌহান এর কন্ঠের বা গায়কীর যে ব্যাপারটা আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে তা হল মাদকতা! এ আর রহমানের সঙ্গেও তার হিট জুটি রয়েছে। দিল্লী ৬ ছবিতে মাসাক্কালি কিংবা রং দে বাসন্তীর রুবারু, রকস্টার সিনেমায় তো রীতিমতো মাত করেন। আমরা অনেকেই মনে করি, তিনি মনে হয় এখন গান গায় না। কিন্তু তিনি নিয়মিতই গান গাইছেন। গত বছরও প্যাডমনসহ ছয়টি সিনেমায় গান গেয়েছেন। সামনেও বেশ কিছু সিনেমায় তাঁর গান রয়েছে। কিন্তু সেই মোহিত নেই, মনে হচ্ছে তিনি হারিয়ে গেছেন। কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ: কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের চেয়ে কেকে নামেই সকলের কাছে পরিচিতি। তুহি মেরা সাব হে বলিউডের গ্যাংস্টার ছবির সেই গানের কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলেননি। অসংখ্য হিট গানের গায়ক তিনি। পাল,ইয়ারো,তাডাপ তাডাপ ইস দিল সে,ও সনম ,লাবোকোসহ এত এত হিট গান রয়েছে তার যে বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু হঠাৎ কেমন যেন তিনি আলোচনার বাইরে চলে যান। ২০১৮ সালেও তিনি ৫ টি গান গায়। কিন্তু কোন গানই আলোচনা তৈরী করতে পারেনি। গেল ৫ বছরে হাতে গোনা দুয়েকটি গান শ্রোতাদের ভালো লেগেছে বলা যায়। সামনে বদল সিনেমাতেও তার গান রয়েছে। তবে সেই কেকের খোঁজ যেন কেউ পাচ্ছেন না। কৈলাস খের: ভারতের মেরুটের বাসিন্দা। গানের প্রতি আকর্ষণ ছিল ছোটো থেকেই। স্বপ্ন দেখেছিলেন গায়ক হবেন। স্বপ্নপূরণ করতে বাড়ি ছাড়েন মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে। শুরু হয় সংগ্রাম। মোটামুটি ২০১৩ সাল থেকে তিনি সবার নজর কাড়েন। তেরি দিওয়ানি, আল্লা কে বান্দের মতো গান তাঁর গাওয়া। দেশের শ্রেষ্ঠ গায়কদের সঙ্গে গান করেছেন। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। তিনিও নিয়মিত গান করছেন। তবে তার কোন গান ইদানিংকালে হিট হয়নি। গত বছর তিনি আলোচনায় ছিলেন যৌন কেলেঙ্কারিতে। শান: অনেকেই জানেন না যে শান এখনো নিয়মিত গান গায়। ২০১৮ সালেও বলিউডের সিনেমার জন্য তিনি গান গেয়েছেন। গেল ৫ বছরে বলিউডে তার একমাত্র হিট গান চার কদম পিকে ছবিতে গেয়েছেন। বিভিন্ন স্টেজ শো নিয়েই ব্যস্ত সময় পাড় করেন এ শিল্পী। অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য: গানের চেয়ে তিনি কন্ট্রোভার্সি করতেই বেশি পছন্দ করেন বোধ হয়। একের পর এক মন্তব্য করে তিনি আলোচনায় আসছেন ইদানিংকালে। অনেকবছর বলিউডে তার আলোচিত কোন গান নেই। তবে কলকাতায় নিয়মিত গাইছেন তিনি। তবে সেখানেও যে খুব বেশি আলোচনা তৈরী করতে পারছেন তা বলা যায় না। আর/০৮:১৪/০৩ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2IMqrZS
March 03, 2019 at 06:59PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top