ভোটের আগে শহর সাফ দেখতে চায় তরুণ প্রজন্ম

শিলিগুড়ি, ১৫ মার্চঃ শহর ও শহরতলির জঞ্জাল অপসারণের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি পুরনিগম ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উদাসীন ভূমিকা দিনের পর দিন সহ্য করতে করতে জঞ্জাল সাফাইয়ের দাযিত্ব এবার নিজের হাতে তুলে নিল শহরের তরুণ প্রজন্ম। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ট্র‌্যাশ চ্যালেঞ্জ শুরু হল শিলিগুড়ি শহরের বুকেও। তবে নিছক কিছু লাইক কিংবা শেয়ার পাওয়ার আশায় নয়, প্রশাসনকে তার ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়াই এই প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য বলে জানান শহরের তরুণদের একাংশ। শহর ও সংলগ্ন এলাকার রাস্তায় জমে থাকা ময়লার স্তূপ ও তার থেকে রোগজীবাণুর সংক্রমণের নানা ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে করতে স্বভাবতই বিরক্ত শহরবাসী। তাই পুরনিগম ও পঞ্চায়েতের কাছে জঞ্জাল অপসারণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এবার পথে নামল শহরের তরুণ প্রজন্ম।

একটি নির্দিষ্ট এলাকায় জমে থাকা ময়লা সাফ করাই হল এই ট্র‌্যাশ চ্যালেঞ্জ-এর প্রধান লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় এই চ্যালেঞ্জের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাল চ্যালেঞ্জের সংক্রামক হাওয়া এবার ঢুকে পড়ল শিলিগুড়ি শহরেও। কেউ দল বেঁধে, আবার কেউ একাই হাত নোংরা করতে মাঠে নেমে পড়ছে। প্রথমে, নির্দিষ্ট কোনো জঞ্জালে ভরা এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার ছবি তোলা হচ্ছে। তারপর সেই এলাকা পরিষ্কার করে আবার সেখানকার ছবি তুলে আগের ও পরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা।

তবে এই প্রচেষ্টা নিছক লাইক কিংবা শেয়ার পাওযার জন্য নয়, বরং প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়াই মূল লক্ষ্য বলে জানান শিলিগুড়ি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্র সংযোগ শর্মা। তিনি বলেন, আমার বাড়ি দেবীডাঙ্গায়। এলাকায় কোনো দিন নোংরা ফেলার কোনো ভ্যাট দেখিনি। যত্রতত্র নোংরা পড়ে থাকতে দেখতে ভালো লাগে না। কেউ এই আবর্জনা নিয়ে যায় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্র‌্যাশ চ্যালেঞ্জের কথা শুনে বিষয়টি নিয়ে নিজে কিছু করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। প্রশাসন যখন কিছু করছেই না, তাই আমার বাড়ির এলাকা আমি নিজে হাতেই পরিষ্কার করছি। এখন আমার কাছে বেশকিছু ব্যাগ ভরতি ময়লা পড়ে রয়েছে, সেসব কোথায় ফেলব জানি না। বিষয়টি নিয়ে পুরনিগমের কাছে ই-মেল করেছি, কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি।

ভোটের আগে জঞ্জাল অপসারণের সমস্যার সমাধান করা শুরু না হলে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ-তরুণীরা মাঠে নামতে বাধ্য হবে বলে জানান হাকিমপাড়ার বাসিন্দা ঋত্বিক বোস। তিনি বলেন, আমি ও আমার বেশকিছু বন্ধু মিলে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ট্র‌্যাশ চ্যালেঞ্জ নেব বলে ঠিক করেছি। শুধু তাই নয়, প্রতিটি এলাকা সাফ করার পর সেখানকার ছবি পুরনিগমে পাঠাব আমরা। তার সঙ্গে এলাকাটিতে কেন জঞ্জাল জমেছিল সেই প্রশ্নও তুলব। অনেকদিন ধরেই দেখছি। ভোটের আগে যদি পুরনিগম কিছু করে দেখাতে পারে, তবে সেখানেই তাদের জয় হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পুরনিগমের জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্তকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। তাই তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2u5vFpk

March 15, 2019 at 02:57PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top