শিলিগুড়ি, ৫ মার্চঃ দাগাপুরে পঞ্চনই নদীর চরে প্রায় ১৩ বিঘা সরকারি জমি দখল করে বিক্রির ছক কষেছে জমি মাফিয়াদের একটি চক্র। পুরো জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে প্লটিং করার কাজ শুরু হয়েছে। দার্জিলিংগামী হিলকার্ট রোডের একেবারে গায়ে নদীর চরের এই জমি দিনের আলোয় দখলের চেষ্টা হলেও প্রশাসন পুরোপুরি নির্বিকার বলেই অভিযোগ উঠেছে। সরকারি সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট জমি মাফিয়ারা এই ঘটনায় যুক্ত থাকায় প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের মাটিগাড়া ব্লক (২) সভাপতি খগেশ্বর রায় অবশ্য বলেন, তৃণমূলের নাম করে যে কেউ এখন জমির কারবার করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, জমির কারবারিদের কোনোভাবেই রেয়াত করা যাবে না। আমরা চাই এই ঘটনায় যুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক।
দার্জিলিং মোড় থেকে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বা হিলকার্ট রোড ধরে দেড় কিলোমিটার এগোলেই পঞ্চনই সেতু। এই সেতুর ডানদিকে পঞ্চনই নদীর চরে দীর্ঘদিন ধরেই একটি জমি ফাঁকা পড়ে ছিল। মাটিগাড়া ব্লকের অধীন এই জমিটি মাসখানেক ধরে মাপজোখ করে চারদিকে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পাঁচিল তোলার কাজ ইতিমধ্যেই অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকনিকাটা মৌজার এই জমিটি পুরোপুরি খাস হিসাবেই রয়েছে। জমিটির দাগ নম্বর ৪১৮, অংশ নম্বর ০.৪৭৫৫। মোট জমির পরিমাণ ৪.৩৫ একর। অর্থাৎ প্রায় ১৩ বিঘা। পুরো জমিটিই নদী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পক্ষে ডেপুটি কমিশনারের নামে নথিভুক্ত রয়েছে। অথচ এই জমিটিই দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এখানে কাঠা প্রতি জমির দাম ন্যূনতম দুই লক্ষ টাকা। ১৩ বিঘা জমি প্লটিং করে কাঠা হিসাবে বিক্রি হলে পাঁচ কোটি টাকার উপরে এই জমিটির দাম রয়েছে। এলাকারই পাঁচ-ছয়জন জমি মাফিয় এই জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে প্লটিং করে বিক্রি করার ছক কষেছেন।
কিন্তু জনসমক্ষে থাকা একটি সরকারি জমি কীভাবে দখল করে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে? সূত্রের খবর, এই জমি মাফিয়ারা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। দলের বেশ কিছু নেতাকে হাতে রেখেই ওই জমি মাফিয়ারা এই কারবারে যুক্ত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা ভোলা ঘোষ কোনো মন্তব্য করতে চাননি। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়শী দাশগুপ্ত বলেন, নদীর চরে থাকা সরকারি জমি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দখলের চেষ্টা হচ্ছে বলে আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। মাটিগাড়ার ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিক রিপোর্ট দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই আমরা ওই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলেছি।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2EN8qXf
March 05, 2019 at 02:50PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন