টরন্টো, ২৬ মে- যে স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশি এক নারী ১৯৯৯ সালে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়েছিলেন, সে মর্যাদা পাওয়ার পর ওই নারীর বাসায় সেই স্বামীরই সন্ধান পেয়েছে কানাডা কর্তৃপক্ষ। নির্যাতিত নারীর জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ নয় এবং বাংলাদেশে ফিরলে হত্যার শিকার হতে পারেএমন তথ্যও কানাডা কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিলেন ওই নারী। পরে দেখা যায়, তাঁর স্বামী ভুয়া নাম ব্যবহার করে কানাডায় ওই নারীর বাড়িতেই আছেন। পুরো বিষয়টিতে প্রতারণার আঁচ পেয়ে কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ বাংলাদেশি ওই নারীর শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় বাতিল করার পর বিষয়টি কানাডার উচ্চ আদালতে গড়িয়েছে। উচ্চ আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগের অপর একটি প্যানেলকে দায়িত্ব দিয়েছে। জানা গেছে, স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য ১৯৯৯ সালে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করেছিলেন সাহারা বেগম নামে এক বাংলাদেশি নারী। তিনি দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশে ফিরে এলে তাঁর নিপীড়ক স্বামী মনিরুল ইসলাম তাঁকে মেরে ফেলবে। বাংলাদেশ থেকেই তাঁর স্বামী তাঁকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সাহারা বেগমের ওই আবেদন আমলে নিয়ে কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ ২০০০ সালে মৌখিকভাবে শরণার্থী হিসেবে তাঁর আবেদন প্রাথমিক পর্যায়ে মঞ্জুর করে। এরপর ২০০১ সালে লিখিতভাবেও তা তাঁকে জানানো হয়। কিন্তু বিপত্তি বাধে ২০০২ সালে। সে বছর কানাডা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে সাহারা বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম ভুয়া পরিচয়ে মুরাদ চৌধুরী নামে কানাডার মন্ট্রিয়লে আছে। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা ওই নারীর বাড়িতে যান। সে সময় ওই নারী বাড়িতে ছিলেন না, ছিলেন মুরাদ চৌধুরী। ২০০৯ সাল পর্যন্তও ওই নারী স্বীকার করেননি যে মুরাদ চৌধুরী ও তাঁর স্বামী মনিরুল ইসলাম একই ব্যক্তি। কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ আবেদনের ওপর শুনানির একপর্যায়ে সাহারা বেগম স্বীকার করেন, মুরাদ চৌধুরী নাম ধারণ করা ব্যক্তিই মনিরুল ইসলাম। এরপরও সাহারা বেগম দাবি করেন, তিনি মনিরুল ইসলামের সঙ্গে থাকেন না। ফরিদ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট ভাগাভাগি করে থাকেন। ওই ফরিদই নাকি তাঁকে না জানিয়ে মনিরুলকে অ্যাপার্টমেন্টের চাবি দিয়েছে। অ্যাপার্টমেন্টে মনিরুলের সঙ্গে সাহারার কোনো দিন দেখাই হয়নি। জানা গেছে, গত মার্চ মাসে কানাডার ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালত ওই মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ সাহারা বেগমের শরণার্থী মর্যাদা বাতিল করার কারণ হিসেবে বলেছে, সাহারা বেগম ও মনিরুল ইসলাম ২০০২ সালে মন্ট্রিয়লে একত্রে বসবাস করছিলেন। শরণার্থী মর্যাদার জন্য তাঁরা প্রতারণার আশ্রয় নেন এবং আলাদা থাকার গল্প বানান। কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগের প্রশ্ন, ১৯৯৯ সালে মনিরুল ইসলামের ঘর ছেড়ে আসা সাহারা বেগম ২০০২ সালে কিভাবে একই বাসায় থাকেন? ২০০১ সালে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির কথাও জানিয়েছিলেন সাহারা। অন্যদিকে মুরাদ চৌধুরীর (আসল নাম মনিরুল ইসলাম) শরণার্থী মর্যাদার আবেদনও কানাডায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি কানাডার কোথায় ছিলেন তা ওই দেশটির কর্তৃপক্ষ জানে না। এন এ/ ২৬ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2X6S1DN
May 26, 2019 at 08:15AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন