নয়াদিল্লি, ২৩ মে- ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ চলছে। ভোট গণনা শেষ না হলেও ইতোমধ্যে জয় উদযাপন শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসছে মোদীর জোট। ঝানু রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি এবারে নির্বাচনের দৌড়ে পিছিয়ে নেই বিনোদন জগতের তারকারাও। অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে নেমেছেন ভোটের লড়াইয়ে। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ফলাফল ঘোষণা হয়নি, তবে ফলাফলের খবর পাওয়া গেছে অনেকেরই। কয়েকজন তারকার এবারের নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরা হলো- বলিউডের ড্রিমগার্ল হেমা মালিনী মাথুরা। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন বিজেপির হয়ে উত্তর প্রদেশের মথুরা আসন থেকে। তার বিপক্ষে আছেন রাষ্ট্রীয় লোকদলের (আরএলডি) প্রার্থী নরেন্দ্র সিং। শেষ খবর পর্যন্ত, হেমা মালিনী বেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। ২০১৪ সালেও এ আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। বলিউডের অন্যতম নায়ক সানি দেওল। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন বিজেপির হয়ে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর আসন থেকে। তার বিপক্ষে আছেন পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান সুনীল জাখড়। বাবা ধর্মেন্দ্র ও ভাই ববি দেওলকে নিয়ে বেশ জোরেশোরেই নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন সানি। সরব ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও। তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। বলিউড জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঊর্মিলা মাতন্ডকর। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে উত্তর মুম্বাই আসন থেকে। তার বিপক্ষে আছেন বিজেপি প্রার্থী ও বিগত সংসদ সদস্য গোপাল শেট্টি। তবে, রাজনীতিতে অভিষেকটা ভালো হয়নি উর্মিলার। বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন তিনি। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বলিউডের দাপুটে অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে বিহারের পাটনা সাহিব আসন থেকে, বিপক্ষে বিজেপি প্রার্থী রবিশংকর প্রসাদ। তবে দল পাল্টে হয়তো ভুলই করলেন এ বলিউড তারকা। তিনিও হারের শঙ্কায় আছেন। শত্রুঘ্ন সিনহার স্ত্রী অভিনেত্রী পুনম সিনহা। এবারের নির্বাচনী তিনি লড়েছেন এএসপির হয়ে উত্তর প্রদেশের লখনউ আসন থেকে। খবর অনুসারে, বিজেপি প্রার্থী রাজনাথ সিংয়ের কাছে হারছেন পুনম। বলিউডের প্রয়াত অভিনেতা সুনীল দত্তের কন্যা ও সঞ্জয় দত্তের বোন প্রিয়া দত্ত। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই উত্তর পূর্ব আসন থেকে। তার বিপক্ষে আছেন বিজেপির পুনম মহাজন। গত লোকসভা নির্বাচনে হারার পর, এবার লড়বেন না বলেই মনোস্থির করেছিলেন প্রিয়া। তবে কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধীর অনুরোধেই ফের লড়াইয়ে নেমেছিলেন তিনি। তবে, কপাল মন্দ তার। এবারও হারতে চলেছেন তিনি। কংগ্রেসের হয়ে উত্তর প্রদেশের ফতেহপুর সিক্রি আসন থেকে লড়ছেন বলিউডের আরেক তারকা রাজ বাব্বর। তার বিপক্ষে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী রাজকুমার চাহর। ভোট গণনা অনুসারে, বিশাল ব্যবধানে হারের পথে আছেন রাজ বাব্বর। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভোজপুরি তথা বলিউড অভিনেতা মনোজ তিওয়ারি সমাজবাদী পার্টির হয়ে লড়লেও ২০১৪ সালে লড়েছিলেন বিজেপির হয়ে। এবারও তিনি বিজেপির হয়ে দিল্লির উত্তর-পূর্ব আসন থেকে লড়ছেন। তার জয় প্রায় নিশ্চিত। বলিউড অভিনেতা রবি কিশান লড়েছেন বিজেপির হয়ে বিহারের গোরখপুর আসন থেকে। তার বিপক্ষে আছেন সমাজবাদী পার্টির (সপা) রামভুয়াল। ৬০.৫% ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন রবি কিশান। বলিউডের সুনামধন্য অভিনেত্রী জয়াপ্রদা। এবারের নির্বাচনে তিনি লড়ছেন বিজেপির হয়ে উত্তর প্রদেশের রামপুর আসন থেকে। বিপক্ষে আছেন হেভিওয়েট প্রার্থী আজম খান। ভোটের সর্বশেষ খবর অনুসারে, হারতে চলেছেন জয়াপ্রদা। বলিউডের দাপুটে অভিনেতা অনুপম খেরের স্ত্রী অভিনেত্রী কিরণ খেরও এবারের নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন। পাঞ্জাবের চণ্ডীগড় আসন থেকে বিজেপির হয়ে লড়েছেন তিনি। তার বিপক্ষে আছেন কংগ্রেসের পবন কুমার। শেষ খবর পর্যন্ত, কিরণ খের ৪৭%, পবন কুমার ৪২.২% ভোট পেয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বলিউডের পাশাপাশি পিছিয়ে ছিলো না টালিউডের শিল্পীরাও। পশ্চিমবঙ্গে চলেছে তাদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবতী তৃণমূলের হয়ে যাদবপুর আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। আরেক অভিনেত্রী জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের হয়ে বসিরহাট আসন থেকে। এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ঘাটাল আসন থেকে জয়ী হয়েছেন টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা দেব। বীরভূম আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে জয়ী হয়েছেন টালিউডের আরেক অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। হুগলি আসন থেকে বিজেপির হয়ে জয়ী হয়েছেন অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। আসানসোল আসন থেকে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী গায়ক ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এ আসনে তার বিপক্ষে আছেন তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মুনমুন সেন। গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৯ মে পর্যন্ত সাতটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয় এবারের নির্বাচন। ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ৫৪২টি আসনে এ ভোটের আয়োজনে ভারতজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। ৫৪৩টি আসনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও ভেলোর আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ২৭২টি আসন। সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর আর এস/ ২৩ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/30E4yk9
May 23, 2019 at 06:56PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top