ঘটনাটা গত শতকের আশির দশকের। আমরা প্রথম ইউরোপ সফরে যাই। সঙ্গে ছিল আমার স্ত্রী আবিদা সুলতানা, ছেলে ফারসিদ ও শ্যালক শওকত আলী ইমন। সুবীর নন্দীর সঙ্গে ছিল তাঁর স্ত্রী পূরবী আর মেয়ে ফাল্গুনী। লন্ডনে আমরা দুটি প্রোগ্রাম করেছি। এরপর যাব স্টকহোমে। সেদিনই আমাদের লন্ডনের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্টকহোমে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে এসেছি। দেখি, সুবীর নন্দীর চেহারায় কোনো ভাবানাচিন্তা নেই। ফুরফুরে মেজাজ। বলল, লন্ডন থেকে চলে যাচ্ছি। এত ঠান্ডা। এক কাপ কফি না খেলে চলে? আমি বললাম, একটু পরেই ফ্লাইটে ওঠার জন্য ডাকবে। বলল, ওরা ঘোষণা দেবে। বলেই ও কফির মগ নিয়ে বসল। আমি ভাবছি, একগাদা ঘোষণা হচ্ছে, কোনটা আমাদের, কী করে বুঝব! যে ভয়টা পেয়েছিলাম, তা-ই হয়েছে। আমরা যখন ফ্লাইটে ওঠার জন্য যাই, গিয়ে দেখি ফ্লাইটের দরজা ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গেছে। ফ্লাই করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। দ্রুত সবাইকে নিয়ে ছুটে আসি সেই এয়ারলাইনসের কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁরা আমাদের সহযোগিতা করলেন। সেদিনই স্টকহোমে যাওয়ার আরেকটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেন। আজ (মঙ্গলবার) সকালে সুবীর নন্দীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ওর বাসায় এসে আরেকটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ১০ থেকে ১২ বছর আগের ঘটনা। ও কলকাতা থেকে একটি দামি হারমোনিয়াম এনেছে। ফোন করে আমাকে বলল, আপনার বাসায় আসছি। গান হবে। আমরাও রাজি হয়ে যাই। দেখি, ও সঙ্গে করে নতুন হারমোনিয়ামটা নিয়ে এসেছে। খুব ভালো হারমোনিয়াম। এই হারমোনিয়াম বাজিয়ে একের পর এক গান করল। আমাদের বাসায় সেদিন দারণ একটা আবহ তৈরি হয়েছিল। যাওয়ার সময় সুবীর নন্দী বলল, আমি হারমোনিয়ামটা এনেছি দিদির (আবিদ সুলতানা) জন্য। দিদিকে এটা উপহার দিচ্ছি। এখন এই হারমোনিয়ামের দাম দেড় লাখ টাকা। আজ সুবীর নন্দী আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। তাঁর সঙ্গে আমাদের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তার মধ্য থেকে একটা পর একটা সামনে আসছে। সূত্র: প্রথম আলো আর এস/ ০৭ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2H6hnfh
May 07, 2019 at 09:14PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন