কলকাতা, ১৩ জুন- পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি রোগী। এমনকি অপারেশনের দিন চূড়ান্ত হওয়ার পরও তা বাতিল হয়ে গেছে। এক রোগীর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে ধর্মঘট করছেন কলকাতার সিংহভাগ চিকিৎসক। পশ্চিমবঙ্গের অনেক নামিদামি চিকিৎসকও রোগী দেখেননি এবং অপারেশন বাতিল করেছেন। অনেক টাকা খরচ করে যারা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের ভিসা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসেন সময় ও অর্থ দুই-ই নষ্ট হওয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকের আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ফেরার কথা ছিল। এজন্য তারা বাস, ট্রেন বা বিমানের টিকিটও কেটেছিলেন। কিন্তু ধর্মঘটে সব উলট-পালট হয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ধর্মঘট থাকায় স্থানীয় রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও কোনো চিকিৎসা পাননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে এ আশায় ইটের ওপর কাগজে নাম লেখা লাইনও চোখে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে। কলকাতার এ্যাপোলো হাসপাতালে বরিশালের খোরশেদ মোল্লা এবং মেডিকা হাসপাতালে নাজমা বেগমের সঙ্গে দেখা হতেই তারা দেশে ফেরা নিয়ে সংকটের কথা জানান। একই বক্তব্য, ফরটিস হাসপাতালে আসা কিডনি রোগী চট্টগ্রামের মফিজ্জুল হকের। কবে ধর্মঘট উঠবে তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। ধর্মঘট উঠার কোনো খবর পাওয়াও যায়নি। কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য সংকটের করুণ ছবি দেখা গেছে। অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে ইমার্জেন্সি খোলা থাকলেও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের মতো কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বড় হাসপাতালের গেটে আজ হাসপাতাল বন্ধ পোস্টার লাগিয়ে ইমার্জেন্সিও অচল করে দেয়া হয়। আবার রোগীরা আসতে না আসতে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন সংশ্লিষ্টরা। এদিন ডেথ সার্টিফিকেট পেতে কালঘাম ছুটছে স্বজনদের। চিকিৎসক ধর্মঘটে কার্যত অচল পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিসেবা। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়ররা। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা যতক্ষণ না এ ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা। এদিন হাসপাতালের পরিসেবা কার্যত স্তব্ধ। আউটডোর বন্ধ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে তালা ঝুলছে। আউটডোর বন্ধ ছিল কলকাতা মেডিকেল কলেজ, আরজি কর এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজেও। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি হাসপাতালের একটি বড় অংশের চিকিৎসকরা রোগী দেখেননি। এর জেরে ৩-৪ মাস আগে নেয়া অ্যাপয়েন্টমেন্টও বাতিল হয়েছে। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। শুধু শহর নয়, জেলার হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসার অভাবে কার্যত হাহাকার। এক হাসপাতালে পরিসেবা না পেয়ে হন্যে হয়ে অন্য হাসপাতালে ছুটেছেন রোগী ও আত্মীয়রা। কিন্তু শহরের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের ছবিই এক! আর এ হয়রানি আর হতাশা থেকে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে। এনআরএসের হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন সুবীর ঘোষ। তার রক্তের প্রয়োজন। পরিবারের দাবি, বাইরে থেকে রক্ত জোগাড় করা হলেও ধর্মঘটের জেরে সেই রক্ত রোগীর কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৫ বছর বয়স্ক এক রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসকরা ধর্মঘট করছেন। এ ঘটনা নিয়ে বাস-ট্রেনে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার আমজনতা। আর/০৮:১৪/১৩ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Rb80P3
June 13, 2019 at 05:50AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
মাওবাদী হানায় মৃত তথা নিখোঁজ ৪ জনের পরিবারকে নিয়োগপত্র দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
07 Oct 20200টিকলকাতা, ৭ অক্টোবর- কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারের ঘোষণা মতোই ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভা থেকে মাও...আরও পড়ুন »
ডেমোক্রেসির বদলে বাংলায় মমতাক্রেসি চলছে
06 Oct 20200টিকলকাতা, ৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মণীশ খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ
06 Oct 20200টিকলকাতা, ০৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি ব...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লার মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র বারাকপুর
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বিজেপির দাপুটে নেতা মণীশ শুক্লাকে খুনের ঘটনায় সোমবার সকাল থেক...আরও পড়ুন »
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরের মণীশ শুক্লা নামে এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে ...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.