লন্ডন, ৮ জুন- কার্ডিফের ওয়েলস ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লি হল হয়তো জাঁকালো সাজে সাজানো হয়নি। মানুষের উপচেপড়া ভিড়ও চোখে পড়েনি। তবে ছিল ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার মতো উষ্ণ সংবর্ধনা। এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের। যারা বিশ্বকাপ মিশনে ব্রিটেনের এক শহর থেকে অন্য শহরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। ইংল্যান্ডের ওভালে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে যারা গর্বিত করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের। ব্রিটিনের সেই প্রবাসীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মাশরাফিদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়েছেন। ১৬ কোটি মানুষের গর্ব দেশের ক্রিকেটের সূর্যসন্তানদের জন্য বিশেষ এই সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাইকমিশন। বেশি কিছু নয়, মাশরাফি আর বিশিষ্টজনের বক্তৃতা, সঙ্গে নৈশভোজ, দূর প্রবাসে দেশের ও ক্রিকেটের প্রতি আবেগ প্রকাশ করতে এই সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনাই তো যথেষ্ট। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন ক্রিকেটাররা। আর তাদের নেতা মাশরাফি ছিলেন মধ্যমণি। যার বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়েছেন উপস্থিত সুধীজন। নড়াইল এক্সপ্রেস এরই মধ্যে যে সুবক্তা হয়ে উঠেছেন, তা জানাই ছিল না। তার বক্তব্যের সময় তাই হাত গুটিয়ে রাখতে পারেননি কেউই। তাই তো মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর হয়ে ছিল ওয়েলস ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লি হল। বক্তব্যের মধ্য দিয়েই মাশরাফি স্মরণ করেন ব্রিটেনে পাওয়া সাফল্যের মুহূর্তগুলো, আইসিসি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ড থেকে। ১৯৯৯ সালের ওই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারানো, ২০১০ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়, ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলা আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এই বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হয়েছে। বিশ্বর আর কোনো ভেন্যুতে নয়, এত এত অর্জনের সবই হয়েছে ইংল্যান্ডে। তাই কার্ডিফের এই সংবর্ধনা আমাদের জন্য দারুণ এক উপহার। বাংলাদেশি সমর্থক, প্রবাসীদের আন্তরিকতা আমাদের শক্তি। বৃহস্পতিবারের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, ব্রিটিশ ফরেন অফিস প্রতিনিধি, ওয়েলসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী, ওয়েলস ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লি সদস্যসহ ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির শীর্ষস্থানীয়রা। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় শত ব্যস্ততার মধ্যেও দেশের ক্রিকেটের সাফল্যের খবরের আশায় টেলিভিশনের সামনে বসে থাকেন, সে দেশের ক্রিকেটাররা গৌরবের ধন। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, বিশ্ব ক্রিকেট মাঠে টাইগারদের দাপুটে অবস্থান পুরো জাতিকেই আনন্দিত ও গর্বিত করে। এবারের বিশ্বকাপে ব্রিটেনে টাইগারদের এই দাপুটে উপস্থিতি দিয়েই ২০২১ সালে ব্রিটেন-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কের অর্ধ শতাব্দী উদযাপন শুরু হলো। ক্রিকেটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুদেশের পারস্পরিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার আরও বলেন, ব্রিটেন-বাংলাদেশের এই সম্পর্কের ভিত্তি ঐতিহাসিক, যার শুরু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটেনের জনগণের সহযোগিতার মধ্য দিয়ে। ওয়েলসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী এলুউন্ড মরগান বাংলাদেশ দলকে কার্ডিফে স্বাগত জানান, ক্রিকেট বিশ্বের উদীয়মান নক্ষত্র টাইগারদের বড় শক্তি তাদের সমর্থক গোষ্ঠী। ওয়েলসেও এই গোষ্ঠীর বিরাট একটি অংশের বসবাস। আমি নিশ্চিত, টাইগার সমর্থকরা কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনের গ্যালারিও মাতাবে। ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ফার্গুস অল্ড বলেন, ক্রিকেট দুই দেশের আরেকটি সেতুবন্ধন। আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড দলকে শুভকামনা জানান তিনি। সূত্র: সমকাল এনইউ / ০৮ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2KAUxys
June 08, 2019 at 04:47AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন