লন্ডন, ২২ জুলাই- ২০১১ বিশ্বকাপের কথা মনে করলেই যেকোনো ভারতীয়র চোখে ভেসে ওঠে লংঅন দিয়ে হাঁকানো মহেন্দ্র সিং ধোনির সেই ছক্কা, ২০১৬ বিশ্ব টি-টোয়েন্টির কথা ভাবলে ক্যারিবীয়দের কল্পনায় ভাসে কার্লোস ব্রাথওয়েটের সেই চার বলে চার ছক্কা। তাহলে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী মুহূর্ত কোনটি? যেহেতু মূল ম্যাচের পরে সুপার ওভারও ছিলো টাই, তাই নির্দিষ্ট করে জয়ের মুহূর্ত বের করা বেশ কঠিন। তবু জয়ের মুহূর্ত হিসেবে ধরতে হলে, সবার আগে মাথায় আঘাত করবে উইকেটরক্ষক জস বাটলারের স্টাম্প উপড়ে দেয়ার সেই ছবিটাই। সুপার ওভারের শেষ বলে জয়ের জন্য ২ রানের প্রয়োজন ছিল নিউজিল্যান্ডের। জোফরা আর্চারের করা ডেলিভারিটি লেগসাইডে ঠেলে দিয়ে ১ রান সম্পন্ন করেন গাপটিল, ছোটেন দ্বিতীয় রানের জন্য। ডিপ মিডউইকেট থেকে দৌড়ে এসে স্ট্রাইকিং প্রান্তেই থ্রো করেন জেসন রয়। তখনও নিজের পপিং ক্রিজ থেকে বেশ দূরে গাপটিল। উত্তেজনার বশে রয়ের থ্রোটাও ছিলো স্টাম্প থেকে কয়েক মিটার পাশে। তবু সেটিকে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় প্রথমে ডানহাতে রিসিভ করে, বাম হাতে স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক জস বাটলার। যা নিশ্চিত করে দেয় এবারের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক ইংল্যান্ড। নিঃসন্দেহে বাটলারের পুরো ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত এটি। যিনি সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমেও ২ বল খেলে করেছিলেন ৬ রান। এমনকি শেষ বলেও হাঁকিয়েছিলেন একটি বাউন্ডারি। এছাড়া মূল ম্যাচেও ৬০ বলে খেলেছিলেন ৫৯ রানের ইনিংস। অথচ এই বাটলারই ম্যাচ চলাকালীন ভুগছিলেন দোটানায়, বুঝতে পারছিলেন না ফাইনালটি জিততে না পারলে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কী হবে! ভাবছিলেন হয়তো আর কখনোই নামা হবে না প্রিয় ক্রিকেট মাঠে। ইংলিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাটলার বলেন, (ম্যাচের শেষ দিকে) আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে, যদি ম্যাচটি হেরে যাই তাহলে আমি আবার ক্রিকেট খেলব কী করে? সে ম্যাচটা ছিলো আজীবনে একবার পাওয়া সুযোগের মতো। লর্ডসের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনাল! ভাবা যায়? যদি ম্যাচটি না জিততাম, তাহলে হয়তো লম্বা সময়ের জন্য আর ব্যাটই হাতে নিতে পারতাম না। এ বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে ৮টি ফাইনাল খেলে ৭টিতেই হেরেছিলেন বাটলার। যে কারণে পরাজয়ের ভয়টা বেশিই ছিল তার। বাটলারের ভাষ্যে, আমি সেই রোববারের ম্যাচটির আগে আরও ৮টি ফাইনাল খেলেছিলাম। যার মধ্যে ৭টিতেই ছিলাম পরাজিত দলে। তাই আমি জানি ফাইনালে উঠে প্রতিপক্ষের হাতে ট্রফি ওঠার যন্ত্রণাটা কেমন। তাই আমি চাচ্ছিলাম না আবারও সেই বেদনা সহ্য করতে। এসময় বাটলার জানান, সুপার ওভারের সেই শেষ বলের প্রতিটা মুহূর্ত যেন তিনি অনুভব করতে পারছিলেন। বাটলার বলেন, সে মুহূর্তে আপনি আসলে একজন অটো পাইলট। আমি প্রতিটা মুহূর্ত অনুভব করতে পারছিলাম। গাপটিল তার পায়ের বলটি অনসাইডে ঠেলে দিল। যখন দেখলাম বলটা সোজা জেসনের হাতে, তখন মনে হচ্ছিলো যদি বলটা সোজা আমার হাতে আসে, তাহলে আমরা এটা জিততে পারব। আমি জানতাম গাপটিল তখনও অনেক দূরে থাকবে। তিনি বলতে থাকেন, চাপের মুহূর্তে কোনোকিছুই সহজ নয়। কিন্তু আমি জানতাম যে এটা সহজভাবেই করতে হবে। আমাকে পিচের ওপরে অনেকটুকু আসতে হয়েছিল। তবু আমি জানতাম যে যদি বলটা ঠিকঠাক গ্লাভসে নিতে পারি, তাহলে স্টাম্প ভাঙার যথেষ্ঠ সময় থাকবে আমার হাতে। আমি যদি দেখতাম যে গাপটিল খুব কাছে চলে এসেছে, তখন হয়তো চাপের কারণে ভড়কে যেতাম। তখন আমার হাতে সময় ছিলো, তাই আমি বিষয়টা সহজ রাখতে চেয়েছিলাম, নিজের হাতেই রাখতে চেয়েছিলাম। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/২২ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2M4XOak
July 22, 2019 at 05:49AM
22 Jul 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top