কলকাতা, ০১ জুলাই- ভারতে সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেনি মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনের পরপরই ওই রাজ্যে ঘুষের টাকা বা কাটমানি ফেরত দেয়া নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ফলে এ সংক্রান্ত ইস্যুতে বিপাকে পড়েছে মমতা সরকার। যদিও তৃণমূল নেতারা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া এসব ঘুষের টাকা ফেরত দিতেও শুরু করেছেন যা নিয়ে জায়গায় জায়গায় কোন্দলও দেখা দিয়েছে। সুযোগ বুঝে এতে ইন্ধন যোগাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। এমনকি কাটমানি ফেরত দিতে মধ্যস্থতাও করছেন বিজেপি নেতারা। স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যম জানায়, গত রোববার কোচবিহারের তুফানগঞ্জ এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা কাটমানি বাবদ নেওয়া মোট ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। এতে মধ্যস্থতা করেছে মোদির দল বিজেপি। এসব অর্থ ঘুষ হিসেবে নেয়া হয়েছিলো আবাস নির্মাণ, কেঁচো সার প্রকল্প, কলা গাছের চারা বিতরণ বা একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে। অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূল নেতারা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া নিয়েছিলেন। এই অভিযোগে নাম জড়িয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষেরও। তিনি অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে বিজেপির তুফানগঞ্জ বিধানসভার সংযোজক উৎপল দাস জানান, অনেকেই তাদের কাছে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেয়ার অভিযোগ করেছেন। তাই তারা মধ্যস্থতা করে ওই নেতাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত নিয়ে যার যা প্রাপ্য মিটিয়ে দিচ্ছেন। কার কী প্রাপ্য, তা বিজেপি-ই ঠিক করেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে এতবড় দুর্নীতির ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে না গিয়ে কেন বিজেপি নিজেই মধ্যস্থতা করল? এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি বিজেপি নেতারা। তবে জেলা বিজেপির সভাপতি মালতী রাভা বলেন, ভবিষ্যতে সবাইকে বলব কাটমানির টাকা ফেরত নিন, সেই সঙ্গে তৃণমূলের ওই নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগও করুন। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূলের নেতারা যে কাটমানি নেন, তা আমরা অনেক দিন ধরেই বলছি। এখন টাকা ফেরত দিয়ে তারা প্রমাণ করছেন, আমাদের অভিযোগ সত্য। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য ঘুষের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে এখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে গত এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। ৪২ আসনের মধ্যে তারা পেয়েছে মাত্র ২২ আসন। অন্যদিকে অভাবনীয় ভালো ফলাফল করেছে মোদির দল বিজেপি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাত্র দুটি আসনে জয় পাওয়া দলটি পেয়েছে ১৮টি আসন। এরপরই তারা তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমান টক্কর দিচ্ছে। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতেও তৎপর রয়েছে দলটি। আর এরই প্রচেষ্টা হিসেবে বিজেপি যুক্ত হয়েছে তৃণমূল নেতাদের হাতিয়ে নেয়াকাটমানিফেরত দেয়ার কর্মকাণ্ডে। আর তাদের এই তৎপরতায় তারা যে অনেকটাই সফল সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ কাটমানি ফেরত দেয়ার ঘটনাই তা প্রমাণ করে। সূত্র: যুগান্তর আর/০৮:১৪/০১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/323zKKg
July 01, 2019 at 09:40AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন