লন্ডন, ০১ জুলাই- ৩৮ তম ম্যাচের আগে একমাত্র অপরাজেয় ছিল ভারতীয় দল। তবে সেই রেকর্ডটি আর ধরে রাখতে পারেনি তারা। গতকাল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১ রানে হেরেছে ভারত। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটা কেবলই একটা হার হলেও ভারতের এই হারেই হাজার প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচনায় মেতেছে ক্রিকেটবিশ্ব। বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে এমন ম্যাচ কীভাবে হেরে যায় ভারত সে সমালোচনার ঝড়ে বিধ্বস্ত সোশ্যাল মিডিয়া। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, শেষ পাঁচ ওভারে ধোনি ও কেদার যাদব যখন সিঙ্গেলস নিচ্ছিলেন তখন গ্যালারিতে বসা ভারতীয় সমর্থকরা হায় হায় করছিলেন। অবাক হচ্ছিলেন অন্যসব সমর্থকরা। সোশ্যাল মিডিয়াসহ ক্রিকেটবিশ্বে আপাতত একই জিকির - ম্যাচটি পাতানো ছিল না তো? খোদ ভারতীয়দের অনেকের মুখে সে সুর বেজেছে। এমন গুরুতর অভিযোগের পেছনে মাঠে বাজে খেলার পাশাপাশি যে যুক্তি দেখাচ্ছেন অনেকে তা হলো, এ ম্যাচে হেরে ২ পয়েন্ট পেয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত না করতে পারলেও সে পথ অমসৃণ হয়নি বিরাট কোহলিদের। যদিও এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে কোনো জবাব বা প্রতিক্রিয়া আসেনি কোনো। তবে ম্যাচটি নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জয়ের জন্য শেষ ১১ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১১৪ রান। হাতে ছিল ৬ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্যাটিংস্বর্গে সেই রান তোলা খুব কঠিন ছিল না। তবে সে রকম কোনো চেষ্টা করতে দেখা যায়নি মিস্টার ফিনিশারকে। মূলত শেষ ৫ ওভার নিয়েই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে। তখন জয়ের জন্য ধোনিদের দরকার ছিল ৭১ রান। অথচ হেলিকপ্টার শট খ্যাত ব্যাটসম্যান ধোনির কাছ থেকে সেই চেষ্টাই দেখা যায়নি। ১। শেষ ৫ ওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও কেদার যাদব নিলেন মাত্র ৩৯ রান। জয়ের জন্য চেষ্টা না করে কেন এই শামুক গতির ব্যাটিং? ২। শেষ ৫ ওভারে এসেঠছে মাত্র একটি ছ্ক্কা। চার এসেছে কেবল তিনটি। এমন মুহূর্তে উইকেট বাঁচানোই কি মূখ্য ছিল ধোনির কাছে? ৩। হার্দিক পান্ডিয়া ফেরার পরে কী কারণে ৪৫ নম্বর ওভার থেকেই হঠাৎই সিঙ্গলস নিতে শুরু করেন ধোনি আর কেদার যাদব? এসময় বাউন্ডারি হাঁকালে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকমও হতে পারত। ৪। হার্দিক পাণ্ডিয়া ও ঋষব পন্ত আউট হওয়ার পরে বিনা লড়াইয়ে কেন আত্মসমর্পণ করলেন ধোনি-কেদার? ৫। এজবাস্টনের ছোট মাঠে ইংল্যান্ড যেখানে ছক্কা হাঁকালো ১৩টি সেখানে ভারতের মতো দলের পক্ষে ছক্কা মাত্র একটি! আর সেই ছক্কাও ইনিংসের শেষ ওভারে! যখন সে ছক্কা ম্যাচ জয়ে কোনো ভূমিকাই রাখেনি। ৬। ইংল্যান্ড বোলারদের কাছে বিশ্বের সেরা ফিনিশারের এমন আত্মসমর্পণ কেন? এই কি সেই ধোনি? এসব প্রশ্নই নয় গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতরে জয়ে এমন আরও অনেক প্রশ্ন জেগেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। প্রশ্ন জেগেছে ভারতের সাবেক ক্রিকেটারদের মনেই। ভারতের ব্যাটিং নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন তারা। সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করেছেন ভারতের জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে তিনি লিখেছেন, হতাশাজনক ফিনিশিং। শেষ দিকে ১ বলে ১ রান নিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না। ধোনি-যাদব একি করল? যেখানে পান্ডিয়া থাকা পর্যন্ত ম্যাচে উত্তেজনা ছিল। ধোনির এ রকম ব্যাটিং ভীষণ দৃষ্টিকটু ঠেকেছে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেরেকারের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে তিনি বলেন, এবারের বিশ্বকাপে ভারতের জয়রথ থামানোর মতো একটিই দল ছিল। সেটি ছিল ইংল্যান্ড। শেষ কয়েক ওভারে ধোনির ব্যাটিং ছিল দৃষ্টিকটু। গতকাল এজবাস্টনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ভারতের বোলারদের দুর্বল বোলিংয়ের বিপরীতে ৩৩৭/৭ রানের পাহাড় গড়ে ইংল্যান্ড। ১০৯ বলে ১০ চার ও ৬ ছক্কায় ১১১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন জনি বেয়ারস্টো। ৫৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ঝড়ো ৭৯ রান করেন বেন স্টোকস। এ ছাড়া ৫৭ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৬৬ রানের টর্নেডো ইনিংস উপহার দেন জেসন রয়। পরে ব্যাটিংয়েও দ্রুতগতিতে রান তুলতে দেখা যায়নি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। যা একটু লোক দেখানো চেষ্টা করেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। তবে তাদের রান তোলার গতি ছিল মন্থর। ইংল্যান্ডের পেসারদের দাপটে প্রথম ২০ ওভারে ভারত তুলে ৮৩ রান। এমন শামুক গতিতে রান তোলার পর শেষ ৫ ওভারে দরকার পড়ে ৭১ রানের। নাটকটা শুরু এখানেই। হাত খুলে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর কোনো পরিকল্পনা না নিয়ে সিঙ্গেলসে মেতে ওঠেন ধোনি ও কেদার যাদব। ফলাফল ৩১ রানে হারে বিরাট কোহলিরা। সূত্র: যুগান্তর আর/০৮:১৪/০১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2LsE6Vv
July 01, 2019 at 09:31AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন