ঢাকা, ৪ জুলাই - একটা সময় ছিল, চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় জুটির ছবি দেখতে যেতেন দর্শক। আবার নায়ক বা নায়িকার টানেও যেতেন। এমনও দেখা গেছে, একঝাঁক নায়িকার টানেই ছবি দেখতে ছুটতেন দর্শকেরা। এখনো একঝাঁক নায়িকা আছেন, তবে তাঁদের টানে প্রেক্ষাগৃহে ছুটে যাচ্ছেন না দর্শক। এখনকার ছবিগুলো নায়কপ্রধান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নায়িকারা হয়ে গেছেন গৌণ। বৈচিত্র্যময় গল্প না থাকা, ভালো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে না পারা এবং কখনো নায়িকাদের ভাবমূর্তির সংকট থাকাকেই দায়ী করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকে। ষাটের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে শবনম, সুচন্দা, সুজাতা, রোজী, কবরী, শাবানা, ববিতা এবং আশির দশকে রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, অঞ্জু ঘোষ, দিতি, চম্পারা কাজ করেন। নব্বইয়ের দশকে শাবনাজ, শাবনূর, মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা। সবারই ছিল প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টেনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা। ২০০৬ সালে অপু বিশ্বাসের আগমন, কিন্তু শাকিবের ছায়ায় তাঁকে অভিনয় করতে হয়েছে। শাকিব খানের বাইরে যেসব ছবি, সেগুলো নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ অতটা ছিল না বলে জানান চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ও চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী মিয়া আলাউদ্দীন। বর্তমানে দেশের সিনেমায় মাহিয়া মাহি, পরীমনি, ববি, বুবলী, নুসরাত ফারিয়া, পূজা চেরি নায়িকা হয়ে কাজ করছেন। কেউ হঠাৎ জ্বলে ওঠেন, আবার নিভে যান। সাফল্যের ধারাবাহিকতা নেই। চলচ্চিত্র গবেষক ও পরিচালক মতিন রহমান বলেন, বর্তমান সময়ে যেসব নায়িকা আছেন, তাঁদের মধ্যে বেশি সম্ভাবনাময় মনে হয় পরীমনিকে। তাঁর মধ্যে ভালো অবস্থানে যাওয়ার মতো সব গুণ আছে। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে স্ক্যান্ডালের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদের মধ্যে মাহিয়া মাহি, বুবলী, নুসরাত ফারিয়া এবং পূজাও ভালো করছেন। তবে বৈচিত্র্যময় গল্প ছাড়া তাঁরা বেশিদূর এগোতে পারবেন না। নায়িকাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি গ্ল্যামার। নায়িকাদের রূপের আকর্ষণ দর্শককে বিমোহিত করে ঠিকই, কিন্তু একই সঙ্গে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারবে তখনই, যখন সুন্দর গল্পে অভিনয় করতে পারবে। বললেন মতিন রহমান। চিত্রনায়িকা ববিতা বলেন, আমাদের গুণী পরিচালক দরকার। পরিচালকই পারেন একজন নায়িকাকে মনে রাখার মতো চরিত্রে উপস্থাপনের। আমরা খান আতা, জহির রায়হান, সত্যজিৎ রায়, আমজাদ হোসেনের মতো পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করেছি। হাতে-কলমে কাজ শিখিয়ে আমাদের তৈরি করেছেন। কিন্তু এখন সেসব নির্মাতা কোথায়! শিল্পীদেরও বৈচিত্র্যময় কাজের আগ্রহ থাকতে হবে। নায়িকাসংকট আছে বলে বিশ্বাস করেন না শাবনূর। দুই দশকের বেশি সময় চলচ্চিত্রে কাজ করা শাবনূর বলেন, আমি মনে করি নায়িকাসংকট নয়, বরং চলচ্চিত্রে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও দক্ষ পরিচালকের সংকট রয়েছে। আমাদের সময়েও অনেকগুলো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছিল। এখন একটি বড় প্রতিষ্ঠানের নামই শুনি। ধারাবাহিকতা থাকলে এবং নায়িকাপ্রধান গল্পের ছবি বানালে এখনকার প্রজন্মও দর্শকহৃদয়ে দীর্ঘদিনের জন্য জায়গা করে নিতে পারবেন। এন এইচ, ৪ জুলাই.
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2JopMdZ
July 04, 2019 at 07:43AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন